মানব সংবেদী অঙ্গঃ চোখ
অডিটরি রিসেপ্টর
পিনা (Pinna) বা অরিকল (Auricle) বা কর্ণছত্র : এটি মাথার দুপাশে অবস্থিত ও তরুণাস্থি নির্মিত কানের
বাইরের প্রসারিত ও লোমশ অংশ । প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষের পিনার গড় দৈর্ঘ্য ৫.৯-৬.৪ সেন্টিমিটার এবং গড় প্রস্থ ২.৯-৩ সেন্টিমিটার । এর অভ্যন্তরে পেশিতন্তু থাকলেও মানুষ কান নাড়াতে পারে না । কোনো শব্দ ভালভাবে শোনার জন্য যে দিক থেকে শব্দ আসে সেদিকে মাথাসহ কানের ছিদ্রকে ঘোরাতে হয় ।
কাজ : শব্দতরঙ্গ সংগ্রহ ও কেন্দ্রীভূত করে অডিটরি মিটাস বা কর্ণকুহরে প্রেরণ করা পিনার কাজ ।
অডিটরি মিটাস (Auditory meatus) বা কর্ণকুহর : পিনার কেন্দ্রে কানের বহিঃছিদ্র থেকে যে সরু নালিপথ কানের টিমপেনিক পর্দা (কর্ণপটহ) পর্যন্ত বিস্তৃত তার নাম কর্ণকুহর বা অডিটরি মিটাস । এর বাইরের এক-তৃতীয়াংশ তরুণাস্থি দিয়ে এবং ভিতরের দুই-তৃতীয়াংশ অস্থিতে (temporal bone) গঠিত । এটি সূক্ষ্ম রোমযুক্ত ত্বকে আবৃত । ত্বকে সেরুমিনাস গ্রন্থি (ceruminous glands) নামক এক প্রকার বহিঃক্ষরা গ্রন্থি থাকে । এরা মূলত এক প্রকার রূপান্তরিত ঘামগ্রন্থি এবং সেরুমেন (cerumen) নামক বাদামি বর্ণের মোমজাতীয় পদার্থ ক্ষরণ করে ।
কাজ : (i) এর মাধ্যমে শব্দ তরঙ্গ লম্বভাবে কর্ণপটহে পৌঁছে; (ii) এতে বিদ্যমান রোম কানে ধুলোবালি প্রবেশে বাঁধা দেয়; (iii) সেরুমেন কর্ণকুহরের গাত্রে একটি তৈলাক্ত ও পিচ্ছিল আবরণ তৈরি করে জীবাণুর সংক্রমণ রোধ করে এবং কর্ণকুহরে প্রবেশিত জীবাণু, পোকা ইত্যাদি ধ্বংস করে; (iv) কর্ণপটহের কাজের জন্য অনুকূল উষ্ণতা ও আর্দ্রতা বজায় রাখে ।