১১ সংলাপ / খুদেগল্প
(ক) একুশের চেতনা বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ রচনা করো।
অথবা,
(খ) নিচের উদ্দীপকটি অনুসরণে একটি খুদেগল্প লেখো:
সবুজ শ্যামল এই প্রকৃতিকে উজাড় হতে দেখে বেদনায় তৃণার মনটা কেঁদে ওঠে........
(ক) উত্তরঃ
'একুশের চেতনা' বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপঃ
রুমা : নিলু, কেমন আছ? অনেকদিন পরে তোমার সঙ্গে দেখা হলো।
নিলু : আমি ভালো আছি রুমা, তুমি কেমন আছ? সত্যিই অনেক দিন পর।
রুমা : আমিও ভালো আছি, তবে আমি একটা কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। আগামী ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে একুশের চেতনা নিয়ে আমাকে একটা বক্তৃতা প্রদান করতে হরে।
নিলু : এটা তো খুব ভালো বিষয়। আশা করি তুমি খুব সুন্দরভাবে বক্তৃতা উপস্থাপন করতে পারবে।
রুমা : একুশের চেতনা বিষয়ে তোমার কি কোনো ধারণা আছে?
নিলু : হ্যাঁ, আমার পরিষ্কার ধারণা আছে। সেজন্য তোমাকে ভাষা দিবসের ইতিহাস জানতে হবে।
রুমা : আমাকে বুঝিয়ে বলো, দয়া করে।
নিলু : ১৯৪৭ সালে ধর্মের ভিত্তিতে ভারত থেকে পাকিস্তান আলাদা হয়ে যায়। পূর্ব পাকিস্তান একটি প্রদেশে পরিণত হয়। পাকিস্তান সরকার দেশ পরিচালনার জন্য উর্দু ভাষাকে নির্বাচন করে।
রুমা : কিন্তু আমরা তো বাঙালি, আমাদের দেশ পরিচালনার ভাষা উর্দু হয় কীভাবে?
নিলু : আমি তাই বলছি, আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে ধর্মের ভিত্তিতে যুক্ত হলেও আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি তাদের থেকে আলাদা। তারা একটি ভিন্ন ভাষা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল।
রুমা : তারপর কী হলো?
নিলু : পাকিস্তানের ৫৬ শতাংশ মানুষের মুখের ভাষা ছিল বাংলা আর ৩.২৭ শতাংশ মানুষ উর্দুতে কথা বলতো। কিন্তু পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষাকে দমিয়ে রেখে ৩.২৭ শতাংশ মানুষের ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার ষড়যন্ত্র করে।
রুমা : ধন্যবাদ নিলু। তোমার সঙ্গে কথা বলে একুশের চেতনা সম্পর্কে আমি পরিষ্কার ধারণা পেলাম।
নিলু : তোমাকেও ধন্যবাদ মনোযোগ দিয়ে আমার কথা শোনার জন্যে।
(খ) উত্তরঃ
‘প্রকৃতি বাঁচাও’
সবুজ শ্যামল এই প্রকৃতিকে উজাড় হতে দেখে বেদনায় তৃণার মনটা কেঁদে ওঠে। কিছুদিন আগেও তার বাড়ির চারপাশে সারি সারি গাছ ও বনের উপস্থিতি ছিল। আঁকাবাঁকা সরু পথ দিয়ে বাড়িতে যেতে হৃদয়টা জুড়িয়ে যেত। ছায়াঘেরা নির্মল পরিবেশ হৃদয় ছুঁয়ে যেত। তৃণা যেখানেই যেত, তার গ্রামের এ প্রাকৃতিক পরিবেশ তাকে আকর্ষণ করত প্রবলভাবে। কোথাও গেলে প্রকৃতির সান্নিধ্যে আসার জন্য সে ব্যাকুল হয়ে যেত। এবার পরীক্ষা থাকায় অনেক দিন তার গ্রামে যাওয়া হয়নি। প্রায় তিন মাস পর গ্রামে এসে সে অবাক হয়ে গেল। সবুজে ঘেরা গ্রামীণ পরিবেশ যেন হঠাৎ পালটে গেছে। বড়ো অচেনা মনে হচ্ছে তার নিজ গ্রামকে। নানা জাতের ছোটো-বড়ো গাছগাছালির সমাহারে যে গ্রামখানি তাকে মায়ার ডোরে বেঁধে রেখেছিল; যেখানে পাখিরা আপন মনে কিচিরমিচির করত; সন্ধ্যায় ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক যেখানে নিত্য শোনা যেত; সবুজ শ্যামল গ্রামে গাছে গাছে শোভা পেত নানা রকমের ফুল ও সুস্বাদু ফল; আজ সেখানে এসবের কোনো চিহ্ন নেই। ছায়া সুনিবিড় গ্রামখানি আজ রুক্ষ মূর্তি ধারণ করেছে। প্রকৃতি যেন চিৎকার করে বলছে, আমাকে বাঁচাও, বাঁচাও! তৃণার 'ভেতরে শূন্যতার হাহাকার সবকিছু খানখান করে দিচ্ছে। মানুষ কেন এত নিষ্ঠুর হয়? কীভাবে পারল গাছ কেটে এভাবে উজাড় করতে? মনে মনে এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজে সে। গরমের দিনে যে বটের ছায়ায় সে বিশ্রাম নিত, গ্রীষ্মের খরতাপে যেসব গাছের বাতাসে শরীর শীতল হতো- আজ সেসবের অস্তিত্ব নেই। তার মনে আছে, একবার প্রচণ্ড ঝড় হয়েছিল। বাতাসের গতিবেগ এতটাই প্রবল ছিল যে, পাশের গ্রামের কুঁড়েঘরগুলো উড়ে গিয়ে বহুদূরে পড়েছিল। অথচ গাছগাছালিতে ঘেরা তাদের গাঁয়ের একটি ঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। কারণ, এ গাছগুলো ঝড়ের তীব্রতাকে মোকাবিলা করে গ্রামের মানুষের ঘরগুলোকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। তার এই ভেবে কষ্ট হয় যে, এখন ঝড় হলে লন্ডভন্ড হয়ে যাবে পুরো গ্রাম। মানুষ কত অবিবেচক হলে এভাবে বনভূমিকে উজাড় করতে পারে- তা ভেবেই পায় না তৃণা। বাড়িতে এসে বাবার কাছে জানতে চায়, গ্রামের এমন পরিবেশ কীভাবে হলো। বাবা তাকে জানান, গ্রামের মানুষ এখন আর কাঁচা ঘরে থাকতে চায় না। আধুনিকতার ছোঁয়ায় তারা সবাই এখন পাকা বাড়ি নির্মাণে ব্যস্ত। এজন্য গ্রামে বেশ কয়েকটি ইটভাটা স্থাপিত হয়েছে। এসব ইটভাটায় জ্বালানির চাহিদা মেটাতে প্রচুর কাঠ প্রয়োজন হয়। গ্রামের মানুষর টাকার লোভে এবং উন্নত জীবনের আশায় এসব গাছ কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে। গাছ বিক্রির টাকায় ইট কিনে তারা পাকা বাড়ি নির্মাণ করে। ফলে ইটভাটায় গাছের চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমনি বনভূমি উজাড় হওয়ার পথও প্রশস্ত হয়েছে। মানুষ উন্নত জীবন ও স্বার্থের জন্য প্রকৃতিকে এভাবে ধ্বংস করছে জেনে তৃণা ব্যথিত হয়। সে প্রকৃতির এ দুর্দশা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে গ্রামে একটি সংগঠন গড়ে তোলে, যার নাম 'আমরা বাঁচাব প্রকৃতি'। এ সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, গাছ কাটতে অনুৎসাহিত করা এবং প্রতিটি বাড়িতে ১০টি করে নতুন গাছের চারা রোপণ করতে উৎসাহিত করা। সেই সঙ্গে প্রকৃতি উজাড় করার ফলে আমাদের কী কী ক্ষতি হবে সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে তোলা। অল্পদিনের মধ্যেই তার এর সংগঠনটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং - মানুষ প্রকৃতি রক্ষার উপযোগিতা বুঝতে সক্ষম হয়। মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে তৃণার সংগঠনের প্রচেষ্টায় তার গ্রামটি আবার সবুজে সবুজে ভরে ওঠে। তার এমন অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ একজন পরিবেশবান্ধব মানুষ হিসেবে সে জাতীয়ভাবে পুরস্কৃত হয়।
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
(ক)
জ্ঞানচর্চায় বিজ্ঞানের ভূমিকা দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপতৈরি কর।
অথবা,
(খ) প্রদত্ত উদ্দীপক অনুসরণে 'পানি-দূষণ' বিষয়ে একটি ক্ষুদে গল্প রচনা কর:-
লঞ্চ ভ্রমণের সময় বুড়িগঙ্গা নদীর পানির রং দেখে রাহাত বিস্মিত হয়।…………….
(ক) নিরাপদ সড়ক চাই বিষয়ে দুজনের মধ্যে একটি সংলাপ রচনা কর ।
অথবা,
(খ) "তুমি অধম তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন? উদ্দীপকটি অনুসরণে একটি খুদে গল্প রচনা কর।
(ক) মেট্রোরেল ভ্রমণের আনন্দকে কেন্দ্র করে দুই বন্ধুর সংলাপ তৈরি কর।
অথবা, (খ) 'স্বপ্ন পূরণের আশা' শিরোনামে একটি খুদে গল্প লেখ।
(ক) সাম্প্রতিক 'জঙ্গিবাদ' সমস্যা প্রসঙ্গে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সংলাপ রচনা করো।
অথবা,
(খ) প্রদত্ত উদ্দীপক অনুসরণে একটি খুদেগল্প লেখো:
গ্রীষ্মের ছুটিতে দাদুবাড়ি যায় অনিক। নদীতে ভাসমান নৌকা দেখে মুহূর্তে সে হারিয়ে যায় শৈশবের কোনো এক স্মৃতিতে .....