1. সর্বধর্মী মতবাদের প্রবস্তুা শ্রী আনন্দ স্বামী। তিনি অস্টাদশ শতাব্দীতে ত্রিপুরা জেলার সরাইল পরগনার কালিকচ্ছ গ্রামে এক কৌলিন জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। জমিদারের দায়িত্ব পালনকালে প্রজাদের ধর্মভিত্তিক বিভাজন ও আন্তঃধর্মবিবাদ তাঁকে চিন্তামগ্ন করে তোলে। ধর্ম নিয়ে হত্যা, হানাহানি, রক্তপাত নিরসন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ইসলাম, সনাতন ও খ্রিস্টধর্মের সমন্বয়ে। 'সর্বধর্ম' মতবাদ প্রবর্তন করতে সক্রিয় হন। তার এ 'সর্বধর্ম' মতবাদে প্রকৃত মানবতার আহ্বান থাকলেও তিনি ধর্মভীরু মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেননি। তবে এর মাধ্যমে তিনি সকল শ্রেণির মানুষের আস্থা
অর্জনে সক্ষম হন।
2. রফিক ও সফিক দুই ভাই। বাবার মৃত্যুর পর তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইস্টার্ন গার্মেন্টসের মালিকানা নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে, বড় ভাই রফিক গার্মেন্টস পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবেন এবং ছোট ভাই সফিক সংসার দেখাশোনা করবেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বড় ভাই গার্মেন্টস পরিচালনা এবং ছোট ভাই সংসার দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কিন্তু গার্মেন্টসের আয় থেকে ছোট ভাইকে সংসার পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয়। অর্থ প্রদান না করায় উভয়ের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্বের কারণে বাবার প্রতিষ্ঠিত গার্মেন্টসটি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
3. আলভী গার্মেন্টসের কর্ণধার কাদের চৌধুরী তার অধীন কর্মচারীদের নিয়োগবিধি মোতাবেক প্রাপ্য মজুরি, বোনাস, স্ব্যাখ্যাসম্বর পরিবেশ ইত্যাদি সুবিধা প্রদানে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত করে আসছিল। এতে বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে দাবি আদায়ে শ্রমিক সংঘ গড়ে তোলে এবং বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করে। আন্দোলনের চাপে গ্রাৎক্ষণিকভাবে তাদের দাবি মেনে নেওয়া হলেও পরবর্তী বিভিন্ন অজুহাত ও কৌশছে মালিক তাদের ঐক্য ভেঙে দেয় এবং কঠোর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব স্থাপন করে।
4. সরাইল উপজেলার চেয়ারম্যান পদে বহু বছর ধরে সামাদ পরিবার ঐতিহ্যগতভাবে নির্বাচিত হয়ে আসছে। সম্প্রতি কদম আলী পরিবার ভাগ্যান্বেষণে সরাইলে এসে বসতি স্থাপন করে। কদম আলীর সহজ-সরল জীবনযাপন, সাহসিকতা, নীতি-নৈতিকতা, সত্যবাদিতা, বিচক্ষণতা ও চারিত্রিক মাধুর্য উপজেলাবাসীর নজর কাড়ে। ফলে নির্বাচনে সরাইল উপজেলার চেয়ারম্যান পদে কদম আলী বিপুল ভোটে। নির্বাচিত হন। তিনি উপজেলার অভাবনীয় উন্নয়ন করেন। উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা, সুশাসন, জননিরাপত্তা, বিচার ও সালিশ ব্যবস্থার। উন্নয়ন, রাস্তাঘাট নির্মাণ, রাজস্ব আদায়সহ সকল ক্ষেত্রে অসামান্য। উন্নয়ন করেন, যা ইতোপূর্বে অন্য কোনো চেয়ারম্যানই করতে পারেননি। কিন্তু তার মৃত্যুর পর আবার উপজেলা চেয়ারম্যানের পদটি সামাদ পরিবারের হাতে চলে যায়।
5. অটোমান সুলতান অরখান জেনিসারি বাহিনী গঠন করে বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান পরিচালনা করেন। এসব রাজ্য থেকে অর্থ- সম্পদ লুণ্ঠন করে তিনি নিজ এলাকার উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেন। তিনি একটি দ্বীপের সুসজ্জিত ও সুরক্ষিত উপাসনালয়ের মূল্যবান অর্থ- সম্পদের সন্ধান পেয়ে সেটি আক্রমণ ও লুন্ঠন করেন। স্থানীয় অধিবাসীরা প্রাণপণ চেষ্টা করেও উপাসনালয়টিকে লুন্ঠনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেননি।