আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ (AFMC) বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত একটি শীর্ষস্থানীয় মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। AFMC-তে ভর্তি হতে হলে মেধার সঙ্গে শৃঙ্খলা, নেতৃত্বের গুণাবলী, এবং দেশপ্রেমের মানসিকতা থাকা আবশ্যক। AFMC-এর ভর্তি প্রক্রিয়া অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক এবং এতে একাডেমিক যোগ্যতা, ভর্তি পরীক্ষা, এবং শারীরিক ও মানসিক উপযুক্ততার ভিত্তিতে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয়। ভর্তি পরীক্ষায় পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, ইংরেজি এবং সাধারণ জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে প্রশ্ন করা হয়। AFMC-তে ভর্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কেবলমাত্র ডাক্তার হিসেবে গড়ে ওঠেন না, বরং শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবন এবং নেতৃত্বের গুণাবলী অর্জন করে।
আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ (AFMC) শুধুমাত্র একটি কলেজ নয়; এটি সশস্ত্র বাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত একটি শিক্ষা ও গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান। এটি ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় অবস্থিত এবং উচ্চমানের চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করে। AFMC এর অধীনে কয়েকটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পরিচালিত হয়, যেখানে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, তাদের পরিবার, এবং সাধারণ জনগণের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হয়।
AFMC শুধুমাত্র একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণা, শৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবেশে পড়াশোনা এবং সামরিক শৃঙ্খলার মাধ্যমে নেতৃত্বের গুণাবলীর বিকাশের কেন্দ্র।
AFMC সরাসরি পরিচালনা করে কিছু মেডিকেল কলেজ ও প্রতিষ্ঠান, যা সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন শাখার অধীনে রয়েছে। এসব কলেজের শিক্ষার মান অত্যন্ত উন্নত এবং প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। নিচে AFMC এবং এর অধীনস্থ কলেজগুলোর পরিচিতি তুলে ধরা হলো:
১. আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ (AFMC), ঢাকা
অবস্থান: ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট
প্রতিষ্ঠাকাল: ১৯৯৯
ক্যাম্পাস:
AFMC এর ক্যাম্পাসটি অত্যন্ত শৃঙ্খলাপূর্ণ এবং আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন। এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য ক্লাসরুম, ল্যাবরেটরি, লাইব্রেরি, হোস্টেল এবং রিক্রিয়েশন সেন্টার রয়েছে।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
১. AFMC শুধুমাত্র চিকিৎসা শিক্ষা নয়, বরং সামরিক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য নেতৃত্বের গুণাবলী তৈরি করতে কাজ করে।
২. এখানে আধুনিক হাসপাতাল, ল্যাব, এবং গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে।
২. চিটাগাং আর্মি মেডিকেল কলেজ (CAMC), চট্টগ্রাম
অবস্থান: চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট
প্রতিষ্ঠাকাল: ২০১৪
ক্যাম্পাসের বৈশিষ্ট্য:
চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টের সবুজ-শ্যামল পরিবেশে অবস্থিত এই কলেজটি AFMC-এর অধীনে অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান।
বিশেষ সুযোগ-সুবিধা:
১. গবেষণামূলক সুযোগ
২. আধুনিক হাসপাতাল
৩. সামরিক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য হোস্টেল সুবিধা।
৩. কুমিল্লা আর্মি মেডিকেল কলেজ (AMC), কুমিল্লা
অবস্থান: কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট
প্রতিষ্ঠাকাল: ২০১৫
বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
১. উন্নতমানের ল্যাব এবং লাইব্রেরি
২. রোগীদের চিকিৎসা ও শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল প্রশিক্ষণের জন্য আধুনিক হাসপাতাল।
৪. যশোর আর্মি মেডিকেল কলেজ (AMC), যশোর
অবস্থান: যশোর ক্যান্টনমেন্ট
প্রতিষ্ঠাকাল: ২০১৫
ক্যাম্পাসের বিশেষত্ব:
এটি AFMC-এর অন্যতম প্রধান শাখা যেখানে চিকিৎসা শিক্ষার পাশাপাশি সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।
৫. রংপুর আর্মি মেডিকেল কলেজ (AMC), রংপুর
অবস্থান: রংপুর ক্যান্টনমেন্ট
প্রতিষ্ঠাকাল: ২০১৪
বৈশিষ্ট্য:
AFMC-এর অধীনস্থ এই কলেজটি উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
৬. বগুড়া আর্মি মেডিকেল কলেজ (AMC), বগুড়া
অবস্থান: বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট
প্রতিষ্ঠাকাল: ২০১৪
বিশেষত্ব:
১. দক্ষ শিক্ষকবৃন্দ
২. উন্নতমানের চিকিৎসা ও গবেষণার সুযোগ
AFMC এর বৈশিষ্ট্য
AFMC এবং এর অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্যাম্পাস সাধারণত সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলার আওতায় পরিচালিত হয়। এখানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রতিটি ক্যাম্পাসের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো:
1. পরিসর ও সৌন্দর্য: ক্যাম্পাসগুলো সবুজ-শ্যামল ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশে অবস্থিত। 2. ল্যাব ও গবেষণাকেন্দ্র: প্রতিটি কলেজে আধুনিক ল্যাবরেটরি, ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং গবেষণার সুযোগ রয়েছে। 3. লাইব্রেরি: অত্যন্ত সমৃদ্ধ লাইব্রেরি যেখানে মেডিকেল শিক্ষার প্রয়োজনীয় বই, জার্নাল এবং গবেষণাপত্র পাওয়া যায়। 4. আবাসিক সুবিধা: শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক হোস্টেল রয়েছে, যা শৃঙ্খলাপূর্ণ ও নিরাপদ। 5. প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো: AFMC-এ অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি, পাঠাগার, হাসপাতাল এবং প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসরুম রয়েছে। | 6. শিক্ষাব্যবস্থা: AFMC-এ MBBS কোর্সের মেয়াদ ৫ বছর এবং এই কোর্সের পর এক বছরের ইন্টার্নশিপ বাধ্যতামূলক। 7. সামরিক প্রশিক্ষণ: AFMC-এ ভর্তিকৃত সামরিক ক্যাডেটদের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। এটি তাদের পেশাগত জীবনে শৃঙ্খলা এবং নেতৃত্বের মান উন্নয়নে সহায়ক। 8. আবাসিক সুবিধা: এখানে ছেলেমেয়ে উভয়ের জন্য আবাসিক সুবিধা রয়েছে। কলেজ ক্যাম্পাসটি শৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবেশে পরিচালিত হয়। 9. সুবিধা ও সুযোগ-সুবিধা: শিক্ষার্থীদের জন্য মেডিকেল ক্যাম্প, স্কলারশিপ এবং গবেষণার সুযোগ রয়েছে। |
AFMC এবং এর অধীনস্থ কলেজগুলোতে শুধু MBBS ডিগ্রি নয়, চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় গবেষণার সুযোগ রয়েছে।
উন্নতমানের ক্লিনিক্যাল ট্রেনিং
গবেষণাগারে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি
চিকিৎসা বিজ্ঞান বিষয়ক সেমিনার ও কর্মশালা
1. উচ্চমানের শিক্ষার নিশ্চয়তা
2. মেডিকেল ক্যাম্প এবং ফিল্ড ট্রেনিং
3. সামরিক ও অসামরিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ স্কলারশিপ
4. আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজের সুযোগ
AFMC ভর্তি পরীক্ষা ২০২৫ এর তারিখ এবং সময়সূচীঃ | |
---|---|
|
|
১০০ নম্বরের ১০০টি এমসিকিউ প্রশ্নের ১ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
বিষয়ের নাম | নম্বর |
জীববিজ্ঞান | ৩০ |
রসায়ন | ২৫ |
পদার্থবিদ্যা | ২০ |
ইংরেজি | ১৫ |
সাধারণ জ্ঞান | ১০ |
মোট নম্বর | ১০০ |
প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে। ১০০ নম্বরের মধ্যে পরীক্ষার্থীকে ন্যূনতম ৪০ নম্বর পেতে হবে। এর কম পেলে অকৃতকার্য বলে বিবেচিত হবেন। শুধু কৃতকার্য পরীক্ষার্থীর মেধাতালিকাসহ ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ মোট ২০০ নম্বর হিসাবে নির্ধারণ করে মূল্যায়ন করা হবে। পরীক্ষার ভিত্তিতে মেধাতালিকা প্রণয়ন করা হয়।
ভর্তির যোগ্যতা:
বাংলাদেশের নাগরিক শিক্ষার্থী যারা ইংরেজি ২০২১ বা ২০২২ সনে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় এবং ইংরেজি ২০২৪ বা ২০২৩ সনে এইচএসসি বা সমমানের উভয় পরীক্ষায় পদার্থ, রসায়ন ও জীববিদ্যাসহ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা ভর্তির আবেদন করার যােগ্য হবেন। ২০২০ সালের পূর্বে এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র/ছাত্রীরা আবেদনের যােগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।
সকল দেশী ও বিদেশী শিক্ষা কার্যক্রমে এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান দুটি পরীক্ষায় মােট জিপিএ কমপক্ষে ৯.০০ হতে হবে । সকল উপজাতীয় ও পার্বত্য জেলার অ-উপজাতীয় প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় মােট জিপিএ কমপক্ষে ৮.০০ হতে হবে। তবে এককভাবে কোন পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৫০-এর কম হলে আবেদনের যােগ্য হবেন না।
সকলের জন্যে এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় জীববিজ্ঞানে (Biology) ন্যূনতম জিপিএ ৪.০০ থাকতে হবে।
২০২৫ শিক্ষাবর্ষে AFMC ভর্তি পরীক্ষায় পূর্ববর্তী বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের সর্বমােট (Aggregated) নম্বর (এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ-এর ১৫ গুণ+এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ-এর ২৫ গুণ+ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর) থেকে ০৫ (পাচ) নম্বর কেটে এবং পূর্ববর্তী বৎসরের সরকারি মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজ/ইউনিট-এ ভর্তিকৃত ছাত্র/ছাত্রীদের ক্ষেত্রে মােট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ১০ নম্বর কেটে মেধা তালিকা তৈরি করা হবে। লিখিত পরীক্ষায় প্রতিটি ভুল উত্তর প্রদানের জন্য ০.২৫ নম্বর কর্তন করা হবে।
এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ মােট ২০০ নম্বর হিসেবে নির্ধারণ করে নিম্নলিখিতভাবে মূল্যায়ন করাহবে :
ক) এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ-এর ১৫ গুণ=৭৫ নম্বর (সর্বোচ্চ)
খ) এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ-এর ২৫ গুণ=১২৫ নম্বর (সর্বোচ্চ)
লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর এবং এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্তনম্বরের যােগফলের ভিত্তিতে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হবে।
ভর্তির প্রক্রিয়া:
1. আবেদন ফরম পূরণ:
AFMC-এর ভর্তি আবেদন অনলাইনে করা হয়। আবেদনকারীদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদনপত্র জমা দিতে হয়।
2. ভর্তি পরীক্ষা:
ভর্তি পরীক্ষায় MCQ পদ্ধতিতে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, ইংরেজি এবং সাধারণ জ্ঞান থেকে প্রশ্ন করা হয়। সাধারণ জ্ঞান অংশে বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক প্রশ্ন অন্তর্ভুক্ত থাকে।
3. মেধাতালিকা:
ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে একটি মেধাতালিকা প্রস্তুত করা হয়। সামরিক ও অসামরিক প্রার্থীদের জন্য আলাদা আলাদা তালিকা প্রকাশিত হয়।
4. চিকিৎসা পরীক্ষা:
চূড়ান্ত মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া প্রার্থীদের একটি মেডিকেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়।
5. ভর্তি ফি:
সামরিক এবং অসামরিক শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তি ফি এবং টিউশন ফি ভিন্ন হয়ে থাকে।
1. পাঠ্যবই:
মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং জীববিজ্ঞানের বই ভালোভাবে পড়তে হবে।
2. নমুনা প্রশ্ন:
বিগত বছরের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নগুলো ভালোভাবে অনুশীলন করতে হবে।
3. মডেল টেস্ট:
নিয়মিত মডেল টেস্টের মাধ্যমে প্রস্তুতি যাচাই করা দরকার।
4. গণিত ও ইংরেজি:
সাধারণ জ্ঞান ও ইংরেজি অংশে ভালো করতে হলে নিয়মিত সংবাদপত্র পড়া এবং ইংরেজি অনুশীলন জরুরি।
বিগত বছরগুলো অ্যানালাইসিস করলে দেখতে পাবে—৭০ থেকে ৭৫ মার্কস পেলে একটা সিট নিশ্চিত করা যায়। তুমি হয়তো বায়োলজির একটা অধ্যায় পড়েছ। তারপর AFMC প্রশ্নব্যাংক থেকে শেষ ১০ বছরের প্রশ্ন সলভ করবে। দেখবে বেশির ভাগই পারছ। প্রশ্ন কিন্তু অত কঠিন হয় না। কঠিন লাগে কেন তাহলে? এর কারণ হলো, একসঙ্গে সব বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হয়, তা-ও আবার আলাদা থাকে প্রশ্ন। ৬০ মিনিটে ১০০টি উত্তরের বৃত্ত ভরাট করতে হয়। তাই প্রশ্ন সহজ হলেও আমাদের কাছে কঠিন হয়ে যায়। এর জন্য চাই অনুশীলন আর সময়ের টাইম ম্যানেজমেন্ট। বিগত সালের প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন সচরাচর নিম্নোক্ত কয়েক জায়গা থেকে করা হয়।
|
আবেদন ফি জমা দেওয়া আগ পর্যন্ত অনালাইন আবেদন চুড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে না । ফি জমা দেয়ার পদ্ধতি ধাপে ধাপে বর্ণনা করা হল-
টেলিটকের Prepaid মােবাইল ফোনের Message অপশনে গিয়ে AFMC লিখে, স্পেস দিয়ে User ID লিখে 16222 নম্বরে SMS পাঠাতে হবে।
উদাহরণ: AFMC
ফিরতি SMS-এ একটি PIN, প্রার্থীর নাম এবং পরীক্ষার ফিস হিসেবে ১০০০/- (এক হাজার) টাকা কেটে রাখার তথ্য দিয়ে সম্মতি চাওয়া হবে। সম্মতি দেয়ার জন্য নিম্নোক্তভাবে 16222 নম্বরে SMS পাঠাতে হবে।
Message অপশনে গিয়ে AFMC লিখে, স্পেস দিয়ে YES লিখে স্পেস দিয়ে PIN লিখে স্পেস দিয়ে পছন্দের সর্বোচ্চ চারটি Centre Code (১ নং সারণিতে) কমা (,) দিয়ে লিখে 16222 নম্বরে SMS প্রেরণ করতে হবে।
উদাহরণ: AFMC
PIN নম্বরটি সঠিক ভাবে লেখা হলে উক্ত টেলিটকের Prepaid মােবাইল থেকে পরীক্ষার ফি বাবদ ১০০০/(একহাজার) টাকা কেটে রাখা হবে এবং প্রার্থীকে ফিরতি SMS-এ পরীক্ষা কেন্দ্রের নাম জানিয়ে একটি User ID ও Password দেওয়া হবে।
User ID ও Password ব্যবহার করে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে হবে ।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা অনলাইনের মাধ্যমে তাদের আবেদনপত্র জমা দিতে পারবেন । ভর্তি বিষয়ক ওয়েবসাইটের ঠিকানা http://afmc.teletalk.com.bd আবেদনের নিয়মাবলী ধাপে ধাপে বর্ণনা করা হল-
ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করতে হবে । কিভাবে ফরম পূরণ করতে হবে তাদের নির্দেশনা নিচে দেখো-
১. ছবি: স্ক্যান করা অথবা ডিজিটাল ক্যামেরায় তােলা ছবি হতে হবে এবং মাপ হবে 300 x 300 pixel । তবে ছবির সাইজ কোনভাবেই 100 KB এর বেশী হবে না ।
২.স্বাক্ষর: একটি সাদা কাগজে গাঢ় করে স্বাক্ষর করে স্ক্যান করতে হবে । স্ক্যানকৃত ছবি মাপ 300 x 80 pixel হতে হবে । তবে ফাইলের সাইজ 60 KB এর বেশী হবে না ।
৩. ঠিকানা: প্রার্থীর জেলা, বর্তমান ঠিকানা, স্থায়ী ঠিকানা (জেলা, থানা/উপজেলা, পােস্ট কোড ইত্যাদি) ইংরেজীতে লিখতে হবে ।
৪. পছন্দের তালিকা: ভর্তিচ্ছু AFMC কলেজগুলির নাম নিজের পছন্দের ক্রমানুসারে সাজিয়ে লিখে রাখতে হবে । কারণ পছন্দক্রম একবার টাকা দেওয়ার পর আর বদলানাে যাবে না। কলেজসমূহের তালিকা বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া আছে ।
৫. এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার তথ্য।
AFMC-এ কোটা ও মেধার ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। নির্বাচিত প্রার্থীর অর্জিত মেধাক্রম এবং কলেজ পছন্দের ভিত্তিতে প্রার্থী কোনো কলেজে ভর্তি হবেন তা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে নির্ধারণ করা হবে।
পরীক্ষার ফল প্রার্থীর মোবাইলে SMS মাধ্যমে জানানো হবে। এছাড়া ওয়েবসাইটে http://afmc.teletalk.com.bd হতে পরীক্ষার ফল জানা যাবে।
ভর্তি পরীক্ষার ৪০ নম্বরের নিচে প্রাপ্ত পরীক্ষার্থীগণ কোনোভাবেই ভর্তির আবেদনের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে না।
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি হিসেবে প্রতিটি বিষয় ভালো করে রিভিশন দেওয়া জরুরী। কারণ একমাত্র ভালো রিভিশনই পারে পরীক্ষায় সঠিকভাবে প্রশ্নের উত্তর দিতে। মনে রাখতে হবে, AFMC ভর্তি পরীক্ষায় অনেক জটিল কিংবা প্যাচ মারা ইকুয়েশন অথবা মাথা ঘুরানো রিয়াকশন খুব একটা থাকে না। ভালো প্রিপারেশন থাকলে খুব সহজেই এগুলো উত্তর করা যায়। একে একে সবগুলো বিষয় নিয়ে কিভাবে প্রিপারেশন নিতে হবে সেটা বিস্তারিত ভাবে লিখছি-
সাধারণ জ্ঞান: যেকোনো সাধারণ জ্ঞানের বই থেকে বাংলাদেশ বিষয়াবলি শেষবারের মতো দেখে নাও।সাধারণ জ্ঞান বিষয়ের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বিষয়াবলি, খেলাধুলা, বাংলাদেশের নদ-নদী, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, বাংলা সাহিত্য, বাংলাদেশ ও বিশ্বের প্রথম, বৃহত্তম, ক্ষুদ্রতম, বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিখ্যাত স্থাপত্য ও ভাস্কর্য, পুরস্কার ও সম্মাননা, বিশ্ব ইতিহাস এবং বিভিন্ন ধরনের দিবসসমূহ ভালোভাবে পড়বে
ইংরেজি: বিগত বছরগুলোতে AFMC, মেডিকেল ও ডেন্টাল প্রশ্নপত্রে যেসব বিষয়ের ওপর ইংরেজি প্রশ্নগুলো (যেমন Voice, Narration, Synonym, Antonym, Correction, Spelling, Preposition, Phrase & Idioms ইত্যাদি) সেগুলো সমাধান করার পাশাপাশি ভালো কোনো গ্রামার বই থেকে ওই বিষয়গুলো আরও বিস্তারিত পড়তে হবে।
AFMC ভর্তি পরীক্ষার জন্য ইংরেজির বেশি গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো হলোঃ
Synonym
Antonym
Voice change
Translation
Spelling
Vocabulary
Transformation
Phrase and Idioms
Preposition
পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান : পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান সমাধানের জন্য বিগত ১০ বছরের AFMC, মেডিকেল এবং ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর বারবার রিভিশন দিতে হবে। এই কয়দিন শুধু বইয়ের দাগানো তথ্যগুলো রিভিশন দিতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে রসায়ন অংশে নম্বর তোলাটাই বেশ কঠিন। প্রতিটি অধ্যায়ের পেছনের MCQ এবং বোর্ড প্রশ্নগুলো বারবার পড়তে হবে। এ ক্ষেত্রেও শর্ট সিলেবাসকে প্রাধান্য দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে। জৈব যৌগ এবং পর্যাপ্ত ধর্ম পারলেই মোটামুটি ১০-১১ নম্বর পাওয়া সম্ভব।
প্রথম পত্রের ২য়, ৩য় ও ৪র্থ অধ্যায় থেকে বেশি প্রশ্ন আসে। আর দ্বিতীয় পত্রের ১ম, ৪র্থ, ৫ম অধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় পত্রের ৩য় অধ্যায়ের ছোট ছোট অঙ্কগুলো প্রায়ই আসে। রসায়ন অংশে ভালো করতে হলে রসায়ন দ্বিতীয় পত্রকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। প্রথমত, এই অংশে জৈব যৌগ আছে, যাতে অনেকেরই সমস্যা থাকে। বিভিন্ন নামধারী বিক্রিয়া, শনাক্তকারী বিক্রিয়া, অ্যালকোহল, এলডল ক্যানিজারো, ইলেকট্রোফাইল নিউকোফাইল, শেষ দিকের কিছু মুখস্থ তথ্য বারবার চর্চা করতে হবে। AFMC এ ভর্তির জন্য ফিজিক্সের পড়া তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। ফিজিকসের ক্ষেত্রে শর্ট সিলেবাস পড়াই উত্তম। ১৫টা চ্যাপ্টার থেকে ২০টা প্রশ্ন আসবে। এর জন্য সূত্র, একক, মাত্রা, ছক, বৈশিষ্ট্য, কিছু ছোট ফর্মুলা ম্যাথ পড়লেই চলবে।
একটা কথা মনে রেখো সবাই। স্বপ্ন কখনোই কিনতে পাওয়া যায় না। ১০০ টাকার একটা সাজেশন তোমার কাছে অনেক ভালো লাগবে, অস্থির লাগবে। কিন্তু সেটা তোমার স্বপ্ন কিনে দিবে না। মূল কাজ তোমারই!! সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই উচিত ভর্তি পরীক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া। এজন্য বিগত বছরের এডমিশন প্রশ্নব্যাংক এর উপর সর্বোচ্চ প্র্যাক্টিস থাকা জরুরি। এএফএমসি প্রশ্নব্যাংক ছাড়াও ডেন্টাল প্রশ্নব্যাংক,মেডিকাল প্রশ্নব্যাংক , নার্সিং প্রশ্নব্যাংক দেখে রাখলে অনেক সময় উপকারে আসে যা পরবর্তী পরিক্ষাতেও কাজে লাগে। এরজন্য অন্যতম সেরা একটি মাধ্যম হতে পারে চর্চা।
AFMC একটি সম্মানজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা শুধুমাত্র চিকিৎসা শিক্ষার জন্য নয়, বরং একটি শৃঙ্খলাপূর্ণ, দক্ষ এবং দেশপ্রেমিক মানবসম্পদ তৈরি করার জন্য পরিচিত। AFMC-তে পড়া মানে শুধুমাত্র একজন ডাক্তার হওয়া নয়, বরং দেশের সেবায় নিজেকে নিবেদিত করা। যারা মেডিকেলে পড়তে আগ্রহী এবং নেতৃত্বের গুণাবলী অর্জন করতে চাও, তাদের জন্য AFMC একটি অনন্য সুযোগ।