বাংলাদেশে প্রথম এবং একমাত্র বিশেষায়িত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়।
এটি বাংলাদেশে প্রথম, দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় এবং বিশ্বের ১২ তম মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়। এটি বাংলাদেশের ৩৭তম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো স্নাতক (সম্মান) শ্রেণী চালুর অংশ হিসেবে ৩ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিরপুর পল্লবীস্থ অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বিএসসি ইন ওশানোগ্রাফি প্রোগ্রামটি শুরু হয়। এরপর ২০১৮ সালে বিএসসি ইন নেভাল আর্কিটেকচার এন্ড অফশোর ইন্জিনিয়ারিং এর প্রথম ব্যাচের ক্লাস শুরু হয়। ২০১৯ সালে আরো দুইটি প্রোগ্রামের ক্লাস শুরু হয়। এলএলবি ইন মেরিটাইম ল এবং বিবিএ ইন পোর্ট ম্যানেজমেন্ট এন্ড লজিটিক্স। ২০২০ সালে বিএসসি ইন মেরিটাইম ফিশারিজ এর প্রথম ব্যাচের ভর্তি এবং ক্লাস শুরু হয়।
ক্যাম্পাসঃ
মিরপুর ১২তে (পল্লবী) দুইটি অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বর্তমানে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে। হামিদচর,বাকলিয়া,চট্টগ্রামে ইতিমধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসের কাজ শুরু হয়ে গেছে। মেরিটাইম ক্যাম্পাস হবে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাঝে অন্যতম পরিকল্পিত একটি ক্যাম্পাস। কর্ণফুলী নদীর তীরে ১০৬.৬ একর জমির উপর নির্মান হবে বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাস।
শিক্ষার্থীদের থাকার সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে মিরপুর ডিওএইচএসে ৩ টি আবাসিক হল রয়েছে।
বর্তমানে ৪টি ফ্যাকাল্টির অধীনে ৫ টি ডিপার্টমেন্টের একাডেমিক কার্যক্রম চালু রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে ৭টি ফ্যাকাল্টির অধীনে ৩৮ টি ডিপার্টমেন্ট চালু হবে।প্রত্যেকটি ডিপার্টমেন্টে ৪০টি করে আসন রয়েছে।মাস্টার্স পর্যায়েও অনেকগুলো প্রোগ্রামের কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে চলছে।
BSc (Hons) in Oceanography
BSc (Hons) in Marine Fisheries
BSc (Engr.) in Naval Architecture and Offshore Engineering
BBA (Hons) in Port Management and Logistics
LLB (Hons) in Maritime Law
প্রতি সিটের বিপরীতে এখানে তুলনামূলক অনেক পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার প্রশ্ন বাইরে নিতে দেয় না। আবার সঠিক প্রস্তুতির জন্য ভর্তি সহায়ক তেমন কোনো বইও নেই। সাইন্স ফ্যাকাল্টিগুলোর জন্য অন্যান্য ভার্সিটি তথা রাবি, চবি, ঢাবি ও জাবির মতো প্রিপারেশন নিলেই চলবে। এছাড়া চর্চার নিজস্ব মেরিটাইম প্রশ্নব্যাংক ও প্র্যাক্টিস করতে পারো নেভাল আর্কিটেকচারের জন্য ইন্জিনিয়ারিং অন্য ভার্সিটির যেভাবে প্রিপারেশন নিয়েছো ওভাবে নিলেই হবে। আর মেরিটাইম ল এবং পোর্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-র প্রশ্নব্যাংক অনুসরন করবা এবং আইবিএ-র প্রিপারেশনই নিবে।
মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষা -
যোগ্য আবেদনকারীদের প্রাথমিক নির্বাচনের জন্য MCQ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। প্রতি বছরের এইচএসসি সিলেবাস থেকে প্রিলিমিনারি প্রশ্ন আসবে। আবেদনকারীদের পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, রসায়ন, জীববিজ্ঞান এবং ইংরেজি পড়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। ভর্তি পরীক্ষার সময়কাল 1.5 ঘন্টা।
BSMRMU ভর্তির ফলাফল 10/2/2024 এর মধ্যে প্রকাশ করা হবে। অবশেষে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের 28 ফেব্রুয়ারি, 2024 এর মধ্যে ভর্তি হতে হবে
বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচী 2023-24: | |
BSMRMU আবেদনের শেষ তারিখ: | 24/12/2023 18/1/2024 (এবছর তালিকা প্রকাশ হয়ে গিয়েছে, better luck next time) 2 ও 3/2/2024 10/2/2024 এর মধ্যে 11/2/2024 থেকে 28/2/2024 10 মার্চ, 2024 |
চার বছরে আনুমানিক খরচ হবে দেড় লাখের মতো।
সাইন্সের ডিপার্টমেন্টের আনুমানিক সেমিস্টার ফি ১৭/১৮ হাজার। আর বিবিএ এবং এলএলবির ১৪/১৫ হাজার।
তো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি এ আবেদন তো করতেই হয়। কোথায় করবো?
মেরিটাইম অফিসিয়াল ওয়েবসাইতে গেলেই বিস্তারিত পেয়ে যাবে।
মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর ও জিপিএ মিলে সর্বোচ্চ নম্বরের ভিত্তিতে মেধাতালিকা প্রকাশ হবে। স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট আসনসংখ্যায় সর্বোচ্চ স্কোর এর মেধাতালিকায় থাকা শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে।
গবেষণার জন্য রয়েছে একটি গবেষণা কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, মিলনায়তন, ক্যাফেটেরিয়াসহ সকল ধরনের সুবিধাগুলোই পাবে শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশ এবং এক্সট্রা কো-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিসের জন্য ৮টি সক্রিয় ক্লাব রয়েছে।দেশ ও বিদেশের ২০এর অধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে পারস্পরিক সহযোগিতার চুক্তি রয়েছে মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়টির।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণ রাজনীতি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।
শতভাগ র্যাগিং মুক্ত ক্যাম্পাস এবং যৌন হয়রানির ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। ভার্সিটি কর্তৃপক্ষ এই জিনিসগুলো খুব শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।
একবছরে শিক্ষার্থী প্রতি সর্বোচ্চ টাকা ব্যয় হয় সরকারের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত এখানে দেশের সর্বোচ্চ। প্রতি ৭জন শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছ একজন শিক্ষক।
এই ভার্সিটিতে কোনো সেশনজট নেই।
আগেই বলেছি, তাও আবার বললাম।প্রতি সিটের বিপরীতে এখানে তুলনামূলক অনেক পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার প্রশ্ন বাইরে নিতে দেয় না। । সাইন্স ফ্যাকাল্টিগুলোর জন্য অন্যান্য ভার্সিটি তথা রাবি, চবি, ঢাবি ও জাবির মতো প্রিপারেশন নিলেই চলবে। এছাড়া চর্চার নিজস্ব মেরিটাইম প্রশ্নব্যাংক ও প্র্যাক্টিস করতে পারো নেভাল আর্কিটেকচারের জন্য ইন্জিনিয়ারিং অন্য ভার্সিটির যেভাবে প্রিপারেশন নিয়েছো ওভাবে নিলেই হবে। আর মেরিটাইম ল এবং পোর্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-র প্রশ্নব্যাংক অনুসরন করবা। এবং আইবিএ-র প্রিপারেশনই নিবে।
Faculty of earth and ocean Science ও Faculty of Engineering and Technology
পদার্থবিজ্ঞানঃ
এখানে পদার্থবিজ্ঞানের গানিতিক অংশ থেকে প্রশ্ন বেশি আসে। এছাড়া সকল রাশির মাত্রা, একক এবং সূত্র প্রয়োগে গাণিতিক অংশের সমাধানে যথেষ্ট পারদর্শীতা থাকা উচিত। বিগত বছরের প্রশ্নব্যাংক এনালাইসিস করে দেখা যায় গতিবিদ্যা, নিউটনিয়ান বলবিদ্যা, কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি এবং আদর্শ গ্যাস থেকে প্রথম পত্রের অধিকাংশ প্রশ্ন এসেছে। আর ২য় পত্রের তাপগতিবিদ্যা, স্থির ও চল তড়িৎ থেকে প্রশ্ন বেশি এসেছে। তবে সকল অধ্যায় সমান গুরুত্বপূর্ণ।
রসায়নঃ
রসায়নের ক্ষেত্রে মূল বই এর (বিশেষত হাজারী স্যারের বই) সকল অনুশীলনীর প্রশ্ন যথাযথভাবে চর্চা করতে হবে। প্রথম পত্রের গুণগত রসায়ন, মৌলের পর্যায়বৃত্ত ধর্ম ও রাসায়নিক পরিবর্তন এবং ২য় পত্রের
জৈব যৌগ (সকল এডমিশনের জন্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ) এবং তড়িৎ রসায়ন বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
গণিতঃ
তবে ভালো মতো প্র্যাক্টিস এবং হ্যান্ড ক্যালকুলেশন এর অভ্যাস থাকলে সমস্যা হবেনা, যদিও মেরিটাইমে ক্যালকুলেটর allowed (FEOS আর FET এ শুধু, বাকিগুলোয় না)। তবে সকল অধ্যায় ই আয়ত্তে রাখা উচিত।
Faculty of Shipping Administration ও Faculty of Maritime Governance and Policy
বাংলা:
পরীক্ষায় ব্যাকরণ অংশের পাশাপাশি গদ্য ও কবিতা অংশ থেকে বেশ কিছু প্রশ্ন প্রতিবার আসে। সেক্ষেত্রে গদ্য ও পদ্যের মূল বিষয়, লেখক পরিচিতি ও লেখকের গুরুত্বপূর্ণ লেখা গুলো সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
ব্যাকরণ অংশের জন্য ভাষা, বাংলা ভাষা, ব্যাকরণ, শব্দ, কারক, সমাস, সন্ধি, বিভক্তি, বচন, বাক্য সংকোচন, বাগধারা, উপসর্গ, অনুসর্গ বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো ভালো করে অনুশীলন করা প্রয়োজন।
ইংরেজি:
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় গ্রামার থেকে বেশ কিছু প্রশ্ন আসে। সেক্ষেত্রে Parts of speech, Article, Tense, Voice, Narration, Correction, Right form of verbs, Translation, Synonyms, Antonyms, Transformation of sentences, Comprehension প্রভৃতি বিষয় ভালোভাবে পড়তে হবে। ইংরেজির বেসিক ক্লিয়ার থাকা এবং সকল ভার্সিটির বিগত বছরের ইংলিশ প্রশ্নগুলো আয়ত্তে রাখা উচিত।
সাধারণ জ্ঞানঃ
বিগত বছরে জিকে প্রশ্ন বেশ সোজা বলে মনে হয়েছে।
শেষ কথা- (তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ)
শিক্ষার্থীদের অবশ্যই উচিত ভর্তি পরীক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া। এজন্য বিগত বছরের মেরিটাইম এডমিশন প্রশ্নব্যাংক এর উপর সর্বোচ্চ প্র্যাক্টিস থাকা জরুরি। এছাড়াও রাবি, চবি, ঢাবি ও জাবি এর প্রশ্নব্যাংক এর আগের বছরের প্রশ্ন প্র্যাক্টিস করা উচিত। এরজন্য অন্যতম সেরা একটি মাধ্যম হতে পারে চর্চা অ্যাপ। মেরিটাইম ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে ইচ্ছুক সকল শিক্ষার্থীকে অগ্রীম শুভকামনা জানাই।