সিরাজউদ্দৌলা
ওই দেখো, ওই যেন চিত্রিত প্রাচীর
ওই তব সৈন্যগণ
দাঁড়াইয়া অকারণ,
গণিতেছে লহরী কি রণ-পয়োধির?
দেখিছ না সর্ব্বনাশ সম্মুখে তোমার?
যায় বা সিংহাসন
যায় স্বাধীনতা-ধন ।
ক. পত্র মারফত শওকতজাকে কে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন?
খ. ঘরের লোক অবিশ্বাসী হলে বাইরের লোকের পক্ষে সবই সম্ভব।' — ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে প্রতিফলিত বিষয়ের সাথে 'সিরাজউদ্দৌলা' নাটকের কোন ঘটনার সাদৃশ্য রয়েছে? আলোচনা করো।
ঘ. “নিজ সেনাদের নির্লিপ্ততাই নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের অন্যতম কারণ। উদ্দীপক এবং সিরাজউদ্দৌলা' নাটকের আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ করো।
উত্তরঃ
ক) পত্র মারফত শওকতঙ্গকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন মিরজাফর।
খ) প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি দ্বারা নবাব সিরাজউদ্দৌলার অমাত্যবর্গের বিশ্বাসঘাতকতার দিকটি বোঝানো হয়েছে। ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে রাজ অমাত্যগণ নবাব সিরাজউদ্দৌলার কর্তৃত্ব রক্ষায় জীবন উৎসর্গ করবেন বলে পবিত্র গ্রন্থ নিয়ে শপথ করেছিলেন। কিন্তু নবাবকে পরাজিত করতে গোপনে অনেকেই ষড়যন্ত্র করেছিলেন ইংরেজদের সাথে, যা তাদের কর্মকাণ্ডে প্রকাশ পেয়েছে। অমাত্যবর্গের এই বিশ্বাসঘাতকতার দিকটিই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যে প্রকাশ পেয়েছে।
উত্তরের সারবস্তু: ঘরের লোক বিশ্বাসঘাতকতা করলে বাইরের মানুষ সহজেই তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে পারে। এ বিষয়টি বোঝাতে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করা হয়েছে।
গ) ' সিরাজউদ্দৌলা' নাটকে বর্ণিত যুদ্ধের ময়দানে নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি মিরজাফর তার সৈন্য নিয়ে যুদ্ধ না করে দাঁড়িয়ে থাকার ঘটনাটির সাথে উদ্দীপকের সাদৃশ্য রয়েছে।
'সিরাজউদ্দৌলা' নাটকে দেখা যায় ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি ও গুরুত্বপূর্ণ অমাত্যবর্গ বিশ্বাসঘাতকতা করে। সেখানে নবাবের অমাত্যবর্গ নবাবের নির্দেশ অমান্য করে ইংরেজদের পক্ষে কাজ করে। যুদ্ধের ময়দানে মিরজাফরের সৈন্যবাহিনী যুদ্ধ না করে দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে পলাশির যুদ্ধে নবাবের বিপুল সমরসামর্থ্য থাকার পরেও নবাবকে করুণ। পরিণতি বরণ করতে হয়।
উদ্দীপকের কবিতাংশে দেখা যায়, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যুদ্ধক্ষেত্রে সৈন্যগণ এমনভাবে দাঁড়িয়ে আছে, যেন দেখে মনে হচ্ছে প্রাচীর । বাংলার সিংহাসনের পতন জেনেও তাদের এরূপ আচরণ কবিকে বিস্মিত করেছে। আর এই দিকটি উদ্দীপক ও 'সিরাজউদ্দৌলা' নাটককে সমতুল্য করে তুলেছে। নাটকেও দেখা যায় বিপুল সৈন্যবাহিনী থাকার পরেও নবাব সিরাজ যুদ্ধে পরাজিত হন। কেননা তাঁর সৈন্যবাহিনী যুদ্ধ না করে দাঁড়িয়ে ছিল। আর এ ঘটনাই উদ্দীপক ও আলোচ্য নাটককে সাদৃশ্যপূর্ণ করে তুলেছে।
উত্তরের সারবস্তু: 'সিরাজউদ্দৌলা' নাটকে বর্ণিত যুদ্ধের ময়দানে নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি মিরজাফর তার সৈন্য নিয়ে যুদ্ধ না করে দাঁড়িয়ে থাকার ঘটনাটির সাথে উদ্দীপকের সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ) পলাশির যুদ্ধে নবাবের বিশাল সৈন্যবহর থাকার পরেও তাদের নির্লিপ্ততাই নবাবের পরাজয়ের অন্যতম কারণ হওয়ায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ বলে প্রতীয়মান হয় ।
'সিরাজউদ্দৌলা' নাটকে পলাশির প্রান্তরে নবাবের বিপুল সমরসামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও নবাবকে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। কেননা নবাবের প্রধান সেনাপতি মিরজাফর ও তাঁর অনুসারীরা নবাবের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তারা ইংরেজদের ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পড়ে নবাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে ছিল। ফলে ইংরেজরা সহজেই নবাবের বিরাট বাহিনীকে পরাজিত করতে পেরেছিল। উদ্দীপকের কবিতাংশে দেখা যায়, বিপুল সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যুদ্ধক্ষেত্রে সৈন্যগণ যুদ্ধ না করে দাঁড়িয়ে আছে। তারা এমনভাবে দাঁড়িয়ে আছে, তাদের দেখে মনে হচ্ছে কোনো প্রাচীর। বাংলার সিংহাসনের পতন চোখের সামনে দেখেও তাদের এরূপ আচরণে কবি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন । আলোচ্য নাটকেও আমরা এমন ঘটনার অবতারণা দেখি।
উদ্দীপকে যেমন বিরাট সৈন্যবাহিনী যুদ্ধ না করে কেবল দাঁড়িয়ে থেকে দেশের পরাজয় দেখছে, তেমনি 'সিরাজউদ্দৌলা' নাটকেও সেনাপতি মিরজাফর ও তাঁর অনুসারীরা যুদ্ধ না করে শত্রুকে সহজেই জিতিয়ে দিয়েছে। ইংরেজরা শক্তি ও সৈন্য সংখ্যায় ছিল খুবই সামান্য। কিন্তু তারা সহজেই জয়লাভ করেছিল মূলত নবাবের সৈন্যদের নির্লিপ্ত আচরণের কারণে। যেমনটি আমরা আলোচ্য উদ্দীপকের ঘটনাতেও দেখতে পাই । উভয়স্থানেই সৈন্যদের নির্লিপ্ততার কারণে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। সুতরাং, প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথাযথ ।
উত্তরের সারবস্তু: পলাশির যুদ্ধে নবাবের বিশাল সৈন্যবহর থাকার পরেও তাদের নির্লিপ্ততাই নবাবের পরাজয়ের অন্যতম কারণ হওয়ায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ বলে প্রতীয়মান হয়।
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
No related questions found