খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) , দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রকৌশল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দক্ষ প্রকৌশলী তৈরি এবং আধুনিক প্রযুক্তি ও গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে ১৯৬৭ সালে খুলনা প্রকৌশল কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৩ সালে এটি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) নামে যাত্রা শুরু করে। কুয়েট তার মানসম্মত শিক্ষা, সমৃদ্ধ গবেষণা সুযোগ, এবং অনন্য ক্যাম্পাস জীবনের জন্য বাংলাদেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও স্বীকৃত। এখানে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের বিভিন্ন বিভাগে উচ্চমানের শিক্ষা প্রদান করা হয়। চলো, আজকে কুয়েট নিয়ে গল্প করি…
কুয়েটের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৭ সালে খুলনা প্রকৌশল কলেজ হিসেবে। পরে এটি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধিভুক্ত হয়। ২০০৩ সালে এটি একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয় এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) নামকরণ করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এটি দেশের প্রযুক্তি শিক্ষার ক্ষেত্রে নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে।
প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক ধাপ: খুলনা প্রকৌশল কলেজ (১৯৬৭)
কুয়েটের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৭ সালে, যখন এটি খুলনা প্রকৌশল কলেজ নামে পরিচিত ছিল।
উদ্দেশ্য:
দক্ষ প্রকৌশলী তৈরি করে দেশের শিল্প এবং প্রযুক্তি খাতে উন্নয়ন ঘটানো।
অবস্থান:
খুলনার ফুলতলায় প্রতিষ্ঠিত এই কলেজটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের প্রকৌশল শিক্ষা প্রদান করার লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়।
পৃষ্ঠপোষকতা:
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার এর প্রতিষ্ঠার দায়িত্বে ছিল এবং এর নির্মাণ এবং উন্নয়ন কাজ চালায়।
বুয়েটের অধিভুক্তি (১৯৭৪)
স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে খুলনা প্রকৌশল কলেজকে বাংলাদেশের প্রধান প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটের অধিভুক্ত করা হয়।
উপকারিতা:
শিক্ষার মান উন্নয়ন।
প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কেন্দ্রীয় সিলেবাস অনুসরণ।
শিক্ষার ধরণ:
বুয়েটের অধিভুক্ত থাকা অবস্থায় এখানে পুরকৌশল (Civil Engineering), যন্ত্রকৌশল (Mechanical Engineering), এবং তড়িৎকৌশল (Electrical Engineering) বিভাগের উপর ভিত্তি করে শিক্ষা দেওয়া হতো।
বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা:
২০০৩ সালে খুলনা প্রকৌশল কলেজ একটি পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়। এটি "খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)" নামে প্রতিষ্ঠিত হয়।
রূপান্তরের কারণ:
দেশের দক্ষ প্রকৌশলী এবং গবেষকের চাহিদা পূরণ।
স্বাধীনভাবে গবেষণা এবং শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা।
আইনি কাঠামো:
বাংলাদেশ সরকার কুয়েট আইন ২০০৩ (KUET Act 2003) পাস করে এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে।
প্রথম ভাইস-চ্যান্সেলর:
অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুল ইসলাম ছিলেন কুয়েটের প্রথম উপাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রার পর কুয়েট দ্রুত তার বিভাগ এবং গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করে।
প্রথম তিনটি বিভাগ:
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (Civil Engineering)।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (Mechanical Engineering)।
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE)।
পরবর্তী বিভাগ:
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE), টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং (URP)।
কুয়েট আজ বাংলাদেশে একটি শীর্ষস্থানীয় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃত।
অবকাঠামো:
নতুন একাডেমিক ভবন, ল্যাবরেটরি, আবাসিক হল এবং অন্যান্য সুবিধা যুক্ত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক:
বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ গবেষণা।
বিদেশে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ।
শিক্ষার আধুনিক পদ্ধতি:
ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম।
ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া পার্টনারশিপ।
কুয়েট বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা শহরে অবস্থিত। প্রায় ১০১ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত কুয়েট ক্যাম্পাসটি সবুজে ঘেরা, যা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি শান্ত ও মনোরম পরিবেশ নিশ্চিত করে।
অবস্থান: খুলনা শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে ফুলতলা উপজেলায় অবস্থিত।
যাতায়াত: কুয়েট ক্যাম্পাসে যাতায়াতের জন্য শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিবহন সুবিধা সহজলভ্য।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: চারপাশের গাছপালা, লেক এবং খোলা আকাশ ক্যাম্পাসের পরিবেশকে আরও মনোরম করে তোলে।
কুয়েট ক্যাম্পাসটি স্থাপত্য ও পরিকল্পনার এক অসাধারণ মিশ্রণ। এখানে আধুনিক ভবনের পাশাপাশি খোলা প্রাকৃতিক পরিবেশ শিক্ষার্থীদের জন্য একটি চমৎকার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
কুয়েটের একাডেমিক ভবনগুলো আধুনিক প্রযুক্তি এবং সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন। প্রতিটি বিভাগে রয়েছে ল্যাবরেটরি, গবেষণার জন্য আলাদা স্পেস এবং ক্লাসরুম।
বিভাগ অনুযায়ী ভবন: প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা ভবন রয়েছে যেখানে শিক্ষার্থীরা তত্ত্ব ও ব্যবহারিক ক্লাস করতে পারে।
স্মার্ট ক্লাসরুম: আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিচালিত হয় যা শিক্ষাকে আরও কার্যকর করে তোলে।
কুয়েটের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় মূল প্রশাসনিক ভবন থেকে। এখানে ভিসি অফিস, রেজিস্ট্রার অফিস এবং অন্যান্য প্রশাসনিক দপ্তর রয়েছে।
কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক হলগুলো রয়েছে, যা তাদের জন্য নিরাপদ এবং স্বাচ্ছন্দ্যময়।
পুরুষ শিক্ষার্থীদের হল:
ফজলুল হক হল (প্রথম হল) (আসন ১৭৫ টি, স্থাপিত: ১৯৭৪)
খান জাহান আলী হল (আসন ৩০০ টি, স্থাপিত: ১৯৭৭)
ড. এম. এ. রশিদ হল (আসন ১৭৫ টি, স্থাপিত: ১৯৮৪)
লালন শাহ হল (আসন ৩০০ টি, স্থাপিত: ১৯৭৫)
অমর একুশে হল (আসন ৫৫০ টি, স্থাপিত: ২০০৬)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল (আসন ৫৫০ টি, স্থাপিত: ২০১৩)
নারী শিক্ষার্থীদের হল: রোকেয়া হল (মহিলা হল) (আসন ৪০০ টি, স্থাপিত: ২০০০)
আবাসনের বৈশিষ্ট্য:
আলাদা পড়াশোনার ব্যবস্থা।
বিনোদন এবং বিশ্রামের জন্য আলাদা কমন রুম।
ডাইনিং সুবিধা।
কুয়েটের ক্যাম্পাসটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং আধুনিক স্থাপত্যের সমন্বয়ে গঠিত। প্রায় ১০১ একরের এই ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের জন্য শান্ত ও সৃজনশীল পরিবেশ নিশ্চিত করে।
ক্যাম্পাসের প্রতিটি ভবন স্থাপত্য নকশার উদাহরণ। আধুনিক প্রযুক্তি এবং স্থান ব্যবহারের চমৎকার সমন্বয় ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে।
প্রশাসনিক ভবন: এটি ক্যাম্পাসের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এখানে ভিসি এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তার দপ্তর রয়েছে।
একাডেমিক ভবন: প্রতিটি বিভাগে পৃথক একাডেমিক ভবন রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমে সহায়তা করে।
কুয়েট ক্যাম্পাসের অন্যতম আকর্ষণ হলো এর নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক পরিবেশ।
লেক: কুয়েটের লেক ক্যাম্পাসের প্রাণ। এর চারপাশে গাছপালা এবং বসার স্থান শিক্ষার্থীদের মানসিক প্রশান্তি দেয়।
সবুজ উদ্যান: উদ্যানের পরিবেশ শিক্ষার্থীদের মনের প্রশান্তি এবং সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করে।
হাইটেক পার্কঃ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১.৬৫ একর জমিতে আইটি পার্ক/হাইটেক পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে
কুয়েটের শিক্ষাক্রম অত্যন্ত গবেষণামূলক এবং ব্যবহারিক শিক্ষা-ভিত্তিক। এখানে দেশের চাহিদা অনুযায়ী প্রযুক্তি ও প্রকৌশল শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
১. প্রকৌশল বিভাগ:
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং।
২. আর্কিটেকচার ও নগর পরিকল্পনা বিভাগ:
আধুনিক নগর পরিকল্পনার সাথে সৃজনশীল ডিজাইনের সমন্বয়।
কুয়েটে ৩টি অনুষদের অধীনে মোট ২০টি বিভাগ আছে। এর মাঝে ১৬ টি বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
পুরকৌশল অনুষদ |
|
---|---|
তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক অনুষদ |
|
যন্ত্রকৌশল অনুষদ |
|
প্র্যাকটিক্যাল ও থিওরিটিক্যাল শিক্ষার সমন্বয়।
অভিজ্ঞ শিক্ষক এবং শিল্প বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ের শিক্ষাক্রম অনুসরণ।
কুয়েটের শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার জন্য একটি সুবিশাল কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, ১৪ টি বিভাগীয় গ্রন্থাগার এবং ৭ টি হল গ্রন্থাগার রয়েছে। দেশ ও বিদেশের অসংখ্য বই আছে। প্রতিটা বিভাগের প্রয়োজনীয় অধিকাংশ বই এখানে পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে ৩টি বই একমাসের জন্য ধার নিতে পারে। এছাড়া এখানে বসে পড়ার জন্য খুবই সুন্দর ব্যবস্থা রয়েছে। এখন কুয়েটের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার অটোমেশন (স্বয়ংক্রিয়) পদ্ধতির আওতায় চলে গেছে,যা বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম। তাই এখন অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে প্রয়োজনীয় বইয়ের তথ্য পাওয়া যায় এবং যেসব বই শিক্ষার্থীরা তুলেছে সেগুলোর পুনরায় ইস্যু করা যায়। এছাড়া প্রতিটি বিভাগের এবং প্রতিটি হলে একটি করে নিজস্ব গ্রন্থাগার রয়েছে, যেখানে প্রতিটি সেমিস্টারের জন্য নামমাত্র মূল্যে অথবা বিনামূল্যে বই পাওয়া যায়।
কুয়েটের ল্যাবরেটরিগুলো আধুনিক প্রযুক্তি এবং সরঞ্জামে সজ্জিত। এগুলো শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি গবেষণার সুযোগও দেয়। কুয়েটের শিক্ষাব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো এর ল্যাবরেটরি সুবিধা। এখানে বিভিন্ন বিভাগে অত্যাধুনিক সরঞ্জামসহ ল্যাবরেটরি রয়েছে।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাবরেটরিমেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের গবেষণা ও শিক্ষার জন্য রয়েছে থার্মোডাইনামিক্স, ফ্লুইড মেকানিক্স, এবং প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাব।
|
---|
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাবরেটরিসিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ল্যাবরেটরি কাঠামোগত শক্তি, সয়েল মেকানিক্স, এবং পরিবেশ প্রকৌশল নিয়ে কাজ করে।
|
ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE) ল্যাবরেটরিEEE বিভাগে পাওয়ার সিস্টেম, ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং কন্ট্রোল সিস্টেম নিয়ে কাজ করা হয়।
|
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) ল্যাবরেটরিCSE বিভাগে রয়েছে মেশিন লার্নিং, ক্লাউড কম্পিউটিং, এবং সাইবার সিকিউরিটি গবেষণার সুযোগ।
|
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাব:
|
নবায়নযোগ্য শক্তি।
অটোমেশন ও রোবোটিক্স।
স্মার্ট সিটি ডিজাইন।
পরিবেশ সংরক্ষণ ও পানি ব্যবস্থাপনা।
ইউজিসির HEQEP প্রকল্পের আওতায় ২০১১ - ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১০ টি প্রকল্প শেষ হয়েছে এবং আরো ৭ টি চলমান। এছাড়া ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের অর্থায়নে আরো ৫ টি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এ বিভিন্ন গবেষণা চলমান। ২০০৯ সাল থেকে ৪ টি শাখায় নিয়মিত ভাবে আন্তর্জাতিক কনফারেন্স হয়ে আসছে, যা হলো-
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উপর WasteSafe
মেকানিক্যাল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর ICMIEE
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর ICCESD
এবং ইলেক্ট্রিক্যাল ইনিফরমেশন ও কমিউনিকেশন প্রযুক্তির উপর EICT
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের উদ্যোগে ২০১০ সাল থেকে নিয়মিত ভাবে প্রকাশিত হচ্ছে International Journal of Engineering Science. এডি সাইন্টিফিক ইনডেক্স নামের আন্তর্জাতিক সংস্থার ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে প্রকাশিত বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় কুয়েটের বিভিন্ন বিভাগের ৩৪ জন শিক্ষক স্থান পেয়েছেন।
কুয়েটের শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অসাধারণ অবদান রাখছে।
প্রযুক্তি উদ্ভাবন:
স্মার্ট হোম প্রযুক্তি।
স্মার্ট ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম।
শিক্ষার্থীদের অর্জন:
আন্তর্জাতিক রোবোটিক্স এবং প্রযুক্তি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ।
শিল্প এবং গবেষণার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব।
কুয়েট শুধুমাত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয় নয়, এটি একটি উচ্চশিক্ষার উৎকর্ষ কেন্দ্র। এর ক্যাম্পাস, ল্যাবরেটরি, গবেষণা, এবং ক্যাম্পাস জীবনের অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি স্মরণীয় অধ্যায় তৈরি করে। কুয়েট থেকে শিক্ষার্থীরা কেবলমাত্র ডিগ্রি অর্জন করে না; তারা উদ্ভাবনী শক্তি, নৈতিকতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলীতে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশের প্রকৌশল এবং প্রযুক্তি শিক্ষার মান উন্নয়নে কুয়েট একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরও উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠবে।
এখানে KUET ভর্তি প্রক্রিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ের মূল তারিখ এবং সময়সীমার সংক্ষিপ্ত একটি টেবিল রয়েছে:
ঘটনা | তারিখ এবং সময় |
---|---|
অনলাইন আবেদন শুরু | 4 ডিসেম্বর, 2024 (বুধবার) |
অনলাইন আবেদন শেষ | 14 ডিসেম্বর, 2024 (শনিবার, 11:59 PM) |
ফি প্রদানের সময়সীমা | ডিসেম্বর 15, 2024 (রবিবার, 5:00 PM) |
যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা | 30 ডিসেম্বর, 2024 (সোমবার) |
ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ও সময় | 11 জানুয়ারী, 2025 (শনিবার, 10:00 AM) |
ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল | জানুয়ারী 26, 2025 |
নাগরিকত্ব: প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা:
প্রার্থীদের 2021 বা 2022 সালে SSC বা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম GPA 4.00 সহ উত্তীর্ণ হতে হবে।
প্রার্থীদের অবশ্যই 2024 সালে HSC বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে অথবা নভেম্বর 2023-এ বা তার পরে তাদের A-লেভেল সার্টিফিকেট প্রাপ্ত হতে হবে।
এসএসসি এবং এইচএসসি (বা সমতুল) উভয় ক্ষেত্রেই প্রার্থীদের অবশ্যই প্রতিটি স্তরে কমপক্ষে 4.00 জিপিএ অর্জন করতে হবে।
বিষয়-নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা:
প্রার্থীদের তাদের এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং ইংরেজিতে কমপক্ষে 18.00 মোট জিপিএ থাকতে হবে।
বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য, প্রার্থীদের এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় জীববিজ্ঞানে ন্যূনতম জিপিএ 4.00 থাকতে হবে।
ও-লেভেল এবং এ-লেভেল প্রার্থী:
প্রার্থীদের অবশ্যই ও-লেভেলের পাঁচটি বিষয়ে কমপক্ষে 'বি' গ্রেড পেতে হবে এবং এ-লেভেলে, তাদের অবশ্যই পৃথকভাবে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং গণিতে কমপক্ষে 'বি' গ্রেড অর্জন করতে হবে। বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য, জীববিজ্ঞানে 'বি' গ্রেড বাধ্যতামূলক।
আবেদন প্রক্রিয়া 4 ডিসেম্বর, 2024 এ শুরু এবং 14 ডিসেম্বর, 2024-এ শেষ ৷ এই সময়ের মধ্যে আপনার আবেদনটি সম্পূর্ণ করতে ভুলবেন না৷ সমস্ত আবেদনপত্র অবশ্যই কুয়েটের অফিসিয়াল ভর্তি পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে জমা দিতে হবে: admission.kuet.ac.bd।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট দেখুন: admission.kuet.ac.bd এ যান ।
আবেদনপত্র পূরণ করুন: সমস্ত প্রয়োজনীয় বিবরণ সঠিকভাবে লিখুন।
প্রয়োজনীয় নথি আপলোড করুন: আপনি একটি সাম্প্রতিক ছবি এবং আপনার একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট আপলোড করেছেন তা নিশ্চিত করুন।
জমা দেওয়ার সময়সীমা: নিশ্চিত করুন যে আপনি সময়সীমার আগে আপনার আবেদন জমা দিয়েছেন।
একবার আপনি আপনার আবেদন জমা দিলে, আপনাকে আবেদন ফি দিতে হবে। ফি প্রদানের সময়সীমা হল 15 ডিসেম্বর, 2024, বিকাল 5:00 মিনিটে।
আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর, KUET যোগ্য প্রার্থীদের একটি তালিকা প্রকাশ করবে যারা ভর্তি পরীক্ষায় বসতে পারবে। আপনার এইচএসসি (বা সমমানের) পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং ইংরেজিতে মোট জিপিএর ভিত্তিতে মেধা তালিকা তৈরি করা হয়েছে। মেধা তালিকা থেকে শীর্ষ 20,000 প্রার্থী ভর্তি পরীক্ষায় বসার যোগ্য হবেন। 20,000 তম অবস্থানে টাই হলে, গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং ইংরেজিতে গ্রেডের ভিত্তিতে প্রার্থীদের বাছাই করা হবে।
KUET যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা 30 ডিসেম্বর, 2024-এ প্রকাশিত হবে। আপনি KUET ভর্তির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: admission.kuet.ac.bd-এ বৈধ প্রার্থীদের তালিকা দেখতে পারেন। আপনার যোগ্যতার স্থিতি যাচাই করার জন্য আপনার নিবন্ধন বিবরণ সহজে আছে তা নিশ্চিত করুন। একজন যোগ্য প্রার্থী হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়া ভর্তি প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
একবার আপনি একজন যোগ্য প্রার্থী হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়ে গেলে, পরবর্তী ধাপ হল আপনার প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা। প্রবেশপত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি যা আপনাকে অবশ্যই পরীক্ষা কেন্দ্রে আনতে হবে। শুধুমাত্র যোগ্য হিসাবে তালিকাভুক্ত প্রার্থীরাই প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। আপনি 1 জানুয়ারী থেকে 10 জানুয়ারী, 2025 পর্যন্ত আপনার প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারেন৷ শেষ মুহূর্তের কোনো সমস্যা এড়াতে এই সময়সীমার মধ্যে এটি ডাউনলোড করতে ভুলবেন না৷
প্রবেশপত্রটি আপনার পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের পাস হিসাবে কাজ করে। তা ছাড়া ভর্তি পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না। এটিতে আপনার পরীক্ষার অবস্থান, তারিখ এবং সময়ের মতো প্রয়োজনীয় তথ্যও রয়েছে।
admission.kuet.ac.bd এ যান।
লগ ইন করতে আপনার রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
আপনার প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে লিঙ্কে ক্লিক করুন.
প্রবেশপত্রের একটি হার্ড কপি প্রিন্ট এবং এটি নিরাপদ রাখা নিশ্চিত করুন।
ভর্তি পরীক্ষার দিন একটি মসৃণ অভিজ্ঞতার জন্য আপনার আসন পরিকল্পনা জানা অপরিহার্য। আসন পরিকল্পনা আপনাকে আপনার মনোনীত পরীক্ষার অবস্থান এবং সময় নির্দেশ করবে। আসন পরিকল্পনা সাধারণত ভর্তি পরীক্ষার কয়েকদিন আগে প্রকাশ করা হয়। এটি আপনার পরীক্ষার কেন্দ্র, রুম নম্বর এবং আসন নম্বর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করে। সিট প্ল্যানটি সাধারণত ইউনিট-ভিত্তিক বিন্যাসে ডাউনলোডের জন্য উপলব্ধ। প্রাসঙ্গিক নথিটি ডাউনলোড করতে ভুলবেন না এবং রেফারেন্সের জন্য এটি মুদ্রণ করুন।
admission.kuet.ac.bd এ যান।
লগ ইন করতে আপনার রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
আসন পরিকল্পনার লিঙ্কটি সন্ধান করুন এবং এটিতে ক্লিক করুন।
আপনার নাম খুঁজুন এবং আপনার পরীক্ষার অবস্থান, রুম নম্বর, এবং আসন নম্বর নোট করুন।
ভর্তি পরীক্ষা 11 জানুয়ারী, 2025 এ অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষাটি 9:30 AM এ শুরু হবে এবং 12:30 PM এ শেষ হবে, এটি 3 ঘন্টার পরীক্ষায় পরিণত হবে। ভর্তি পরীক্ষায় চারটি বিষয় থাকবে: গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং ইংরেজি। প্রশ্নগুলি একাধিক-পছন্দের বিন্যাসে হবে, এই বিষয়গুলিতে আপনার উপলব্ধি এবং জ্ঞানের মূল্যায়ন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
গণিত: 15টি প্রশ্ন, 150 নম্বর
পদার্থবিজ্ঞান: 15টি প্রশ্ন, 150 নম্বর
রসায়ন: 15টি প্রশ্ন, 150 নম্বর
ইংরেজি: 10টি প্রশ্ন, 50 নম্বর
মোট মার্কস: 500
B.Arch প্রোগ্রামের জন্য আবেদনকারী প্রার্থীদের একটি অতিরিক্ত অঙ্কন পরীক্ষা হবে। এই পরীক্ষাটি 12:45 PM থেকে 1:45 PM পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে এবং 100 নম্বরের মূল্য হবে।
ভর্তি পরীক্ষা 11 জানুয়ারী, 2025 এ অনুষ্ঠিত হবে। ফলাফল 26 জানুয়ারী, 2025 এর মধ্যে প্রকাশিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তুমি তোমার ভর্তির ফলাফল অনলাইনে KUET এর অফিসিয়াল ভর্তি পোর্টালের মাধ্যমে দেখতে পারবে: admission.kuet.ac.bd। উপরন্তু, যোগ্য প্রার্থীদের এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে।
ফলাফল মেধা ও অপেক্ষমান উভয় তালিকায় প্রকাশ করা হবে। মেধা তালিকায় এমন প্রার্থীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে যারা সফলভাবে একটি আসন নিশ্চিত করেছে, যখন অপেক্ষমাণ তালিকায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে যারা আসন খালি থাকলে বিবেচনা করা যেতে পারে।
অনুষদ/বিভাগ | কোড | আসন |
---|---|---|
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ | ||
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং | সি.ই | 120 |
বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং ও কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট | বিইসিএম | 60 |
নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা | ইউআরপি | 60 |
স্থাপত্য | খিলান | 80 |
ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ | ||
ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং | ইইই | 120 |
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং | সিএসই | 120 |
ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং | ইসিই | 60 |
বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং | বিএমই | 30 |
পদার্থ বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল | MSE | 60 |
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি | ||
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং | ME | 120 |
ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং | আইপিই | 60 |
লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং | LE | 60 |
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং | টি.ই | 60 |
শক্তি বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল | ESE | 30 |
কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং | ChE | 30 |
মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং | এমটিই | 30 |
শেষ কথা- (তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ)
শিক্ষার্থীদের অবশ্যই উচিত ভর্তি পরীক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া। এজন্য বিগত বছরের KUET এডমিশন প্রশ্নব্যাংক এর উপর সর্বোচ্চ প্র্যাক্টিস থাকা জরুরি। এছাড়াও CKRUET রাবি, চবি, ঢাবি ও জাবি এর প্রশ্নব্যাংক এর আগের বছরের প্রশ্ন প্র্যাক্টিস করা উচিত। এরজন্য অন্যতম সেরা একটি মাধ্যম হতে পারে চর্চা অ্যাপ। মেরিটাইম ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে ইচ্ছুক সকল শিক্ষার্থীকে অগ্রীম শুভকামনা জানাই।