১১ সংলাপ / খুদেগল্প
(ক) বাল্যবিবাহ নিরোধের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে সংলাপ রচনা করো।
অথবা, (খ) নিচে প্রদত্ত উদ্দীপক অনুসারে 'আশায় বসতি' শিরোনামে একটি খুদেগল্প রচনা করো:
বাড়ি বাড়ি ঘুরে কাজ করে বাবুলের মা। বাবুলকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করাব আশা বুকে। হঠাৎ সেদিন,……
ক) উত্তরঃ
শিক্ষার্থী : আস্সালামুআলাইকুম স্যার।
শিক্ষক : ওয়ালাইকুম আস্সালাম। সবাই ভালো আছ তো?
শিক্ষার্থী : জি স্যার, আপনি গত ক্লাসে বলেছিলেন আজকে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে আলাপ করবেন।
শিক্ষক : হ্যাঁ। আজকে আমি তোমাদের সাথে বাল্যবিবাহ নিয়ে কথা বলব। তোমরা কি কেউ জানো বাল্যবিবাহ কী?
শিক্ষার্থী : পরিণত বয়সের আগে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়াকেই বাল্যবিবাহ বলে।
শিক্ষক : খুব সুন্দর। এই বাল্যবিবাহ আমাদের সমাজে এখনও প্রচলিত আছে, যা সমাজে খুব নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
শিক্ষার্থী : কীভাবে স্যার? আমাদের আশপাশের অনেকেরই অনেক কম বয়সে বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। তাহলে আমাদের উচিত তাদেরকে বাঁচানো।
শিক্ষক : অবশ্যই বাঁচানো উচিত। ধরো, কোনো মেয়ে নির্দিষ্ট বয়সের আগে বিয়ে হয়ে গেলে তার ওপর অনেক অপ্রত্যাশিত দায়িত্ব অর্পণ করা হয়, যেগুলোর জন্য সে প্রস্তুত থাকে না। ফলে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। আবার সে দ্রুত মা হয়ে যাওয়ার ফলে নিজের যেমন শারীরিক ক্ষতি হচ্ছে একইভাবে সে অপরিণত শিশু জন্ম দিচ্ছে।
শিক্ষার্থী : জি স্যার। আমাদের পাশের বাড়ির রাবেয়া বেশিরভাগ সময়ই অসুস্থ থাকে। আমি এতদিন পরে বুঝলাম।
শিক্ষক : আর বেশিরভাগ সময়ই এসব মেয়ে গর্ভবতী ও মাতৃত্বকালীন সঠিক পরিচর্যা পায় না। যার ফলে এমন অবস্থা তৈরি হয়।
শিক্ষার্থী : তাহলে এটা থেকে পরিত্রাণের উপায় কী স্যার?
শিক্ষক : সচেতনতা বৃদ্ধি করা, শিক্ষার প্রসার এবং প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
শিক্ষার্থী : জি স্যার। আমরা এখন থেকে আমাদের আশপাশে এমন ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করা হলে তা রোধ করতে সচেষ্ট হব।
শিক্ষক : অবশ্যই। আচ্ছা ঠিক আছে, সবাই ভালো থেকো তাহলে।
শিক্ষার্থী : জি স্যার, আস্সালামুআলাইকুম।
খ) উত্তরঃ
বাড়ি বাড়ি ঘুরে কাজ করে বাবুলের মা। বাবুলকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করার আশা বুকে। হঠাৎ একদিন হনহন করে কোমরে কাপড় গুঁজতে গুঁজতে হেঁটে আসতে দেখা গেল আকলিমা খাতুনকে। দূর থেকে কে যেন মিহি গলায় ডাক দিল তাকে, 'ও বাবুলের মা, কই যাও? খাঁড়াও। খাঁড়াও কইলাম। পাশের বাড়ির হোসেনের মাকে দেখে অনিচ্ছাসত্ত্বেও আকলিমাকে তার হাঁটার গতি কমাতে হলো। আকলিমা উত্তর দেয়, ‘খাঁড়ানের কাম নাই, বাড়ির থন আইছি, পোলাডারে চারডা খাওয়াইয়া আবার বিবি-সাবের বাড়ি যাইবার লাগছি। তোমার কী হইছে? ও মনে পড়ছে, তোমার ট্যাহা! দিমুনে, দিমুনে এই বিষ্যুৎবার দিমুনে। এইবার আর দেরি হইত না।'
কথা কয়টা বলেই আকলিমা আবার হনহন করে হেঁটে চলে যায়। প্রতিদিন ঠিক সকাল ৭টা আর বিকেলের পর তাকে দেখা যায় ঢাকা উদ্যানের বেড়িবাঁধ ধরে হেঁটে আসতে। এ হেঁটে চলা যেন নিরন্তর। জীবন যেমন থেমে থাকে না, এ হেঁটে চলারও যেন শেষ নেই। সেই কবে পদ্মার ভাঙনে সব হারিয়ে ঢাকার এই বস্তিতে এসে উঠেছিল দুই বছরের ছেলে বাবুলকে নিয়ে। তারপর থেকে এই ছুটে চলা। সারাদিন চার-পাঁচটা বাসায় কাজ করলেও এই ম্যাডামের বাসায় তাকে দিনে দুই বেলা হাজিরা দিতে হয়। সারা মাসে যা আয় করে তা দিয়ে ঘর ভাড়া দেওয়ার পর বেশির ভাগটাই চলে যায় বাবুলের পড়াশোনার পেছনে। স্বামী রিকশা চালিয়ে সারাদিনে যা আয় করে, দিন শেষে নেশা করে সেই টাকা নষ্ট করে ফেলে। ফলে তার সংসারে অভাব আর অশান্তি লেগেই আছে। কিন্তু আকলিমার স্বামী সবসময় এমন ছিল না। হাসিখুশি শান্ত স্বভাবের মানুষটা বাপ-দাদার ভিটে হারানোর পর কেমন যেন উদাস হয়ে যায়। ঢাকায় এসে একটা রিকশা জোগাড় করতে পারলেও কেমন যেন হয়ে গেল। এ ঢাকা শহরের বাতাস কেমন জানি আউলা-ঝাউলা। মানুষরে কেমন জানি বদলাইয়া দেয়... এসব সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে আকলিমা সাদা রঙের বিশাল বাড়িটার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
অন্যদিনের মতো বাড়ির সব কাজ করতে করতে আকলিমার মনে হয়, এ বাড়ির সব কিছুই সুন্দর! মানুষগুলো, আসবাবপত্র, এমনকি বাড়ির টাইলস পর্যন্ত ঝকঝক করে। আকলিমা ভাবতে থাকে, 'যদি আমার বাবুলরে আমি লেখাপড়া শিখাইয়া অনেক বড় ডাক্তার বানাইবার পারতাম, তাইলে হয়তো ওর বাড়ির টাইলসও এইরাম ঝকমক করত।' কাজ করতে করতে আনমনা হয়ে যায় আকলিমা। হুঁশ ফেরে বাড়ির দারোয়ানের ডাকে, ‘কেডা জানি বাবুলের মার লগে দেহ্যা করতে আইছে। মনের মধ্যে কেমন জানি হঠাৎ কু-ডাক ডাকতে থাকে আকলিমার। দৌঁড়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে দেখে নিচে দাঁড়িয়ে আছে পাশের বাড়ির আমেনা। কেমন যেন ভয়ংকর, আতঙ্কিত চেহারা। আকলিমা আমেনার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। কথা বলতে যেন ভুলে গেছে। আমেনা বলে ওঠে, 'বুবু, আমার লগে লও বাড়িতে যাই।' আকলিমার কোনো সন্দেহ থাকে না। নিশ্চয়ই খারাপ কোনো খবর। বিবি-সাহেবকে বলে আসার কথাও যেন সে ভুলে যায়। বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে হঠাৎ দেখতে পায় এক দল মানুষের ভিড়। বাবুল দৌঁড়ে এসে মাকে আঁকড়ে ধরে বলে, 'মা, ওরা বাজানরে সাদা কাপড়ে...।' বাবুল কান্নার তোড়ে কথা শেষ করতে পারে না। আকলিমা যেন দুঃস্বপ্ন দেখছে। সব কেমন জানি তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। আকলিমা বাবুলকে বুকের সঙ্গে আঁকড়ে ধরে। চোখ থেকে অঝোর ধারায় পানি ঝরতে থাকে তার। কী সান্তনা দেবে সে তার এই অবোধ শিশুকে। জ্ঞান হারানোর আগে সে আঁকড়ে ধরে তার শেষ সম্বল বাবুলকে ৷ বাবুলকে যে তার মানুষ করতেই হবে।
(ক) জ্ঞানচর্চায় বিজ্ঞানের ভূমিকা দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ তৈরি কর।
অথবা,
(খ) প্রদত্ত উদ্দীপক অনুসরণে 'পানি-দূষণ' বিষয়ে একটি ক্ষুদে গল্প রচনা কর:-
লঞ্চ ভ্রমণের সময় বুড়িগঙ্গা নদীর পানির রং দেখে রাহাত বিস্মিত হয়।…………….
(ক) নিরাপদ সড়ক চাই বিষয়ে দুজনের মধ্যে একটি সংলাপ রচনা কর ।
অথবা,
(খ) "তুমি অধম তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন? উদ্দীপকটি অনুসরণে একটি খুদে গল্প রচনা কর।
(ক) মেট্রোরেল ভ্রমণের আনন্দকে কেন্দ্র করে দুই বন্ধুর সংলাপ তৈরি কর।
অথবা, (খ) 'স্বপ্ন পূরণের আশা' শিরোনামে একটি খুদে গল্প লেখ।
(ক) সাম্প্রতিক 'জঙ্গিবাদ' সমস্যা প্রসঙ্গে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সংলাপ রচনা করো।
অথবা,
(খ) প্রদত্ত উদ্দীপক অনুসরণে একটি খুদেগল্প লেখো:
গ্রীষ্মের ছুটিতে দাদুবাড়ি যায় অনিক। নদীতে ভাসমান নৌকা দেখে মুহূর্তে সে হারিয়ে যায় শৈশবের কোনো এক স্মৃতিতে .....