সংলাপ ও খুদে গল্প
(ক) "উচ্চশিক্ষা স্তরে 'বিষয়' নির্বাচনের গুরুত্ব" প্রসঙ্গে দুই বন্ধুর সংলাপ রচনা কর।
অথবা,
(খ) উপযুক্ত শিরোনামসহ নিচের সংকেত অনুসরণে একটি খুদে গল্প লেখ:
চার ভাই-বোনের মধ্যে রাজু সবার বড়। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। পিতার আকস্মিক মৃত্যুতে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। একদিকে নিজের উচ্চশিক্ষা, অন্যদিকে...
(ক) উত্তরঃ
[উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর দুই বন্ধু উচ্চশিক্ষা গ্রহণে কী করবে, তাই নিয়ে সংলাপ বিনিময় করছে]
অমিত : পরীক্ষা তো ভালোভাবেই শেষ হলো, ফলও ইনশাল্লাহ ভালো হবে, তারপর কী করবি?
অর্কিড : ভালো কোনো ইউনির্ভাসিটিতে অনার্সে ভর্তি হব।
অমিত : ঢাকা ভার্সিটি বা অন্য কোনো পাবলিক ভার্সিটিতে সুযোগ না পেলে...
অর্কিড : বুয়েটে পরীক্ষা দেব। বুয়েটে না হলে আব্বা বাইরে পাঠিয়ে দেবেন পড়তে। যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে।
অমিত : তোর আব্বার তো অর্থ-সম্পদ আছে। এখানে না হলে বাইরে পাঠিয়ে দেবেন। আর বাইরে গিয়ে তুই খুব ভালো রেজাল্ট করতে পারবি। কিন্তু আমি? আমার বাবার তো তেমন সামর্থ্য নেই।
অর্কিড : তুই এখানেই কোনো পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স পেয়ে যাবি। আমি নিশ্চিত।
অমিত : তুই না পেলে আমি পাব কী করে?
অর্কিড : আরে আমার তো দেশের বাইরে পড়ার ইচ্ছেটাই প্রবল। আমার আব্বা-আম্মাও চান আমি যেন বিদেশে গিয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করি।
অমিত : বিদেশে গিয়ে কোন বিষয়ে পড়বি?
অর্কিড : মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অথবা ফিজিক্স। তোর পছন্দের বিষয় কী?
অমিত : আমার পছন্দ ফার্মেসি। কিন্তু এখানে তো পছন্দের বিষয় সবসময় পাওয়া যায় না। কাজেই যে বিষয়ে চান্স পাব সেটাতেই উচ্চশিক্ষা গ্রহণের চেষ্টা করব।
অর্কিড : ভালো রেজাল্ট করাটাই বড় কথা। আমি বিশ্বাস করি তুই তা পারবি।
অমিত : চল্ আজকে উঠি। যথাসময়ে বিষয়টা ভাবা যাবে।
অর্কিড : হ্যাঁ চল।
(খ) উত্তরঃ
‘‘একজন রাজুর সাফল্য’’
চার ভাই-বোনের মধ্যে রাজু সবার বড়। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। পিতার আকস্মিক মৃত্যুতে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। একদিকে নিজের উচ্চশিক্ষা অন্যদিকে তার কাঁধে সংসারের দায়িত্ব। বাবার মৃত্যুতে রাজুর মা আরও অসুস্থ হয়ে পড়লেন। সংসার, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার কথা ভেবে তিনি অস্থির হয়ে উঠলেন। রাজু মাকে সাহস দিয়ে বলল- 'তুমি এত ভেবো না মা; আল্লাহর - ওপর ভরসা রাখো। আমার জন্য দোয়া করো; দেখি আমি কী করতে পারি।' রাজু জানে আত্মীয়স্বজন কেউ নেই যারা তাদের দুর্দিনে এগিয়ে আসবেন। রাজুর দুই চাচা রাজুর বাবার টাকায় পড়াশুনা করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। মাঝে একবার এসে সম্পত্তির ভাগ বুঝে নিয়ে সব বিক্রি করে চলে গেছেন। রাজুদের কোনো খোঁজখবর নেননি। রাজুর বাবার ভাগে পুরনো ভিটেবাড়ি জঙ্গল হয়ে পড়ে আছে। ছেলে- মেয়েদের নিয়ে জেলা শহরে থেকে তৈয়ব মাস্টার বাড়িঘরের দিকে নজর দেওয়ার অবকাশ পাননি। ঈদ এবং পারিবারিক ও সামাজিক উৎসবে অনুষ্ঠানে তিনি গ্রামে যেতেন। অনুষ্ঠান শেষে আবার শহরে ফিরতেন। রাজুকে নিশ্চুপ বসে থাকতে দেখে তার একমাত্র মামা জাহিরউদ্দিন এগিয়ে গেলেন। রাজুর মাথায়, পিঠে হাত বুলিয়ে বললেন- ভেঙে পড়ো না রাজু। তুমিই এ পরিবারের বড় সন্তান। এ দুর্দিনে তোমাকেই শক্ত হাতে এ সংসারের হাল ধরতে হবে। আর আমার অবস্থা তো জানই- সাধ থাকলেও সাধ্য নাই। বাবার চাকরির আয়ে চলা সংসার রাজু কীভাবে চালাবে তাই ভাবতে লাগল। তৈয়ব মাস্টার চাইতেন রাজু উচ্চ শিক্ষা শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করবে। মেয়ে ডাক্তার হবে। তার ছেলেমেয়েরা দেশের সুনাগরিক হবে, তার মুখ উজ্জ্বল করবে। রাজু এসব ভেবে আরও অস্থির হয়ে ওঠে। তার বাবার সহকর্মীরা কেউ কেউ তাদেরকে অর্থ সাহায্য করতে চেয়েছিলেন। রাজু তা গ্রহণ না করে বিনয়ের সঙ্গে তাদের বলেছে, আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। রাজুর অসুস্থ মা স্থির দৃষ্টি মেলে ছেলেমেয়ের দিকে তাকিয়ে থাকেন। মায়ের করুণ মুখ দেখে রাজুর ছোট তিন ভাই-বোন সাজু, রিনা, রিমন মুখ লুকিয়ে কাঁদে। রাজু তাদের সান্ত্বনা দিয়ে বলে- ভয় পাসনে তোরা। আমি আছি। বাবার আদর্শ আর মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। তোরা সবাই মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করে মানুষের মতো মানুষ হয়ে বাবার স্বপ্ন পূরণ করবি। সান্ত্বনা দিলেও তাদের লেখাপড়ার খরচ কীভাবে বহন করবে তা নিয়ে সে মহাচিন্তায় পড়ে যায়। রাজুর বাবার বন্ধু সফিক মাস্টার এসে রাজুকে একটা খাম দিয়ে বলেন- এটা ধরো, এখানে আমি সব লিখে দিয়েছি। তুমি ঢাকায় গিয়ে ডাক্তার আজাদের সঙ্গে দেখা করবে। তোমার মাকে ঢাকায় নেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আমাদের স্নেহের ছাত্র আজাদকে তোমাদের ব্যাপারে সব বলেছি। আমি দোয়া করি তোমার মা যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন। তোমরা তোমাদের বাবার স্বপ্নপূরণে এগিয়ে যাও। রাজু মাকে নিয়ে ঢাকায় চলে এলো। ডাক্তার আজাদের তত্ত্বাবধানে মায়ের চিকিৎসা হলো। ডাক্তার আজাদের চেম্বারে রোগীর নাম লেখার সিরিয়াল সংরক্ষণের চাকরি পেল রাজু। ভাই-বোনদের ভালোভাবে পড়াশোনার খরচ জোগান দিতে কঠোর পরিশ্রম শুরু করল সে। চেম্বার থেকে বের হয়ে রিকশা চালানো, বাদাম বিক্রি, চা বিক্রি, পত্রিকা বিক্রি প্রভৃতি করে রাজু শেষ পর্যন্ত সব ভাই-বোনকে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াল। রাজুর ছোট ভাই সাজু উচ্চশিক্ষা নিয়ে অধ্যাপনা শুরু করেছে। রিনা ডাক্তারি পড়া শেষ করেই হাসপাতালে চাকরি নিয়েছে। সবার ছোট ভাই রিমন বুয়েট থেকে পাস করা ইঞ্জিনিয়ার। বাবার মৃত্যুর দশ বছর পর রাজু আজ ভাই-বোনদের সাফল্যের কথা বলল। মা রাজুর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, এ সাফল্য ওদের নয়, বাবা, এ সাফল্য তোর। তোর দশ বছরের কাঠোর পরিশ্রমের ফসল। ততক্ষণে অন্য ভাই-বোনরা রাজুকে ঘিরে দাঁড়িয়েছে। তারা মায়ের কথা সমর্থন করে বলল- মা একদম ঠিক কথা বলেছে ভাইয়া। তুমি না থাকলে আমাদের যে কী হতো আমরা ভাবতেই পারি না। সবাইকে থামিয়ে দিয়ে রাজু বলল, কাল ভোরে সবাই বাড়িতে যাব। সফিক স্যার যেতে বলেছেন বলে রাজু বাড়ি যাওয়ার মূল উদ্দেশ্যটা চেপে গেল। তা হলো বাড়িতে সে বাবার নামে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করবে। বাড়িতে যাওয়ার জন্য সবাই ছুটি নিয়েছে। কাল সকালে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করবে তারা।
(ক) জ্ঞানচর্চায় বিজ্ঞানের ভূমিকা দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ তৈরি কর।
অথবা,
(খ) প্রদত্ত উদ্দীপক অনুসরণে 'পানি-দূষণ' বিষয়ে একটি ক্ষুদে গল্প রচনা কর:-
লঞ্চ ভ্রমণের সময় বুড়িগঙ্গা নদীর পানির রং দেখে রাহাত বিস্মিত হয়।…………….
(ক) নিরাপদ সড়ক চাই বিষয়ে দুজনের মধ্যে একটি সংলাপ রচনা কর ।
অথবা,
(খ) "তুমি অধম তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন? উদ্দীপকটি অনুসরণে একটি খুদে গল্প রচনা কর।
(ক) একটি ঐতিহাসিক স্থান সম্পর্কে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ রচনা করো।
অথবা,
(খ) গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে বেড়ানো বিষয়ে একটি খুদেগল্প রচনা করো।
(ক) মেট্রোরেল ভ্রমণের আনন্দকে কেন্দ্র করে দুই বন্ধুর সংলাপ তৈরি কর।
অথবা, (খ) 'স্বপ্ন পূরণের আশা' শিরোনামে একটি খুদে গল্প লেখ।