রেইনকোট
বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে বাসের জন্য তাকে তাকাতে হয় উত্তরেই। মিলিটারি লরির লেজটাও দেখা যাচ্ছে না। আবার তার বাসেরও নামগন্ধ নেই। বাসস্ট্যান্ডে জনপ্রাণী বলতে সে একেবারে একা। রাস্তার পাশে পান-বিড়ি-সিগ্রেটের ছোট দোকানটার ঝাঁপ একটুখানি তুলে দোকানদারও তাকিয়ে রয়েছে উত্তরেই, ওদিকে কি কোনো গোলমাল হলো নাকি? দোকানদার ছেলেটা একটু বাচাল টাইপের। বাসস্ট্যান্ডে তাকে দেখলেই ছোঁড়াটা বিড়বিড় করে, কাল শোনেন নাই? মিরপুরের বিল দিয়া দুই নৌকা বোঝাই কইরা আইছিল। একটা জিপ উড়ইয়া দিছে, কমপক্ষে পাঁচটা খানসেনা খতম। বিবিসি কইছে, রংপুর-দিনাজপুরের হাফের বেশি জায়গা স্বাধীন, কাল চরমপত্র শুনেছেন? এর সামনে সে বেশিক্ষণ দাঁড়ায় না। এসব গুজব শোনার সময়ও সে যদি ধরা পড়ে তো! গুজব জো থা ওহি সব আজ গজব হো চুকা হ্যায়। প্রিন্সিপাল বলে গুজবই হলো বাঙ্গালির কাল। গুজবের আকর্ষণ ভারি তীব্র, গুজব মানেই সুস্বাদু। এই যে এখন বৃষ্টির আড়াল পেয়েও হতে পারে, কিংবা রেইনকোটের কল্যাণে বৃষ্টির হাত থেকে রেহাই পাবার স্বস্তির ফলেও হতে পারে, সে এগিয়ে গেল দোকানদারের দিকে। একটা গুজব শোনার হাউস করে সে জিগ্যেস করে, ‘বাস আসেনি কতক্ষণ’?
'সাবভার্সিভ অ্যাকটিভিটিজ' বলতে কী বোঝায়?
হত্যাকে উৎসব ভেবে যারা পার্কে, মাঠে, ক্যাম্পাসে, বাজারে
বিষাক্ত গ্যাসের মতো মৃত্যুর বীভৎস গন্ধ দিয়েছে ছড়িয়ে,
আমি তো তাদের জন্য অমন সহজ মৃত্যু করি না কামনা।
(তথ্যসূত্র: অভিশাপ দিচ্ছি- শামসুর রাহমান)
'রেইনকোট' গল্পে নুরুল হুদার ঝুলন্ত শরীর কাঁপতে থাকে কেন?
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে একটি ছাত্রাবাস থেকে মিলিটারিরা সাজ্জাদকে তুলে নিয়ে যায়। অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে তারা তার পিতার সন্ধান চায়। ক্ষত-বিক্ষত হয়েও সাজ্জাদ নীরব থাকে। মনে পড়ে বাবার শেষ উপদেশ, "জীবনের চেয়ে দেশ, অনেক বড়।" নিজেকে একজন দেশপ্রেমী মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মনে করায় তার বুক ফুলে ওঠে।