হাই হাইইইইইই! কেমন আছো?
অনেক দিন পর চলে আসলাম আরেক ব্লগে। কিছুদিন কিছু প্রশ্ন পাচ্ছিলাম, ভাইয়া, এত এত পড়া, মনে তো থাকেনা। কি করবো?
তাই আজকের এই ব্লগ তোমাদের জন্য।
ভাল ফলাফল অর্জন করতে হলে শুধুমাত্র বেশিক্ষণ পড়ালেখা করলেই চলবে না, বরং সুশৃঙ্খলভাবে কৌশল অনুসরণ করতে হবে। শিক্ষার পথে সঠিক পরিকল্পনা ও দক্ষতা উন্নয়নে সুশৃঙ্খল নোট তৈরির কোনো বিকল্প নেই। এটি তোমাকে অনন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে এবং আপনার প্রস্তুতিকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। সঠিকভাবে নোট তৈরি করার কিছু উপায় ও তার উপকারিতা নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।
নোট তৈরির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের শেখার প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করতে পারে। সঠিকভাবে নোট তৈরি করলে পরীক্ষার আগে প্রয়োজনীয় কোনো তথ্য খুঁজতে খাতা-পত্র ঘাঁটাঘাঁটি করতে হয় না। তুমি খুব সহজেই যে কোনো বিষয়ের যে কোনো টপিক খুঁজে পড়তে পারবে। এছাড়াও নোট তৈরি করার সময় শিক্ষকের কথা শোনার ফলে তোমার শ্রবণ ক্ষমতারও উন্নতি ঘটে এবং বোঝার দক্ষতারও বৃদ্ধি হয়। এই অভ্যাস তোমাকে তথ্য সংরক্ষণ ও পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে শেখার প্রক্রিয়াকে গতিশীল করে তুলবে।
নোট বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। ক্লাসে বসে যখন ক্লাস লেকচার হুবহু নোট করছো, তখন এটি এক ধরনের নোট। আবার বাসায় বিভিন্ন বই, ক্লাস লেকচার ইত্যাদির সংমিশ্রণে নোট তৈরি করলে, তা আরেক ধরনের হয়। মূলত নোটের ধরন যাই হোক না কেন, লক্ষ্য হওয়া উচিত যত শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে কার্যকরী ও ফলপ্রসূ নোট তৈরি করা। বাক্য গঠনের দিকে মনোযোগ দাও। সংক্ষিপ্ত কিন্তু গোছানো এবং সহজ বাক্য মনোযোগ আকর্ষণ করে। জটিল বাক্য যথাসম্ভব কম ব্যবহার করো। লেখার মধ্যে নিজেই প্রশ্ন করো এবং নিজেই উত্তর দাও। এতে কথোপকথনের আবহ আসে এবং নিজেকে লেখার সঙ্গে সহজে সম্পৃক্ত হতে পারবে।
তবে, . নোট দুই রকমের হতে পারে
১। ক্লাসে শিক্ষক লেকচারে যা বলছেন বা বোর্ডে যা লিখছেন, সেটার নোট।
২। শুধু গুরুত্বপূর্ণ কোনো টপিক এর নোট।
সুন্দর একটি নোট তৈরি করতে সুন্দর একটি নোটবুক বা খাতা প্রয়োজন। প্রথমেই তোমাকে একটি ভাল মানের খাতা বাছাই করতে হবে। ভাল মানের কাগজের নোটবুক দীর্ঘ সময় টেকসই থাকে। এছাড়াও নোট করার জন্য ভাল মানের কলম ব্যবহার করা উচিত, যাতে লেখা অস্পষ্ট বা লেপ্টে না যায়। সুন্দর খাতা, ভাল মানের কালো কলম, হাইলাইটার, সাইনপেন, স্কেল, রাবার, পেন্সিল, স্ট্যাপলার মেশিন ইত্যাদি সংগ্রহে রাখা উচিত।
একটি নোটবুকে অনেকগুলো কোর্স বা বিষয়ের নোট করবে না। এতে হযবরল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে এবং প্রয়োজনীয় নোট খুঁজে পেতে সমস্যা হতে পারে। প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা আলাদা নোটবুক রাখা উচিত। এটি একদিকে যেমন সময় সাশ্রয়ী, তেমনি সুনির্দিষ্ট ও সুশৃঙ্খল থাকে। নোটবুক এর সাইজ যদি বড় হয়, তবে আলাদা আলাদা নোটবুক বহন করা কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। তাই ক্লাসের জন্য নোটবুক তৈরী করার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবে, সেটি যেন একটু ছোট সাইজের হয়।
নোট করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন কর্নেল মেথড, ওয়েব মেথড, আউটলাইন মেথড, চারটিং মেথড, সেনটেন্স মেথড। কর্নেল মেথড বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এতে নোটবুকের পৃষ্ঠার নিচে এক-চতুর্থাংশ জায়গায় সামারি লেখা হয় এবং বাম দিকে কঠিন শব্দ বা তথ্যের ব্যাখ্যা লেখা হয়। ডান দিকে মূল নোট লেখা হয়। এই মেথড ব্যবহার করলে নোটটি খুবই সুশৃঙ্খল ও সহজবোধ্য হয়।
কর্নেল মেথডে, প্রথমে আপনার নোটবুকের পৃষ্ঠার নিচের দিকে একটি দাগ টানতে হবে। এই জায়গার পরিমাণ হবে পৃষ্ঠাটির এক-চতুর্থাংশ বা চারভাগের এক ভাগ। এরপর এই দাগের উপর লম্বালম্বি একটি দাগ টানতে হবে। এই দাগটি পৃষ্ঠার বাম দিক থেকে আড়াই ইঞ্চি বা এর আশেপাশের পরিমাণ ফাঁকা রেখে টানবেন। ডানদিকে যে ফাঁকা অংশটি রইলো, সেখানে তোমার নোট লিখবে। নিচের যে এক চতুর্থাংশ জায়গা রয়েছে, সেখানে পুরো নোটটি সংক্ষেপে সামারি (Summary) করে লিখবে। বামদিকের আড়াই ইঞ্চি জায়গায় কঠিন শব্দ বা তথ্যের ব্যাখ্যা লিখে রাখবে।
সময় বাঁচায়
মাইন্ড ম্যাপের মাধ্যমে বড় আকারের তথ্য সংক্ষেপে উপস্থাপন করা যায়। এটি কী-ওয়ার্ড ব্যবহার করে, ফলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাদ পড়ে না। আপনি দ্রুত পড়া শেষ করতে পারো, যা তোমার পড়ার সময় কমিয়ে আনে।
মনে রাখার জন্য কার্যকরী
মাইন্ড ম্যাপ সুপার মেমোরির সাতটি পদ্ধতির সমন্বয়ে গঠিত। এতে ছবি ও রঙের ব্যবহারে তথ্য সহজে মনে রাখা যায়। এটি কল্পনা, সৃষ্টিশীলতা এবং ছন্দের সমন্বয় করে, যা পড়া বুঝতে ও মনে রাখতে সহায়ক।
1. কেন্দ্রীয় বিষয়
পৃষ্ঠার কেন্দ্রে বিষয়ের নাম দাও এবং রঙিন করতে পারো।
প্রধান শাখা যোগ
প্রধান শাখাগুলো কেন্দ্রে যুক্ত করো, বড় হাতের অক্ষরে লিখো।
মূল পয়েন্ট
প্রধান শাখার সাথে কী-ওয়ার্ড বা ছবি যোগ করো এবং প্রতিটি শাখা রঙিন রাখো।
স্কেচনোট হলো একটি পদ্ধতি যেখানে তথ্যকে ভিজ্যুয়াল উপায়ে উপস্থাপন করা হয়। এতে বিভিন্ন চিত্র, আকার, প্রতীক ইত্যাদি ব্যবহার করে মূল পয়েন্টগুলোকে হাইলাইট করা হয়। এই পদ্ধতিটি নোটটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে এবং পড়ার আগ্রহ বাড়ায়। স্কেচনোটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তথ্য সহজে মনে রাখতে পারে এবং শিক্ষাকে আরও উপভোগ্য করে তুলতে পারে।
নোট তৈরি করার সময় ছক ও ডায়াগ্রাম ব্যবহার করা খুবই উপকারী হতে পারে। বিশেষ করে যখন সংখ্যাগত তথ্য বা জটিল বিষয়গুলি মনে রাখতে হয়। ছক ও ডায়াগ্রাম ব্যবহার করলে তথ্যগুলো সহজে বোঝা যায় এবং মনে রাখা যায়। এতে সময়ও সাশ্রয় হয় এবং নোটটি আরও সুশৃঙ্খল হয়।
নোট তৈরির ক্ষেত্রে হাইলাইটার ব্যবহার করা খুবই কার্যকর। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাইলাইটার দিয়ে চিহ্নিত করা হলে, পড়ার সময় এই তথ্যগুলো সহজেই চোখে পড়ে এবং মনে রাখা সহজ হয়। হাইলাইটার দিয়ে বিভিন্ন রঙ ব্যবহার করে নোটটিকে আরও আকর্ষণীয় ও সুশৃঙ্খল করা যায়।
নোট তৈরি করার সময় বিভিন্ন মেথডের সংমিশ্রণ ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন, কর্নেল মেথডের সাথে স্কেচনোট বা আউটলাইন মেথডের সাথে হাইলাইটার ব্যবহার করা। এতে নোটটি আরও কার্যকর ও সুশৃঙ্খল হয় এবং পড়ার আগ্রহ বাড়ে। শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে নোট তৈরি করে নিজেদের শেখার প্রক্রিয়াকে আরও উন্নত করতে পারে।
নোট তৈরির ক্ষেত্রে হাতের লেখার প্রতিও বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। নোটবুকে লিখার সময় যত সম্ভব সুন্দর করে লেখার চেষ্টা করবে। এতে নোটটি পড়তে সুবিধা হয় এবং পড়ার সময় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ হয়। এছাড়াও নোটে অযথা কাটাকাটি করা থেকে বিরত থাকো, যাতে নোটটি পরিষ্কার থাকে।
ক্লাসে শিক্ষকের লেকচার নোট করার সময় দ্রুত লেখা চেষ্টা করো। এতে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাদ পড়বে না। শর্টহ্যান্ড পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারো, যেমন কোনো কিছুর পূর্ণরূপ না লিখে সংক্ষিপ্ত রূপ বা এক্রোনিম ব্যবহার করা। এতে সময় সাশ্রয় হয় এবং নোটটি আরও কার্যকর হয়।বাক্য গঠনের দিকে মনোযোগ দাও। সংক্ষিপ্ত কিন্তু গোছানো এবং সহজ বাক্য মনোযোগ আকর্ষণ করে। জটিল বাক্য যথাসম্ভব কম ব্যবহার করো। লেখার মধ্যে নিজেই প্রশ্ন করো এবং নিজেই উত্তর দাও। এতে কথোপকথনের আবহ আসে এবং নিজেকে লেখার সঙ্গে সহজে সম্পৃক্ত হতে পারবে।
নোট তৈরির ক্ষেত্রে শুধু একটি বই বা শিক্ষকের লেকচার না লিখে বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করা উচিত। এতে নোটটি আরও সম্পূর্ণ ও সমৃদ্ধ হয়। একাধিক বই ও অন্যান্য রিসোর্স থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে নোটে অন্তর্ভুক্ত করুন। এতে তোমার নোটটি আরও তথ্যবহুল ও কার্যকর হবে।লেকচারের সময় খাতায় তুলে নেওয়া নোটগুলো পরে বাসায় পড়ার সময় বেশ কাজে দেবে। নোটগুলো দেখলে আলোচনার অনেক কিছুই মনে পড়বে, পাঠ বুঝে ওঠা সহজ হবে। যে কথাগুলো বইয়ে নেই কিন্তু পাঠের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বা পাঠ বুঝতে সহায়ক—সেগুলো নোট করবে। কোনো কঠিন বিষয়ের আলোচনায় শিক্ষক লেকচারে যেসব প্রসঙ্গ তোলেন, সেগুলোও পয়েন্ট আকারে নোটে রাখবে।
নোট তোমাকে তিনভাবে সাহায্য করে–
১। সময় বাঁচায়
২। মনে রাখার ক্ষমতা বাড়ায়
৩। বোঝার ক্ষমতা বাড়ায়
দুটো উদাহরণ তুলে ধরছি
উদাহরণ-১ এ পদ্ধতিতে পাঠ্যবইয়ের কিছু লাইন (Key Idea) সরাসরি তুলে আনা হয়। যেমন- | উদাহরণ-২ এ ধরনের নোট লেখা হয় পয়েন্ট করে। অধিকাংশ ভাল ছাত্রের নোটই হয় এরকম |
কঠিন পদার্থ কঠিন পদার্থের অণুগুলো খুব কাছাকাছি থাকে। তারা সারিবদ্ধ ভাবে সজ্জিত। এ অণুগুলোর মধ্যেকার আকর্ষণ শক্তি তাদেরকে এক সাথে ধরে রাখে। এ অণুগুলো শুধুমাত্র তাদের অবস্থান থেকে কম্পিত হতে পারে। তরল পদার্থ তরল পদার্থের অণুগুলো দূরে দূরে থাকে। তাদের মধ্যে সাজানো অবস্থা নেই। তাদের আন্তঃআণবিক বল দুর্বল। তাই, তাদের নির্দিষ্ট আকার নেই। তাদের অণুগুলো পরস্পরের উপর চলাচল করে। গ্যাসীয় পদার্থ গ্যাসীয় পদার্থের অণুগুলো অনেক দূরে দূরে থাকে। তারা খুব দ্রুত চলাচল করে। | পদার্থের তিনটি রূপ ১। কঠিন পদার্থ (ক) এর অণুগুলো কাছাকাছি ও সারিবদ্ধ অবস্থায় থাকে। (খ) আণবিক বল অণুগুলোকে একত্রে ধরে রাখে। (গ) অণুগুলো নিজের অবস্থানে থেকেই কম্পিত হয় । ২। তরল পদার্থ (ক) অণুগুলো দূরে দূরে থাকে ও তাদের কোন সাজানো অবস্থা নেই। (খ) আণবিক বল দুর্বল বিধায় নির্দিষ্ট আকার নেই। (গ) অণুগুলো নিজেদের মাঝে চলাচল করতে পারে । ৩। বায়বীয় পদার্থ (ক) অণুগুলো অনেক দূরে দূরে থাকে। (খ) অণুগুলো খুব দ্রুতগতিতে চলাচল করে। |
পুনরাবৃত্তি ও রিভিশন
নোট তৈরি করার পর তা নিয়মিত পুনরাবৃত্তি ও রিভিশন করা উচিত। এতে তথ্যগুলো আরও ভালোভাবে মনে থাকে এবং পরীক্ষার সময় পুনরাবৃত্তি করতে সুবিধা হয়। নিয়মিত রিভিশন করলে নোটটি আরও কার্যকর হয় এবং পড়ার আগ্রহ বাড়ে।
নিজের স্টাইল তৈরি করো
নোট তৈরির ক্ষেত্রে নিজের স্টাইল তৈরি করো। নিজের প্রয়োজন ও সুবিধা অনুযায়ী নোট তৈরি করো। এতে নোটটি আরও সহজবোধ্য ও কার্যকর হবে। নিজের স্টাইল ও পদ্ধতিতে নোট তৈরি করলে তা আরও উপভোগ্য হয় এবং শিক্ষার প্রক্রিয়াকে গতিশীল করে তোলে।
প্রযুক্তির ব্যবহার
নোট তৈরির ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল নোট তৈরির জন্য বিভিন্ন অ্যাপ ও সফটওয়্যার ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে নোটটি আরও সুসজ্জিত ও সহজবোধ্য হয়। ডিজিটাল নোটে বিভিন্ন চিত্র, ভিডিও, অডিও ইত্যাদি যুক্ত করা যায়, যা শিক্ষার প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করে তোলে।
পৃথিবীর আর সব চক্রের মত আমাদের মেমোরীরও আছে নির্দিষ্ট চক্র। তুমি হয়তো দেখবে, এমন কিছু সময় আছে, যখন পড়া শুরু করলে খুব দ্রুত পড়া হয় এবং বেশ ভাল মনে থাকে। আবার, এমন কিছু সময় আছে, যখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বই নিয়ে বসে থাকলেও কিছু পড়া হয় না। কিন্তু, আমাদের ক্ষমতা আছে এর সঠিক ব্যবহারের। আর, সেটা জানতে হলে চলো আগে জেনে নেয়া যাক, আমাদের মেমোরীতে কী কী তথ্য, কীভাবে জমা হয়।
তা হলে, খাতা কলম নিয়ে বসো। নীচে কতগুলো এলোমেলো ইংরেজী শব্দ আছে। তুমি মাত্র একবার চোখ বুলিয়ে খাতায় লিখে ফেলবে। সিরিয়ালি না লিখলেও চলবে। দেখুন, ৩৩টা শব্দের মাঝে তুমি কতগুলো মনে রাখতে পেরেছো। তবে, মনে রাখবে, একবারের বেশি শব্দগুলো দেখবে না।
|
|
এখন, খাতায় নম্বর দিয়ে লিখে ফেলো। আবার দেখবে না । এবার যে শব্দগুলো লিখেছো সেগুলো ভালভাবে লক্ষ করো। কেন আর কীভাবে তুমি এ শব্দগুলো মনে রেখেছো
১. একেবারে প্রথম দিকের কিছু শব্দ তুমি মনে রেখেছো।
২. একেবারে শেষদিকের কিছু শব্দ তুমি লিখতে পেরেছো।
৩. যে শব্দগুলো একাধিকবার আছে সেগুলো মনে আছে।
৪. অন্যধারার শব্দ, যেমন-Santa Claus মনে আছে।
৫. একই ধরনের সম্পর্কযুক্ত শব্দ যেমন-Right, Left মনে আছে।
বিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণা করেই এ তথ্য বের করেছেন। তারা
দু’ঘণ্টার পড়াকে পর্যালোচনা করে দেখেছেন পড়ার শুরু আর শেষের দিকের অংশ বেশি মনে থাকে।
নোট তৈরি করার পর, প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে ফিডব্যাক নেয়া উচিত। ফিডব্যাকের মাধ্যমে নোটটির ত্রুটি ও অসম্পূর্ণতা চিহ্নিত করা যায় এবং সংশোধন করা যায়। ফিডব্যাকের ভিত্তিতে নোটটি আরও উন্নত ও কার্যকর করা যায়। নিয়মিত ফিডব্যাক ও সংশোধনের মাধ্যমে দলগত নোটটি আরও সুশৃঙ্খল ও সুনির্দিষ্ট হয়।
ক্লাস নোট তৈরি করার সময় যা কিছু লক্ষণীয়
কোন বিষয় যদি জটিল মনে হয়, ক্লাসে জিজ্ঞেস করতে সঙ্কোচ লাগে তা হলে বিষয়টির নিচে আন্ডার লাইন করে রাখো আর ক্লাস শেষে বিষয়টি শিক্ষকের সাথে আলোচনা করে নাও।
দ্রুত লেকচার দেয়ার কারণে পুরো লেকচারটি লেখা সম্ভবও নয়। কাজেই শুধু মূল পয়েন্টগুলো টুকবে, পুরো বাক্য লিখতে যাবে না।
শিক্ষক যে বিষয়ের উপর লেকচার দিচ্ছেন, নোট বুকে তার হেডিং আগেই লিখে ফেলো।
ক্লাস নোট তৈরি করার জন্য ক্লাসের ৩/৪ জন শিক্ষার্থী নিয়ে তৈরি করো স্টাডি পার্টনার। আর ক্লাস শেষে ক্যাম্পাসের সবুজ চত্বরে বসে ক্লাস নোট বের করে মূল নোটটি তৈরি করুন।
সর্বোপরি শিক্ষকের লেকচারের কথা মনে করো। তাঁর কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ নাও। শিক্ষকের কাছ থেকে জেনে নাও বিশেষ অংশটির ওপর কোন লেখকের বই ভাল হবে।
পুনরাবৃত্তি ও রিভিশন
নোট তৈরি করার পর, নিয়মিত পুনরাবৃত্তি ও রিভিশন করা উচিত। প্রত্যেক সদস্যের নোট পুনরায় পড়া উচিত এবং কোন তথ্য ভুল বা অসম্পূর্ণ হলে তা সংশোধন করা উচিত। নিয়মিত পুনরাবৃত্তি ও রিভিশনের মাধ্যমে নোটটি আরও সুশৃঙ্খল ও কার্যকর হয় এবং পড়ার আগ্রহ বাড়ে।
পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য নোট
পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য নোট খুবই কার্যকর। পরীক্ষার আগে নোট পড়ে নেওয়া খুবই উপকারী। এটি শুধুমাত্র তথ্য পুনরাবৃত্তি করতে সাহায্য করে না, বরং দলগত আলোচনার মাধ্যমে জটিল বিষয়গুলো সহজে বোঝা যায়। পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য নোট খুবই সহায়ক।
নোটের সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ
নোট তৈরি করার পর তা সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নোটগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা উচিত, যাতে প্রয়োজনের সময় সহজে পাওয়া যায়। ডিজিটাল নোট তৈরির ক্ষেত্রে নোটগুলো ক্লাউড স্টোরেজে সংরক্ষণ করা যেতে পারে। এতে নোটগুলো সবসময় সুরক্ষিত থাকে এবং যে কোনো সময় যে কোনো জায়গা থেকে অ্যাক্সেস করা যায়।
যা পড়েছো পরীক্ষার আগে আবার নতুন করে পড়তে হবে। এ সমস্যা থেকে মুক্তির একটাই কার্যকর উপায় আছে। আর, তা হলো সঠিক সময়ে রিভিশন। তুমি যদি Key Word ও Mind Map ব্যবহার করে পড় তা হলে প্রথমবার পড়তে যে সময় লাগবে, দ্বিতীয়বারে লাগবে প্রথমবারের ১০ ভাগের এক ভাগ। সাধারণত, একঘণ্টার পড়া রিভিশন দিতে সময় লাগে ১০ মিনিট। এ রিভিশন যথাসময়ে দিতে হবে । আমাদের ব্রেনে স্বল্পস্থায়ী ও দীর্ঘস্থায়ী মেমোরীর জন্য আলাদা জায়গা আছে। স্বল্পস্থায়ী মেমোরীকে বারবার মনে করলে তা দীর্ঘস্থায়ী মেমোরীতে জায়গা করে নেয়। এ দীর্ঘস্থায়ী মেমোরীতে তথ্য জমা করতে প্রয়োজন চারটি রিভিশন।
প্রথম রিভিশন তোমার দু’ঘণ্টা বিশ মিনিটের (বিশ্রামের সময়সহ) পড়ার সেশনের ১ ঘণ্টা ৫০ মিনিট পড়ার জন্য আর শেষ ১০ মিনিট রাখবে রিভিশনের জন্য। এ রিভিশন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি দু’ঘণ্টায় যা পড়লে তার তথ্যগুলোকে গোছানোর জন্য এ রিভিশন কার্যকরী। এ রিভিশন না দিলে আপনার এত কষ্টের পড়া মনে থাকবে না। | দ্বিতীয় রিভিশন দ্বিতীয় রিভিশন দেবে তোমার প্রথম রিভিশনের ২৪ ঘণ্টার ভেতর। ধরো, আজ সন্ধ্যায় দু’ঘণ্টার স্টাডি সেশনে যা পড়লে পরবর্তী দিন পড়া শুরু করার আগে ১০ মিনিট আজকের পড়া রিভিশন দিয়ে নাও। এ দু’টো রিভিশন দিলে তোমার ন্যূনতম ৫০ ভাগ পড়া মনে থাকবে। |
তৃতীয় রিভিশন এ রিভিশন দেবে ঠিক একসপ্তাহ পর । | চতুর্থ রিভিশন চতুর্থ বা শেষ রিভিশন দেবে পরীক্ষার আগের দিন । |
নোট তৈরির প্রতি উৎসাহ
নোট তৈরির ক্ষেত্রে প্রত্যেক সদস্যের নোট তৈরির প্রতি উৎসাহ থাকা উচিত। নোট তৈরির প্রতি উৎসাহ ও আগ্রহ থাকলে নোটটি আরও কার্যকর ও তথ্যবহুল হয়। নোট তৈরির প্রতি উৎসাহ ও আগ্রহের মাধ্যমে দলগত নোট তৈরি করা আরও সহজ ও উপভোগ্য হয়।
সুশৃঙ্খল নোট তৈরির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষার প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর ও সুশৃঙ্খল করতে পারে। দলগত নোট তৈরি করা একটি অত্যন্ত কার্যকরী উপায়, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে দলগত চেতনা ও সহকর্মীদের সাথে সম্পর্ক উন্নত করে। সঠিক পরিকল্পনা ও পদ্ধতির মাধ্যমে দলগত নোট তৈরি করে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষার প্রক্রিয়াকে আরও উন্নত ও গতিশীল করতে পারে।