৫ । বাক্যতত্ত্ব
(ক) বাক্য কাকে বলে? উদাহরণসহ বাংলা বাক্যের গঠনানুগ শ্রেণিবিভাগ দেখাও।
অথবা,
(খ) বন্ধনীর নির্দেশনা অনুযায়ী যে কোনো পাঁচটির বাক্যান্তর কর:
(i) ফরিয়াদি প্রসন্ন গোয়ালিনী। (জটিল)
(ii) অনুগ্রহ করে সব খুলে বলুন। (যৌগিক)
(iii) মানুষটা সমস্ত রাত খেতে পাবে না। (প্রশ্নবোচক)
(iv) ধর্ম আমাদের ইসলাম, কিন্তু প্রাণের ধর্ম আমাদের তারুণ্য। (সরল)
(v) বাড়িটা তারা দখল করেছে। (নেতিবাচক)
(vi) এখনই ডাক্তার ডাকা উচিত। (অনুজ্ঞাবাচক)
(vii) দেখি, সে বিছানায় নাই। (অস্তিবাচক)
(viii) মুক্ত বাতাসে খুব ভালো লাগছে। (বিস্ময়বাচক)
(ক) উত্তরঃ বাক্য: এক বা একাধিক পদের (বিভক্তিযুক্ত শব্দ) সমন্বয়ে যখন বক্তার মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায়, তখন তাকে বাক্য বলে ।
বাক্যের প্রকারভেদঃ
গঠনগত ভাবে বাক্য ৩ প্রকার। যথাঃ
১) সরল বাক্য
২) জটিল বাক্য
৩) যৌগিক বাক্য
১) সরল বাক্য
যে বাক্যে একটিমাত্র কর্তা (উদ্দেশ্য) এবং একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া (বিধেয়) থাকে, তাকে সরল বাক্য বলে। যথা- পুকুরে পদ্মফু জন্মে। এখানে ‘পদ্মফুল’ উদ্দেশ ̈ এবং ‘জন্মে’ বিধেয়। এ রকম কিছু উদাহরণ :
বৃষ্টি হচ্ছে।
তোমরা বাড়ি যাও।
ধনীরা প্রায়ই কৃপণ হয়।
মিথ্যাবাদীকে কেউ ভালবাসে না।
শিক্ষিত লোকেরা অত ̈ন্ত বুদ্ধিমান।
ধনীরা প্রায়ই কৃপণ হয়।
মা শিশুকে ভালোবাসে।
হযরত মোহাম্মদ (স.) ছিলেন একজন আদর্শ মানব। স]
সকল অহংকার হে আমার ডুবাও চোখের জলে।
সরল বাক্য চেনার সহজ উপায়
সরল বাক্যে একটিই সমাপিকা ক্রিয়া থাকে। একটি সরল বাক্যে একটি বা একাধিক অসমাপিকা ক্রিয়া থাকতে পারে। যেমন- কেহ কহিয়া না দিলেও (অসমাপিকা ক্রিয়া) তপোবন বলিয়া বোধ হইতেছে (সমাপিকা ক্রিয়া)।
সরল বাক্যে ক্রিয়াপদ উহ্য থাকতে পারে। যেমন- জ্ঞানী লোক সকলের শ্রদ্ধার পাত্র।
সরল বাক্যের ভেতরে কোন খণ্ডবাক্য বা একাধিক পূর্ণবাক্য থাকে না। যেমন- চেহারা নিষ্প্রভ হলেও তার মুখাবয়বে একটা পরিতৃপ্তির আভা ছিল।
২) জটিল বাক্য
যে বাক্যে একটি প্রধান খণ্ডবাক্য ও তাকে আশ্রয় বা অবলম্বন করে একাধিক খণ্ডবাক্য থাকে,
তাকে জটিল বা মিশ্র বাক্য বলে। যেমনঃ
যে পরিশ্রম করে, সে-ই সুখ লাভ করে। (প্রথম অংশটি আশ্রিত খণ্ডবাক্য, দ্বিতীয়টি প্রধান খণ্ডবাক্য)
যত পড়বে,/ তত শিখবে,/ তত ভুলবে। (প্রথম দুটি অংশ আশ্রিত খণ্ডবাক্য শেষ অংশটি প্রধান খণ্ডবাক্য)
সে যে অপরাধ করেছে তা মুখ দেখেই বুঝেছি
যিনি পরের উপকার করেন তাঁকে সবাই শ্রদ্ধা করে
জটিল বা মিশ্র বাক্য চেনার সহজ উপায়
জটিল বা মিশ্র বাকে একাধিক খণ্ডবাক্য থাকে। এদের মধ্যে একটি প্রধান খণ্ডবাক্য এবং অন্যগুলো সেই বাক্যের উপর নির্ভর করে। যেমনঃ যেহেতু তুমি বেশি নম্বর পেয়েছ, সুতরাং তুমি প্রথম হবে।
অধিকাংশ জটিল বাক্যে প্রতিটি খণ্ডবাক্য এর পর কমা (,) থাকে। যথা- যিনি পরের উপকার করেন, তাঁকে সবাই শ্রদ্ধা করে।
জটিল বাক্যের সাপেক্ষ সর্বনাম ও নিত্য সম্বন্ধীয় যোজক যোগ করতে হয়। যথা-
সাপেক্ষ সর্বনাম : যে….সে, যা….তা, যিনি….তিনি, যারা…. তারা। যেমনঃ যিনি বিদ্বান, তিনি সর্বত্র আদরণীয়।
নিত্য সম্বন্ধীয় যোজক: যখন…. তখন, যেমন…. তেমন, বরং…. তবু, যেইনা….অমনি, যেহেতু….সেহেতু/সেজন ̈। যেমনঃযখন বিপদ আসে, তখন দুঃখও আসে।
৩) যৌগিক বাক্য
একাধিক সরল বাক্য কোন অব্যয় দ্বারা সংযুক্ত হয়ে একটি বাক্য গঠন করলে তাকে যৌগিক বাক্য বলে। যেমনঃ
তার বয়স হয়েছে, কিন্তু বুদ্ধি হয়নি। (সরল বাক্য দুটি- তার বয়স হয়েছে, তার বুদ্ধি হয়নি)
সে খুব শক্তিশালী এবং বুদ্ধিমান। (সরল বাক্য দুটি- সে খুব শক্তিশালী, সে খুব বুদ্ধিমান)
ধনীদের ধন আছে, কিন্তু তারা প্রায়ই কৃপণ হয়।
বুঝে শুনে উত্তর দাও নতুবা ভুল হবে।
এতক্ষণ অপেক্ষা করলাম কিন্তু গাড়ি পেলাম না।
সে আসতে চায়, তথাপি আসতে পারে না।
তাঁর বুদ্ধি হয়েছে, কিন্তু বুদ্ধি পাকেনি।
সত্য কথা বলিনি, তাই বিপদে পড়েছি।
যৌগিক বাক্য চেনার সহজ উপায়
যৌগিক বাক্যের অন্তর্গত নিরপেক্ষ বাক্যগুলো আর, এবং, ও, বা, কিন্তু, অথবা, অথচ, কিংবা, বরং, তথাপি, তবে, তবে কি না, নতুবা, তবু, হয়..নয়, হয়.. না হয়, কেন..না, তত্রাচ, অপিচ প্রভৃতি অব্যয় যোগে সংযুক্ত বা সমন্বিত থাকে। তবে কোন অব্যয় ছাড়াও দুটি সরল বাক্য
একসঙ্গে হয়ে যৌগিক বাক্য গঠন করতে পারে।
(খ) উত্তরঃ
(i) ফরিয়াদি প্রসন্ন গোয়ালিনী। (জটিল)
উত্তর: যিনি ফরিয়াদি তিনি প্রসন্ন গোয়ালিনি ।
(ii) অনুগ্রহ করে সব খুলে বলুন। (যৌগিক)
উত্তর: অনুগ্রহ করুন এবং খুলে বলুন।
(iii) মানুষটা সমস্ত রাত খেতে পাবে না। (প্রশ্নবোচক)
উত্তর: মানুষটা সমস্ত রাত খেতে পাবে কি ?
(iv) ধর্ম আমাদের ইসলাম, কিন্তু প্রাণের ধর্ম আমাদের তারুণ্য। (সরল)
উত্তর: ধর্ম আমাদের ইসলাম হলেও প্রাণের ধর্ম আমদের তারূণ্য।
(v) বাড়িটা তারা দখল করেছে। (নেতিবাচক)
উত্তর: বাড়িটা তারা দখল না করে ছাড়েনি।
(vi) এখনই ডাক্তার ডাকা উচিত। (অনুজ্ঞাবাচক)
উত্তর: এখনই ডাক্তার ডাক।
(vii) দেখি, সে বিছানায় নাই। (অস্তিবাচক)
উত্তর: দেখি সে বিছানায় অনুপস্থিত ।
(viii) মুক্ত বাতাসে খুব ভালো লাগছে। (বিস্ময়বাচক)
উত্তর: কী যে ভালো লাগছে মুক্ত বাতাসে !
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
(ক) একটি সার্থক বাক্যের কী কী গুণ থাকা আবশ্যক? উদাহরণসহ বিশ্লেষণ কর।
অথবা,
(খ) বাক্যান্তর কর (যে কোনো পাঁচটি):
(i) কীর্তিমানের মৃত্যু নাই। (জটিল)
(ii) ছেলেটি অসুস্থতার জন্য অনুপস্থিত। (যৌগিক)
(iii) যারা পরিশ্রমী তারা সফল হয়। (সরল)
(iv) বিড়ালকে বুঝান দায় হইল। (নেতিবাচক)
(v) তারা নিয়মিত শিক্ষার্থী নয়। (অস্তিবাচক)
(vi) মানুষটা সমস্ত রাত খেতে পাবে না। (প্রশ্নবাচক)
(vii) এটি ভারি লজ্জার কথা। (বিস্ময়সূচক)
(viii) দেশের সেবা করা কর্তব্য। (অনুজ্ঞাবাচক)
(ক) গঠন অনুসারে বাক্যের শ্রেণিবিভাগ উদাহরণসহ আলোচনা কর।
অথবা,
(খ) বাক্য রূপান্তর কর (যেকোনো পাঁচটি):
i) ফরিয়াদি প্রসন্ন গোয়ালিনী। (জটিল)
ii) যাদের বুদ্ধি নেই, তারাই এ কথা বিশ্বাস করবে। (সরল)
iii) ওরা আগামীকাল আসবে। (প্রশ্নবাচক)
iv) তার নাম মজিদ। (জিজ্ঞাসাসূচক)
v) দশ মিনিট পর ট্রেন এলো। (যৌগিক)
vi) মাতৃভূমিকে সকলেই ভালোবাসে। (নেতিবাচক)
vii) আমরা নড়লাম না। (অস্তিবাচক)
viii) সদা সত্য বলা উচিত। (অনুজ্ঞা)
(ক) বাক্য কাকে বলে? একটি সার্থক বাক্যের গুণ বা বৈশিষ্ট্যসমূহ উদাহরণসহ লেখ।
অথবা,
(খ) বাক্য রূপান্তর কর (যেকোনো পাঁচটি) :
ⅰ) অনুগ্রহ করে সব খুলে বলুন। (যৌগিক)
ii) ওকে চেনাই যায় না। (অস্তিবাচক)
iii) কীর্তিমানের মৃত্যু নেই। (জটিল)
iv) দশ মিনিট পর ট্রেন এলো। (যৌগিক)
v) বিপদে অধীর হতে নেই। (অনুজ্ঞাসূচক)
vi) মানুষ মরণশীল। (নেতিবাচক)
vii) যাদের বুদ্ধি নেই, তারাই এ কথা বিশ্বাস করবে। (সরল)
viii) লোকটি অত্যন্ত দরিদ্র। (বিস্ময়সূচক)
(ক) আবেগ শব্দ বলতে কী বোঝ? উদাহরণসহ আবেগ শব্দের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর।
অথবা,
(খ) বাক্য রূপান্তর কর (যেকোনো পাঁচটি):
ⅰ) গাড়িটা বেশ জোরে চলছে।
ii) এগিয়ে চলেছে প্রতিবাদী মিছিল।
iii) যে পথ দেখায় সে থাকে এগিয়ে।
iv) মাগো মা! এমন রসিকতা কেউ করে।
v) অধিক ভোজন অনুচিত।
vi) আমি আগামীকাল ঢাকায় যাব।
vii) বুঝিয়াছিলাম মেয়েটির রূপ বড় আশ্চর্য।
viii) হে রাজন, এ ফুলহার তোমার জন্যে।