৫ । বাক্যতত্ত্ব
(ক) বাক্য কাকে বলে? গঠন অনুসারে বাক্য কত প্রকার ও কী না কী? উদাহরণসহ আলোচনা করো।
অথবা,
(খ) নির্দেশ অনুসারে বাক্যান্তর করো (যেকোনো পাঁচটি):
i. মিথ্যাবাদীকে সবাই অপছন্দ করে। (নেতিবাচক)
ii. বিদ্বান হলেও তার অহংকার নেই। (যৌগিক)
iii. কীর্তিমানের মৃত্যু নেই। (জটিল)
iv. যা বার্ধক্য, তাকে সবসময় বয়সের ফ্রেমে বাঁধা যায় না। (সরল)
v. তারা নিয়মিত শিক্ষার্থী নয়। (অস্তিবাচক)
vi. সদা সত্য বলা উচিত। (অনুজ্ঞা)
vii. দৃশ্যটি বড়ই সুন্দর। (বিস্ময়সূচক)
viii. সরস্বতী বর দেবেন না। (প্রশ্নবাচক)
(ক) উত্তরঃ
যে সুবিন্যস্ত পদসমষ্টি দ্বারা কোন বিষয়ে বক্তার মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয় তাকে বাক্য বলে। ডক্টর সুনীতি কুমার মুখোপাধ্যায়ের মতে “পরস্পর অর্থসম্বন্ধবিশিষ্ট যে পথগুলো দ্বারা একটি সম্পূর্ণ ধারণা বা বক্তব্য বা ভাব প্রকাশ পায় সে পদ গুলোর সমষ্টিকে বাক্য বলে”।
বাক্যকে ভাষার মৌলিক একক বলা হয়। বাক্য গঠনের জন্য শব্দের সমন্বয় প্রয়োজন হয়। শব্দের মধ্যে অর্থগত সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে বাক্য গঠিত হয়।
সুতরাং বলা যায় যে, বাক্য হল এক বা একাধিক শব্দের সমষ্টি যা একটি সম্পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে।
সে স্কুলে যায়,
রহিম ক্রিকেট খেলছে,
আমি বই পড়ছি
বাক্যের প্রকারভেদ
প্রতিটি বাক্য দুটি অংশে বিভক্ত। যথাঃ
উদ্দেশ্য
বিধেয়
উদ্দেশ্য
একটি বাক্যে যার সম্বন্ধে কিছু বলা হয় তাকে উদ্দেশ্য বলে।
সে স্কুলে যায়। এখানে “সে” হলো উদ্দেশ্য।
রহিম ক্রিকেট খেলছে। এখানে “রহিম’’ হলো উদ্দেশ্য।
আমি বই পড়ছি। এখানে “আমি’’ হলো উদ্দেশ্য।
উপরের উদাহরণে, “সে”, “রহিম’’,“আমি’’ হলো উদ্দেশ্য। কারণ এদের সম্বন্ধে কিছু বলা হয়েছে।
বিধেয়
বাক্যে উদ্দেশ্যে সম্পর্কে কিছু বলা হলে তাকে বিধেয় বলে। বিধেয় সাধারণত ক্রিয়া পদ দ্বারা প্রকাশিত হয়।
সে স্কুলে যায়। এখানে “স্কুলে যায়” হলো বিধেয়।
রহিম ক্রিকেট খেলছে, এখানে “ ক্রিকেট খেলছে’’ হলো বিধেয়।
আমি বই পড়ছি এখানে “বই পড়ছি’’ হলো বিধেয়।
উপরের উদাহরণে, “স্কুলে যায়”, “ক্রিকেট খেলছে’’,“বই পড়ছি’’ হলো উদ্দেশ্য। কারণ এখানে উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে।
গঠন অনুসারে বাক্যের প্রকারভেদ
গঠন অনুসারে বাক্য কে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথাঃ
সরল বাক্য
জটিল বাক্য / মিশ্র বাক্য
যৌগিক বাক্য
সরল বাক্য
যে বাক্যে একটি উদ্দেশ্য এবং একটি সমাপিকা ক্রিয়া থাকে তাকে সরল বাক্য বলে। অথবা, যে বাক্যে একটি মাত্র প্রধান বাক্যাংশ থাকে তাকে সরল বাক্য বলে।
রহিম ক্রিকেট খেলছে। এখানে “রহিম’’ হলো উদ্দেশ্য এবং “ক্রিকেট খেলছি” হল সমাপিকা ক্রিয়া।
আমি বই পড়ছি। এখানে “আমি’’ হলো উদ্দেশ্য এবং “বই পড়ছি’’ হলো সমাপিকা ক্রিয়া।
জটিল বাক্য / মিশ্র বাক্য
যে বাক্যে একটি সরল বাক্য এবং এক বা একাধিক খন্ড বাক্য থাকে তাকে জটিল বাক্য / মিশ্র বাক্য বলে। জটিল বাক্যে দুই বা ততোধিক কর্তা বা উদ্দেশ্য থাকতে পারে। জটিল খন্ড বাক্যে ‘যে’, ‘সে’, ‘যিনি’, ‘তিনি’, ‘তথাপি’, ‘যদিও’, ‘তবে’, ‘যখন’, ‘তখন’ ইত্যাদি থাকে।
যে রাধে সে চুলও বাঁধে। এখানে সে চুল ও বাঁধে একটি সরল বাক্য এবং যে রাধে খন্ড বাক্য।
যেমন কর্ম তেমন ফল । এখানে যেমন কর্ম একটি সরল বাক্য এবং তেমন ফল খন্ড বাক্য।
আমি জানি যে তুমি মিথ্যাবাদী নও। এখানে আমি জানি একটি সরল বাক্য এবং যে তুমি মিথ্যাবাদী নও খন্ড বাক্য
যৌগিক বাক্য
যখন পরস্পর নিরপেক্ষ দই বা ততোধিক সরল বা জটিল বাক্য মেরে তো হয়ে একটি সম্পূর্ণ বাক্য গঠন করে কখন তাকে যৌগিক বাক্য বলে। যৌগিক বাক্যে ‘অথচ’, ‘কিন্তু’, ‘বরং’, ‘ও’, ‘এবং’, ‘আর’ এরকম অব্যয়ের মাধ্যমে একটি সম্পূর্ণ বাক্য গঠন করে।
তার টাকা আছে, কিন্তু দান করেন না।
বিপদ এবং দুঃখ একই সাথে আসে।
লোকটি গরিব কিন্তু সৎ।
(খ) উত্তরঃ
i. মিথ্যাবাদীকে সবাই অপছন্দ করে। (নেতিবাচক)
উত্তর: মিথ্যাবাদীকে কেউ পছন্দ করে না।
ii. বিদ্বান হলেও তার অহংকার নেই। (যৌগিক)
উত্তর: তিনি বিদ্বান অথচ তাঁর অহংকার নেই ।
iii. কীর্তিমানের মৃত্যু নেই। (জটিল)
উত্তর: যারা কৃর্তিমান তাদের মৃত্যু নেই।
iv. যা বার্ধক্য, তাকে সবসময় বয়সের ফ্রেমে বাঁধা যায় না। (সরল)
উত্তর: বার্ধক্যকে সবসময় বয়সের ফ্রেমে বাঁধা যায় না।
v. তারা নিয়মিত শিক্ষার্থী নয়। (অস্তিবাচক)
উত্তর: তারা অনিয়মিত শিক্ষার্থী।
vi. সদা সত্য বলা উচিত। (অনুজ্ঞা)
উত্তর: সদা সত্য কথা বলবে।
vii. দৃশ্যটি বড়ই সুন্দর। (বিস্ময়সূচক)
উত্তর: বাঃ!কী সুন্দর দৃশ্য !
viii. সরস্বতী বর দেবেন না। (প্রশ্নবাচক)
উত্তর: সরস্বতী বর দেবেন কি ?
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
(ক) একটি সার্থক বাক্যের কী কী গুণ থাকা আবশ্যক? উদাহরণসহ বিশ্লেষণ কর।
অথবা,
(খ) বাক্যান্তর কর (যে কোনো পাঁচটি):
(i) কীর্তিমানের মৃত্যু নাই। (জটিল)
(ii) ছেলেটি অসুস্থতার জন্য অনুপস্থিত। (যৌগিক)
(iii) যারা পরিশ্রমী তারা সফল হয়। (সরল)
(iv) বিড়ালকে বুঝান দায় হইল। (নেতিবাচক)
(v) তারা নিয়মিত শিক্ষার্থী নয়। (অস্তিবাচক)
(vi) মানুষটা সমস্ত রাত খেতে পাবে না। (প্রশ্নবাচক)
(vii) এটি ভারি লজ্জার কথা। (বিস্ময়সূচক)
(viii) দেশের সেবা করা কর্তব্য। (অনুজ্ঞাবাচক)
(ক) গঠন অনুসারে বাক্যের শ্রেণিবিভাগ উদাহরণসহ আলোচনা কর।
অথবা,
(খ) বাক্য রূপান্তর কর (যেকোনো পাঁচটি):
i) ফরিয়াদি প্রসন্ন গোয়ালিনী। (জটিল)
ii) যাদের বুদ্ধি নেই, তারাই এ কথা বিশ্বাস করবে। (সরল)
iii) ওরা আগামীকাল আসবে। (প্রশ্নবাচক)
iv) তার নাম মজিদ। (জিজ্ঞাসাসূচক)
v) দশ মিনিট পর ট্রেন এলো। (যৌগিক)
vi) মাতৃভূমিকে সকলেই ভালোবাসে। (নেতিবাচক)
vii) আমরা নড়লাম না। (অস্তিবাচক)
viii) সদা সত্য বলা উচিত। (অনুজ্ঞা)
(ক) বাক্য কাকে বলে? একটি সার্থক বাক্যের গুণ বা বৈশিষ্ট্যসমূহ উদাহরণসহ লেখ।
অথবা,
(খ) বাক্য রূপান্তর কর (যেকোনো পাঁচটি) :
ⅰ) অনুগ্রহ করে সব খুলে বলুন। (যৌগিক)
ii) ওকে চেনাই যায় না। (অস্তিবাচক)
iii) কীর্তিমানের মৃত্যু নেই। (জটিল)
iv) দশ মিনিট পর ট্রেন এলো। (যৌগিক)
v) বিপদে অধীর হতে নেই। (অনুজ্ঞাসূচক)
vi) মানুষ মরণশীল। (নেতিবাচক)
vii) যাদের বুদ্ধি নেই, তারাই এ কথা বিশ্বাস করবে। (সরল)
viii) লোকটি অত্যন্ত দরিদ্র। (বিস্ময়সূচক)
(ক) পদক্রম কী? বাংলা বাক্যে পদক্রমের পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ লেখো।
অথবা,
(খ) বাক্যান্তর করো (যেকোনো পাঁচটি):
i. 'দুর্জনকে দূরে রেখো। (নির্দেশক)
ii. বিদ্বান হলেও তাঁর অহংকার নেই। (যৌগিক)
iii. সে কথাই এরা ভাবে। (নেতিবাচক)
iv. নির্বোধকে এত বুঝিয়ো না। (জটিল)
v. আমাদের দেশ সুন্দরভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। (বিস্ময়বোধক)
vi. লোকটি অশিক্ষিত কিন্তু অশিষ্ট নয়। (সরল)
vii. হৈমন্তী কোন কথা বলিল না। (অস্তিবাচক)
viii. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার্থে সকলের কাজ করা উচিত। (অনুজ্ঞাবাচক)