সৌদামিনী মালোর পালিত পুত্র হরিদাসকে নিয়ে মনোরঞ্জন মালো গ্রামময় প্রচার করে দিলো যে সৌদামিনী ভয়ানক শাস্ত্রবিরুদ্ধ পাপ কর্ম করেছে। ব্রাহ্মণের জাত মেরেছে সে। সৌদামিনী মালোর সাথে মনোরঞ্জন মালোর শত্রুতা আগে ছিল ব্যক্তিগত এখন তা সমাজগত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু একা মনোরঞ্জন মালো নয় সমস্ত গ্রাম সৌদামিনী মালোর বিরুদ্ধে জুলুম শুরু করল।
ক. 'বিলাসী' গল্পে কোন মোগল সম্রাটের নাম উল্লেখ আছে?
উত্তরঃ
ক) "বিলাসী' গল্পে মোগল সম্রাট হুমায়ুনের নাম উল্লেখ আছে।
খ) আম বাগানের জমাট বাঁধা অন্ধকারের মধ্য দিয়ে যেতে ভয় করবে কি না তা জানতে চেয়ে বিলাসী ন্যাড়াকে উদ্দেশ্য করে আে উরিটি করেছে। দীর্ঘদিন মৃত্যুঞ্জয়ের দেখা না পেয়ে, তার মর মর অবস্থার কথা জানতে পেরে তাকে দেখতে এসেছিল ন্যাড়া। ফেরার সময় পথ এমনকি নিজের হাতও দেখতে না পাওয়া জমাট অন্ধকারে আম বাগানের নিতে দিয়ে আসতে যে কারো দারুণ ভয় পাওয়ার কথা। বিলাসী সে বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ন্যাড়ার কাছে জানতে চেয়েছে সে একা যেতে ভয় পাবে কি না।
উত্তরের সারবস্তু: দুটফুটে অন্ধকারে আমবাগানের মধ্য দিয়ে যেতে ভয় করবে কি না তা ন্যাচার কাছে জানতে চেয়েছে বিলাসী।
গ) তৎকালীন হিন্দু সমাজের বিশ্বাস অনুসারে উচ্চ জাতকে কলঙ্কিত করেছে এই অজুহাতে নির্যাতনের শিকার হওয়ার সঙ্গে সৌদামিনী মালো ও বিশাসী চরিত্রের মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। "বিলাসী' গল্পের নাম চরিত্র বিলাসী সাপুড়ের মেয়ে। তার নিবিড় সেবা-যত্নে মৃত্যুঞ্জয় কঠিন রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করে। এরপরই মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে বিলাসীর বিয়ে দেয় বিলাসীর পিতা। মৃত্যুক্ষয়ের স্বার্থান্বেষী মুড়া এ বিয়ে ও বিলাসীর খাতে মৃত্যুঞ্জয়ের ভাত খাওয়াকে কেন্দ্র করে গ্রামের লোকদের খেপিয়ে তোলে। গ্রামের লোকেরা নির্যাতন করে বিলাসীকে বাড়ি ছাড়া করে। মূলত মৃত্যুঞ্জয়ের আমবাগান দখল করে নেওয়ার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে মুড়া জুলুম করার এমন প্রেক্ষাপট তৈরি করে। উদ্দীপকের সৌদামিনী মালোকেও ব্রাহ্মণের জাত মারার অপবাদ দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে নাজেহাল করা হয়। মনোরঞ্জন মালোর সঙ্গে সৌদামিনী মালোর পূর্ব শত্রুতা ছিল। ব্যক্তিগত সেই শত্রুতাকে গ্রামময় ছড়িয়ে দিতে মনোরঞ্জন মালো পুরো গ্রামে প্রচার করে যে, সৌদামিনী ভয়ানক শাস্ত্রবিরুদ্ধ পাপ কর্ম করেছে। সে ব্রাহ্মণের জাত মেরেছে বলে সমাজের লোকদের ক্ষুদ্ধ করে তোলে। গোটা গ্রাম তখন সৌদামিনীর বিরুদ্ধে জুলুম শুরু করে। বিলাসী গল্পের বিলাসীর অবস্থাও সৌদামিনীর মতোই। সাপুড়ের মেয়ে হয়ে নিতির বংশের মৃত্যুভয়কে বিয়ে করা ও ভাত রেঁধে খাওয়ানোর কারণে গায়ে হাত তুলে টেনেহিচড়ে গ্রামের বাইরে বের করে দেওয়া হয় বিলাসীকে। বিলাসীর ওপর জুলুম করতে সম্পত্তির লোভে অন্ধ বুড়া গ্রামবাসীকে প্রভাবিত করে ধর্মীয় আবেগ ব্যবহার করে। উদ্দীপকের সৌদামিনী মালোও বিলাসীর মতোই এমন জুলুমের শিকার।তাই বলা যায়, ধর্মীয় কুসংস্কারকে ব্যবহার করে অত্যাচার করার দিক থেকে উভয় চরিত্রের মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
উত্তরের সারবস্তু: উদ্দীপকের সৌদামিনী মালোর সঙ্গে 'বিলাসী' গল্পের বিলাসী চরিত্রের উচ্চ জাতকে কলঙ্কিত করেছে এই অজুহাতে জুলুমের শিকার হওয়ার দিক থেকে মিল খুঁজে পাওয়া যায়
ঘ) উদ্দীপকের ‘ভয়ানক শাস্ত্রবিরুদ্ধ পাপ' 'বিলাসী' গল্পে দেখানো হয়েছে সাপুড়ের মেয়ে হয়ে মিত্তির বংশের মৃত্যুঞ্জয়কে ভাত খাওয়ানোর অর্থাৎ অন্নপাপের মধ্য দিয়ে।
'বিলাসী' গল্পে বিলাসী সাপুড়ের মেয়ে হওয়ায় তার রান্না করা ভাত উচ্চ জাতের কেউ খেতে পারবে না। এতে অন্নপাপ হয় বলেই সমাজের মানুষের বিশ্বাস। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয় তাকে বিয়ে করে তার হাতে ভাত খেয়েছে। এজন্য মৃত্যুঞ্জয়ের জাত গেছে ও মিত্তির বংশের নাম ডুবেছে বলে জ্ঞাতি খুড়া গ্রামময় প্রচার করে। তৎকালীন সমাজের প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে এতে ভয়ানক অপরাধ হয়েছে বলে বিলাসী ও মৃত্যুঞ্জয়কে কঠিন পরিণতি বরণ করতে হয়।
উদ্দীপকে সৌদামিনী মালোকে ভয়ানক শাস্ত্রবিরুদ্ধ পাপের কথা বলে তার ওপর জুলুম করা হয়। সে ব্রাহ্মণের জাত মেরেছে বলে প্রচার করে মনোরঞ্জন মালো। পূর্ব শত্রুতার জেরে মনোরঞ্জন মালো সৌদামিনীর বিরুদ্ধে গোটা সমাজকে ক্ষেপিয়ে তোলে। সমাজের মানুষও এতটাই অন্ধবিশ্বাসী যে তারা মনোরঞ্জন মালোর কথায় প্রভাবিত হয়ে সৌদামিনীর ওপর জুলুম চালায় ।
বিলাসী' গল্পে বিলাসীর ওপরও ভয়ানক শাস্ত্রবিরুদ্ধ পাপ কথাটির প্রয়োগ করা হয় অন্নপাপ করার অভিযোগের ভেতর দিয়ে। সে সাপুড়ের মেয়ে হয়ে উচ্চবংশীয় শারীরিকভাবে অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়কে ভাত রেঁধে খাইয়ে যেন অপরাধ করেছে। কঠিন অসুখে মৃত্যুঞ্জয়ের জীবন যখন মৃত্যুর মুখোমুখি তখন বিলাসীর মতো মানবিক মেয়ে রাত-দিন তার পাশে ছিল। তার অক্লান্ত সেবা-শুশ্রূষা ও রাতজেগে সেবার পর মৃত্যুঞ্জয় সুস্থ হয়ে ওঠে। সেই দুর্দিনে গাঁয়ের কেউ এসে খোঁজ নেয়নি, উদ্যোগ নেয়নি ভালো চিকিৎসার। কিন্তু চক্রান্তকারী লোভী খুড়ার প্ররোচনায় সবাই অন্নপাপের অপবাদে একজোট হয়ে আক্রমণ করে। তাদের কাছে জীবনের চেয়ে জাতের মূল্য প্রবল হয়ে ওঠে। তাই তারা বিলাসীকে নির্যাতন করে মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। বিলাসী তাদেরকে বলার চেষ্টা করে যে, সে মৃত্যুঞ্জয়ের বিয়ে করা স্ত্রী। তবুও অন্নপাপের ভয়ানক শাস্ত্রবিরুদ্ধ কাজের অজুহাতে তারা বিলাসীর ওপর জুলুম করে। বিলাসী মৃত্যুঞ্জয়কে ভাত রান্না করে খাওয়ানোই সেখানে ভয়ানক শাস্ত্র-বিরুদ্ধ পাপ বলে গণ্য হয় । উদ্দীপকে সৌদামিনীর ক্ষেত্রেও এমন পাপকে অত্যধিক গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করা হয়েছে।
উত্তরের সারবস্তু: 'বিলাসী' গল্পে সাপুড়ের মেয়ে হয়ে বিলাসীর মিত্তির বংশের মৃত্যুঞ্জয়কে ভাত খাওয়ানোর অর্থাৎ অন্নপাপের মধ্য দিয়ে উদ্দীপকের 'ভয়ানক শাস্ত্রবিরুদ্ধ পাপ' দেখানো হয়েছে।
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
No related questions found