৮.দিনলিপি/প্রতিবেদন-১০
ক) ঐতিহাসিক স্থানের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করো।
অথবা,
(খ) তোমার কলেজ গ্রন্থাগার সম্পর্কে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করো।
(ক)
উত্তর: বাংলার প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাসে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই বন্ধুরা মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম গ্রীষ্মের ছুটিতে সবাই এমন একটি জায়গায় বেড়াতে যাব। এই ভ্রমণের জন্য আমরা বেছে নিলাম 'পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার' বা 'সোমপুর বিহার'-কে। বিশ্বের যে কয়টি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পেয়েছে, তাদের মধ্যে 'পাহাড়পুর বিহার' অন্যতম। পাল আমলে এই এলাকার নাম ছিল সোমপুর। ১৮৭৯ সালে স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন। এটি ৩০০ বছর ধরে বৌদ্ধদের অতি বিখ্যাত ধর্মচর্চা কেন্দ্র ছিল। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেয়। পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপাল দেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করেছিলেন।
আমরা খুব ভোরে ঢাকা হতে নওগাঁ শহরে রওনা হলাম। নওগাঁ বালুডাংগা বাস টার্মিনাল হতে সরাসরি বাসযোগে আমরা সেই ঐতিহাসিক ও কাঙ্ক্ষিত জায়গা পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে গিয়ে পৌছালাম। বিহারটি ঘুরে দেখতে গিয়ে প্রথমেই চোখ পড়ল এর চতুষ্কোণাকার ভূমি পরিকল্পনায়। উত্তর ও দক্ষিণ বাহুদ্বয় প্রতিটি ১৭৩.৭ মিটার এবং পূর্ব ও পশ্চিম বাহুদ্বয় ২৪৭.১৫ মিটার। এর চারদিকে চওড়া সীমানা দেয়াল দিয়ে ঘেরা ছিল। সীমানা দেয়াল বরাবর অভ্যন্তর ভাগে সারিবদ্ধ ছোট ছোট কক্ষ ছিল। উত্তর দিকের বাহুতে ৪৫টি এবং অন্য তিন দিকের বাহুতে রয়েছে ৪৪টি করে কক্ষ। এই কক্ষগুলোর তিনটি মেঝে। প্রতিটি মেঝে বিছানো ইটের ওপর পুরু সুরকি দিয়ে অত্যন্ত মজবুতভাবে তৈরি করা হয়েছিল। কক্ষগুলোর প্রতিটিতে দরজা আছে। বিহারের উত্তর বাহুর মাঝ বরাবর রয়েছে প্রধান ফটক। বিহারের অন্তর্বর্তী স্থানের উন্মুক্ত চত্বরের মধ্যবর্তী স্থানে রয়েছে কেন্দ্রীয় মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ। এছাড়া রয়েছে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ। বিহারের দক্ষিণে অনেকগুলো স্নানাগার ও শৌচাগার রয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রয়েছে সন্ধ্যাবতীর ঘাট। স্নানঘাট থেকে ১২ মিটার পশ্চিমে রয়েছে একটি গন্ধেশ্বরীর মন্দির।
এরপর আমরা গেলাম পাহাড়পুর সংলগ্ন জাদুঘরে। সেখানে দেখলাম বিভিন্ন ধরনের মূর্তি যেমন- বেলে পাথরের চামুন্ডা মূর্তি, লাল পাথরের দণ্ডায়মান শীতলা মূর্তি, কৃষ্ণ পাথরের শিবলিঙ্গ, বেলে পাথরের মনসা মূর্তি প্রভৃতি। বিষয়গুলো আমাদের মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনগুলো কত উন্নত তা এই পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ঘুরে আমরা বুঝতে পারলাম।
অথবা ,
(খ)
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৯
বরাবর অধ্যক্ষ চৌগাছা ডিগ্রি কলেজ যশোর।
বিষয়: কলেজ গ্রন্থাগার সংক্রান্ত প্রতিবেদন।
সূত্র: চৌ.ডি.ক./০৮/০৪/২০১৯ ২৫শে এপ্রিল, ২০১৯
জনাব,
আপনার প্রেরিত পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে যশোর জেলার চৌগাছা ডিগ্রি কলেজের লাইব্রেরি সরেজমিনে জরিপ করে লাইব্রেরির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য আপনার সদয় অবগতির জন্য নিবেদন করছি।
কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর পরই কলেজ লাইব্রেরি স্থাপিত হলেও বর্তমানে কলেজ লাইব্রেরির অবস্থা খুবই করুণ। বইয়ের সংখ্যাও কম। তার ওপর রয়েছে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থা। কলেজ উন্নয়নের সাথে সাথে কলেজ লাইব্রেরির উন্নয়ন মোটেও হয়নি। ছাত্রের সংখ্যা এবং বইয়ের প্রয়োজন বাড়লেও বইয়ের সংখ্যা বাড়েনি, বরং কমেছে। অনেক ছাত্রশিক্ষক বই নিয়েও আর ফেরত দেননি। গ্রন্থাগারিক অনেক বই খুঁজে পাচ্ছেন না, মেলাতে পারছেন না বইয়ের হিসাব। কলেজ থেকে প্রতিবছর বইয়ের জন্য টাকা বরাদ্দ থাকার কথা থাকলেও কলেজের আর্থিক দুরবস্থার জন্য বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হয় না। বর্তমানে কলেজের বইয়ের সংখ্যা মোট ৫০০ যা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। কলেজ গ্রন্থাগারে বিভিন্ন বিষয়ে উন্নতমানের বই থাকা দরকার। শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও পাঠগ্রহণের স্বার্থে প্রয়োজনীয় সহায়ক বইও থাকা
প্রয়োজন। কিন্তু সেখানে অন্যান্য বইয়ের মতো রেফারেন্স বইয়েরও অভাব রয়েছে। তাছাড়া কলেজ গ্রন্থাগারের বইয়ের বিষয়, সংখ্যা ও মানের
মধ্যেও সঙ্গতি নেই। এর কারণ কলেজে গ্রন্থাগারিকের পদটি শূন্য। তথ্য বিজ্ঞানের প্রভাষক অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে গ্রন্থাগারিকের দায়িত্ব পালন
করেন। ফলে তিনি লাইব্রেরির জন্য প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারেন না। লাইব্রেরির বই রক্ষণাবেক্ষণে বৈজ্ঞানিক কোনো পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় না। সেখানে ক্যাটালগ নেই, বই ইস্যু এবং ফেরত নেওয়ার ব্যাপারেও অব্যবস্থা রয়েছে। এ অবস্থায় গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে পাস করা কোনো ব্যক্তিকে গ্রন্থাগারের দায়িত্ব দিলে ভালো হয়।
প্রয়োজনীয় সুপারিশসমূহ:
১. কলেজ লাইব্রেরিতে বইয়ের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে।
২. ছাত্র ও শিক্ষকের প্রয়োজন মেটাতে বিভিন্ন বিষয়ে উন্নতমানের পর্যাপ্ত সংখ্যক বই ক্রয় করে কলেজ লাইব্রেরিতে সরবরাহ করতে হবে।
৩. সরকারি ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে অনুদান হিসেবে কলেজ লাইব্রেরির জন্য বই সংগ্রহ করতে হবে।
৪. গ্রন্থাগারিকের শূন্যপদে অবিলম্বে লোক নিয়োগ করতে হবে।
৫. কলেজ গ্রন্থাগারে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বই রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দশমিক পদ্ধতিতে পুস্তকের তালিকা প্রণয়ন করতে হবে।
৬. কার্ড ইস্যু ছাড়া কলেজ লাইব্রেরি থেকে বই ইস্যু করা যাবে না। বই ইস্যু করার পর নির্দিষ্ট সময়ে বই ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৭. কলেজ গ্রন্থাগার তত্ত্বাবধানে সচেষ্ট হতে হবে। এজন্য শক্তিশালী একটি কমিটি গঠন করা দরকার।
৮. শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কলেজ গ্রন্থাগারের জন্য বার্ষিক চাঁদা নিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই চাঁদা মওকুফ করা যাবে না।
নিবেদক
ফারুক আহমেদ, দ্বাদশ শ্রেণি,
বিজ্ঞান শাখা, চৌগাছা ডিগ্রি কলেজ
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
(ক) কোনো বেসরকারি কলেজ 'প্রভাষক' পদে নিয়োগ লাভের উদ্দেশ্যে আবেদন কর।
অথবা,
(খ) 'তোমার এলাকার কোনো সড়কের দুরবস্থা'-র উপর একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
(ক) তোমার কলেজে অনুষ্ঠিত মহান বিজয় দিবস উদ্যাপনের একটি দিনলিপি রচনা কর।
অথবা,
(খ) তোমার কলেজে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
(ক) বাংলা নববর্ষ কীভাবে উদ্যাপন করেছ তার ওপর একটি দিনলিপি রচনা করো।
অথবা,
(খ) 'দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি' বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।
(ক) তোমার কলেজের নবীনবরণ অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতার বর্ণনা করো।
অথবা, (খ) নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণ এবং এর প্রতিকার সম্বন্ধে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন রচনা করো।