বাক্য প্রকরণ

‘তপুর বয়স অল্প কিন্তু বেশি বুদ্ধিমান’- বাক্যটি কোন ধরনের?

●যৌগিক বাক্য

একাধিক সরল বাক্য কোন অব্যয় দ্বারা সংযুক্ত হয়ে একটি বাক্য গঠন করলে তাকে যৌগিক বাক্য বলে। যেমনঃ

তার বয়স হয়েছে, কিন্তু বুদ্ধি হয়নি। (সরল বাক্য দুটি- তার বয়স হয়েছে, তার বুদ্ধি হয়নি)

সে খুব শক্তিশালী এবং বুদ্ধিমান। (সরল বাক্য দুটি- সে খুব শক্তিশালী, সে খুব বুদ্ধিমান)

ধনীদের ধন আছে, কিন্তু তারা প্রায়ই কৃপণ হয়।

বুঝে শুনে উত্তর দাও নতুবা ভুল হবে।

এতক্ষণ অপেক্ষা করলাম কিন্তু গাড়ি পেলাম না।

সে আসতে চায়, তথাপি আসতে পারে না।

তাঁর বুদ্ধি হয়েছে, কিন্তু বুদ্ধি পাকেনি।

সত্য কথা বলিনি, তাই বিপদে পড়েছি।

যৌগিক বাক্য চেনার সহজ উপায়

যৌগিক বাক্যের অন্তর্গত নিরপেক্ষ বাক্যগুলো আর, এবং, ও, বা, কিন্তু, অথবা, অথচ, কিংবা, বরং, তথাপি, তবে, তবে কি না, নতুবা, তবু, হয়..নয়, হয়.. না হয়, কেন..না, তত্রাচ, অপিচ প্রভৃতি অব্যয় যোগে সংযুক্ত বা সমন্বিত থাকে। তবে কোন অব্যয় ছাড়াও দুটি সরল বাক্য

একসঙ্গে হয়ে যৌগিক বাক্য গঠন করতে পারে।

(খ) উত্তরঃ

i) বিদ্বান হলেও তার অহংকার নেই। (যৌগিক)

উত্তর: তিনি বিদ্বান কিন্তু তার অহংকার নেই।

ii) ঠাট্টার সম্পর্কটাকে স্থায়ী করিবার ইচ্ছা আমার নাই। (জটিল)

উত্তর: যে সম্পর্কটা ঠাট্টার সেটা স্থায়ী করিবার ইচ্ছা আমার নাই।

iii) আমি আশা ছাড়িতে পারিলাম না। (অস্তিবাচক)

উত্তর: আমি আশা ছাড়তে অপারগ।

iv) সদা সত্য কথা বলা উচিত। (অনুজ্ঞা)

উত্তর: সদা সত্য কথা বলো।

v) বাঁশির সুরটি সুমধুর। (বিস্ময়বোধক)

উত্তর: বাঃ! বাঁশির সুর কী সুমধুর !

vi) ইহারা অন্য জাতের মানুষ। (নেতিবাচক)

উত্তর: ইহারা এই জাতের মানুষ নয়।

●জটিল বাক্য

যে বাক্যে একটি প্রধান খণ্ডবাক্য ও তাকে আশ্রয় বা অবলম্বন করে একাধিক খণ্ডবাক্য থাকে,

তাকে জটিল বা মিশ্র বাক্য বলে। যেমনঃ

যে পরিশ্রম করে, সে-ই সুখ লাভ করে। (প্রথম অংশটি আশ্রিত খণ্ডবাক্য, দ্বিতীয়টি প্রধান খণ্ডবাক্য)

যত পড়বে,/ তত শিখবে,/ তত ভুলবে। (প্রথম দুটি অংশ আশ্রিত খণ্ডবাক্য শেষ অংশটি প্রধান খণ্ডবাক্য)

সে যে অপরাধ করেছে তা মুখ দেখেই বুঝেছি

যিনি পরের উপকার করেন তাঁকে সবাই শ্রদ্ধা করে

জটিল বা মিশ্র বাক্য চেনার সহজ উপায়

জটিল বা মিশ্র বাকে একাধিক খণ্ডবাক্য থাকে। এদের মধ্যে একটি প্রধান খণ্ডবাক্য এবং অন্যগুলো সেই বাক্যের উপর নির্ভর করে। যেমনঃ যেহেতু তুমি বেশি নম্বর পেয়েছ, সুতরাং তুমি প্রথম হবে।

অধিকাংশ জটিল বাক্যে প্রতিটি খণ্ডবাক্য এর পর কমা (,) থাকে। যথা- যিনি পরের উপকার করেন, তাঁকে সবাই শ্রদ্ধা করে।

জটিল বাক্যের সাপেক্ষ সর্বনাম ও নিত্য সম্বন্ধীয় যোজক যোগ করতে হয়। যথা-

সাপেক্ষ সর্বনাম : যে….সে, যা….তা, যিনি….তিনি, যারা…. তারা। যেমনঃ যিনি বিদ্বান, তিনি সর্বত্র আদরণীয়।

নিত্য সম্বন্ধীয় যোজক: যখন…. তখন, যেমন…. তেমন, বরং…. তবু, যেইনা….অমনি, যেহেতু….সেহেতু/সেজন ̈। যেমনঃযখন বিপদ আসে, তখন দুঃখও আসে।

●সরল বাক্য

যে বাক্যে একটিমাত্র কর্তা (উদ্দেশ্য) এবং একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া (বিধেয়) থাকে, তাকে সরল বাক্য বলে। যথা- পুকুরে পদ্মফু জন্মে। এখানে ‘পদ্মফুল’ উদ্দেশ ̈ এবং ‘জন্মে’ বিধেয়। এ রকম কিছু উদাহরণ :

বৃষ্টি হচ্ছে।

তোমরা বাড়ি যাও।

ধনীরা প্রায়ই কৃপণ হয়।

মিথ্যাবাদীকে কেউ ভালবাসে না।

শিক্ষিত লোকেরা অত ̈ন্ত বুদ্ধিমান।

ধনীরা প্রায়ই কৃপণ হয়।

মা শিশুকে ভালোবাসে।

হযরত মোহাম্মদ (স.) ছিলেন একজন আদর্শ মানব। স]

সকল অহংকার হে আমার ডুবাও চোখের জলে।

সরল বাক্য চেনার সহজ উপায়

সরল বাক্যে একটিই সমাপিকা ক্রিয়া থাকে। একটি সরল বাক্যে একটি বা একাধিক অসমাপিকা ক্রিয়া থাকতে পারে। যেমন- কেহ কহিয়া না দিলেও (অসমাপিকা ক্রিয়া) তপোবন বলিয়া বোধ হইতেছে (সমাপিকা ক্রিয়া)।

সরল বাক্যে ক্রিয়াপদ উহ্য থাকতে পারে। যেমন- জ্ঞানী লোক সকলের শ্রদ্ধার পাত্র।

সরল বাক্যের ভেতরে কোন খণ্ডবাক্য বা একাধিক পূর্ণবাক্য থাকে না। যেমন- চেহারা নিষ্প্রভ হলেও তার মুখাবয়বে একটা পরিতৃপ্তির আভা ছিল ।

●ব্যাসবাক্য: সমাসের অর্থ প্রকাশ করার জন্য যে বাক্য ব্যবহার করা হয় তাই ব্যাসবাক্য।

যেমন : পা থেকে মাথা পর্যন্ত ( ব্যাসবাক্য) = আপাদমস্তক ( সমস্তপদ) ।

বাক্য প্রকরণ টপিকের ওপরে পরীক্ষা দাও