1. অটোমান সুলতান দ্বিতীয় মুরাদ ইউরোপীয় রাষ্ট্রবর্গের সম্মিলিত শক্তির নেতৃত্বদানকারী হাঙ্গেরির বিখ্যাত সেনাপতি হুনিয়াদির কাছে যুদ্ধে হেরে যান এবং সন্ধি করতে বাধ্য হন। পরে ইউরোপীয় শক্তিবর্গ সন্ধি ভঙ্গ করেন এবং ভার্না নগরী অবরোধ করেন। সুলতান মুরাদ হুনিয়াদিকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার জন্য চল্লিশ হাজার সৈন্য নিয়ে ভার্নায় উপস্থিত হন। ১৪৪৪ খ্রিস্টাব্দে উভয় বাহিনীর মধ্যে তুমুল যুদ্ধ সংঘটিত হয়। হুনিয়াদি পরাস্ত হন এবং হাঙ্গেরির রাজা নিহত হন। এভাবে সুলতান মুরাদ প্রথম যুদ্ধে চুনিয়াদির কাছে হেরে যাওয়ার প্রতিশোধ নিলেন। ফলে উত্তর ইউরোপীয় অটোমান অংশ আশঙ্কামুক্ত হলো।
2. ১৯৬৯ সালে ভারতের ৪র্থ লোকসভায় অন্তঃকলহের কারণে ইন্দিরা গান্ধী দল থেকে বহিষ্কৃত হন। ফলে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। গরিষ্ঠ সংখ্যক কংগ্রেস সদস্য ও দ্বীয় তৃণমূল সমর্থকদের নিয়ে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আর) বা মূল কংগ্রেস গঠিত হয়। অপরদিকে মোরারজি দেশাই-এর নেতৃত্বে মাত্র ৩২ জন কংগ্রেস' সদস্য নিয়ে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (অর্গানাইজেশন) গঠিত হয়। ১৯৭১ সালে ভারতের সাধারণ নির্বাচনে ইন্দিরা গান্ধীর দল ৫১৮টি আসনের মধ্যে ৩৫২টি লাভ করে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। অন্যদিকে মোরারজি দেশাই-এর দল অর্ধেক আসন হারায়।
3. চীনের উত্তর-পশ্চিমে শিনচিয়াং উইঘুর দ্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটি অবস্থিত। এখানে দক্ষিণ শিনচিয়াং (তারিন বেসিন)-এ ৪৫.২১% তুপ্তি মুসলিম এবং উত্তর শিনচিয়াং (জাংগারিয়া)-এ ৪০.৫৭% হান ও দুই নামের মূল চীনারা বসবাস করে। তিয়ানশান পর্বতমালা দ্বারা এই দুই অঞ্চল বিভক্ত। উইগুর মুসলিমরা মূল চীনা হিসেবে নিজেদের দাবি করে এবং তারা তাদের স্বতন্ত্র ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে নিজেদের স্বাধীনতা সংগ্রামে লিপ্ত। কিন্তু চীন সরকার তাদের স্বাধীনতা দিতে নারাজ। যুগ যুগ ধরে যান ও তুই চীনাদেরকে উইগুর মুসলিমদের থেকে আলাদা করা হয়েছে এবং শিক্ষা-সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিকভাবে সর্বাত্মক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে উইগুরের মুসলিমদের ওপরে চলে শোষণ, ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা আর শিক্ষা-সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক বৈষম্য।
4. দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত কৃষ্ণাঙ্গ নেতা ছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলা। রাজপরিবারে জন্ম হলেও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন- সংগ্রামের কারণে তিনি দীর্ঘ আটাশ বছর কারাবাস ছিলেন। ছাত্রজীবনে বর্ণবাদী আচরণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হন। তার আদর্শে গড়া দল এএনসি (আফ্রিকান খোশনাল কংগ্রেস)-কে এক পর্যায়ে নিষিদ্ধ করা হলে শ্বেতাঙ্গ সরকারের। বিরদ্ধে তিনি সশস্ত্র সংগ্রামের ডাক দেন। ১৯৬২ সালে তাকে বন্দি করে। বিশ্বমে পাঁচ বছর ও পরে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। সত্তরের প্রথকে 'ব্ল্যাক কনসাসনেস মুভমেন্ট' নামে জঙ্গি আন্দোলন শুরু হয়। কারাগারে স্টিভ বিকো নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নেলসন। কান্ডেলাসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে গণআন্দোলন শুরু হয়। পরিশেষে বর্ণবাদী সরকার ১৯৯০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আলোচনায় বসে। এবং ১১ ফেব্রুয়ারি ম্যান্ডেলাকে মুক্তি দেয়। লাখো জনতার উদ্দেশ্যে কেপটাউনের টাউন হলের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে তিনি ভাষণ দেন। ১৯৯৪ সালের গণতান্ত্রিক নির্বাচনে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
5. প্রাচীনকাল থেকেই দেশের শিল্প নগরীর সাথে ছোট শহর- বন্দরের মধ্যে নৌপথে বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি একটা সাংস্কৃতিক যোগাযোগও গড়ে ওঠে। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় বড় ব্যবসায়ী ইসমত সাহেব নরসিংদী শহর থেকে সাতটি জাহাজে করে শিল্পের কাঁচামাল, কিছু শ্রমিক, উপঢৌকন ও ব্যবসায়ের অর্থ ঢাকায় পাঠাচ্ছিলেন। জাহাজগুলো নারায়ণগঞ্জ আসলে একদল ডাকাত কর্তৃক মালামাল লুন্ঠিত হয়। ইসমত সাহেব নারায়ণগঞ্জ প্রশাসনের কাছে এর আশু বিচারসহ ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। কিন্তু। এর যথাযথ জবাব ও ক্ষতিপূরণ লাভে তিনি ব্যর্থ হন। এতে মালামাল গ্রহীতার মনে ক্ষোভ দেখা দেয়।