প্রজননের বিভিন্ন পর্যায় ও দশা (নিষেক,গর্ভধারন,পরিস্ফুটন,বিকাশ)

উওজেনেসিসের ক্ষেত্রে-

(i)একটি প্রাথমিক উওসাইট থেকে ৪ টি ডিম্বাণু সৃষ্টি হয়

(ii)একটি প্রাথমিক উওসাইট থেকে ১ টি ডিম্বাণু সৃষ্টি হয় 

(iii)একটি প্রাথমিক উওসাইট থেকে ৩ টি পোলার বডি তৈরি হয়

নিচের কোনটি সঠিক?

আবুল হাসান স্যার

খ. ডিম্বাণুজনন বা উওজেনেসিস

ডিম্বাশয়ের অভ্যন্তরে ডিম্বাণু সৃষ্টির পদ্ধতিকে উওজেনেসিস। (oogonesis; গ্রিক oon = ডিম্বাণু + genesis = সৃষ্টি হওয়া বা জনন) বলে । ক্রমবর্ধনের উপর ভিত্তি করে সমগ্র প্রক্রিয়াটিকে নিচে বর্ণিত চারটি ধাপে ভাগ করা হয় ।

সংখ্যাবৃদ্ধি পর্যায় (Multiplication phase) : উওজেনেসিসের জন্য জার্মিনাল এপিথেলিয়ামের কিছু জনন। মাতৃকোষ বড় আকার ধারণ করে মাইটোসিসের মাধ্যমে পুনঃ পুনঃ বিভাজিত হয়। তখন এদের উত্তগোনিয়া (oogonia, একবচনে/ oogonium) বলে। প্রত্যেকটি উত্তগোনিয়াম ডিপ্লয়েড ( 21 )

সংখ্যক ক্রোমোজোম বহন করে ।

পরিবর্ধন পর্যায় (Growth phase) : সাইটোপ্লাজমে লিপিড, প্রোটিন ইত্যাদি কুসুম আকারে জমা হওয়ায় উত্তপোনিয়াম আয়তনে বড় হয় । একই সময়ে নিউক্লিয়াসের আয়তন ও বিপাকীয় কাজসহ প্রোটিন সংশ্লেষণ অনেক বৃদ্ধি পায়। পরিবর্ধিত এ উত্তগোনিয়ামকে প্রাইমারি উওসাইট (primary oocyte) বলে। প্রতিটি প্রাইমারি উওসাইট (2n) একস্তর গ্রানুলোসা বা ফলিকল কোষ (granulosa or follicle cells)-এ আবৃত হয়ে প্রাইমারি ফলিকল (primary follicle)-এ পরিণত হয় ।

পূর্ণতাপ্রাপ্তি পর্যায় (Maturation phase) : বয়ঃসন্ধিকাল থেকে প্রতি মাসে কিছু প্রাইমারি ফলিকল বৃদ্ধি লাভ করে। এর মধ্যে সাধারণত একটি পরিণত হয়, অন্যগুলো বিলুপ্ত হয় । পরিণত প্রাইমারি ফলিকলকে গ্রাফিয়ান ফলিকল (graafian follicle) বলে । বৃদ্ধিরত প্রাইমারি ফলিকলের অভ্যন্তরস্থ প্রাইমারি উওসাইট প্রথম মিয়োটিক বিভাজন-এর মাধ্যমে দুটি অসম কোষ উৎপন্ন করে । বড় কোষটিকে সেকেন্ডারি উওসাইট ( secondary oocyte, n) এবং ছোট কোষটিকে ১ম পোলার বডি ( 1st polar body) বলে । এরপর ১ম পোলার বডি মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়ে দুটি পোলার বডি সৃষ্টি করে । অন্যদিকে, সেকেন্ডারি উওসাইটটি নিষেকের জন্য প্রস্তুত হতে থাকে। সেকেন্ডারি উওসাইট অবস্থায় ডিম্বপাত বা ওভুলেশন (ovulation) ঘটে। নিষেকের সময় কোন শুক্রাণু ডিম্বাণুর জোনা পেলুসিডা ভেদ করতে পারলে তখন সেকেন্ডারি উওসাইটে দ্বিতীয় মিয়োটিক বিভাজন সম্পন্ন হয় । এ বিভাজনে সেকেন্ডারি উওসাইটটি অসমভাবে বিভক্ত হয়ে একটি বড় হ্যাপ্লয়েড উওটিড (ootid) ও একটি ছোট পোলার বডি (n) সৃষ্টি করে । এভাবে পূর্ণতাপ্রাপ্তি পর্যায়ে একটি প্রাইমারি উওসাইট থেকে একটি বড় উওটিড ও তিনটি ছোট পোলার বডি সৃষ্টি হয় ।

রূপান্তর পর্যায় (Metamorphosis phase) : এ পর্যায়ে উওটিড রূপান্তরিত হয়ে কার্যকর ওভাম (ovum) বা ডিম্বাণু-তে পরিণত হয় । তবে শুক্রাণুর মতো এক্ষেত্রে আকৃতি ও আকারে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে না । কেবল নিষেকের প্রস্তুতি লাভের জন্য এর ভিতরের পদার্থের সামান্য পরিবর্তন ঘটে । সকল পোলার বড়ি বিনষ্ট হয়ে পরিত্যক্ত হয় ।

প্রজননের বিভিন্ন পর্যায় ও দশা (নিষেক,গর্ভধারন,পরিস্ফুটন,বিকাশ) টপিকের ওপরে পরীক্ষা দাও