বাংলা ভাষার শব্দভান্ডার ও শব্দের শ্রেণিবিভাগ

(ক) ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি কাকে বলে? ব্যাকরণিক শব্দ কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ আলোচনা কর।

অথবা,

(খ) নিম্নরেখ যেকোনো পাঁচটি শব্দের ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি নির্দেশ কর:

i) বিপদ কখনও একা আসে না।

ii) বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয়।

iii) হে বন্ধু বিদায়।

iv) আমাদের ছোট গাঁয়ে ছোট ছোট ঘর।

v) বুঝিলাম মেয়েটির রূপ বড়ো আশ্চর্য।

vi) পহেলা বৈশাখ বাঙালির উৎসবের দিন।

vii) সাদা কাপড় পরলেই মন সাদা হয় না।

viii) শাবাশ! দারুণ খেলেছে বাংলাদেশ।

NDCD 23

ক) উত্তরঃ

ব্যাকরণগত অবস্থনের ভিত্তিতে বাংলা ভাষার শব্দসমূহকে যে কয় ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে, তাকেই ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি বলে। ব্যাকরণিক শব্দ আট প্রকার। 

যথা—
ক.বিশেষ্য: যে শব্দ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, জাতি, গোষ্ঠী, সমষ্টি, গুণ বা অবস্থার নাম বোঝায় তাকে বিশেষ্য বলে। 

যেমন—থালা, বাটি, টাকা, ঢাকা, ছাগল, বাঁশ, মাছ, দয়া, মায়া, সততা।
খ. সর্বনাম : বিশেষ্যের পরিবর্তে যে শব্দ ব্যবহৃত হয়, তাকে সর্বনাম বলে। 

যেমন—উর্মি একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। সে এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়েছে। কলেজে তার উপস্থিতি নিয়মিত। তাকে সব শিক্ষক আদর করেন। এখানে সে, তার, তাকে সর্বনাম।
গ. বিশেষণ : যে শব্দ দ্বারা বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়ার দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাপ ইত্যাদি প্রকাশ পায়, তাকে বিশেষণ বলে। 

যেমন— নীল আকাশ, সবুজ বাংলা, প্রথম স্থান, দশ কেজি, শান্ত নদী।
ঘ. ক্রিয়া: যে শব্দ দ্বারা কোনো কিছু করা, হওয়া, ঘটা ইত্যাদি বোঝায় তাকে ক্রিয়া বলে। 

যেমন—অনয় কাঁদছে। শিউলি ফুল তুলছে। বৃষ্টি হবে।
ঙ. ক্রিয়া বিশেষণ: যে শব্দ বাক্যের ক্রিয়াকে বিশেষিত করে, তাকে ক্রিয়া বিশেষণ বলে। 

যেমন— গাড়িটি দ্রুত চলতে শুরু করল। অনিম জোরে হাঁটে। সামিয়া গুনগুনিয়ে গান গাইছে।
চ. আবেগ শব্দ: যে শব্দ বাক্যের অন্য শব্দের সঙ্গে সম্পর্ক না রেখে স্বাধীনভাবে মনের বিশেষ ভাব বা আবেগ প্রকাশ করে, তাকে আবেগ শব্দ বলে। 

যেমন—হায়! এটা তুমি কী করলে! উঃ! কী অবস্থা! বাহ্! কী সুন্দর দৃশ্য।
ছ. যোজক: যে শব্দ একটি বাক্যাংশের সঙ্গে অন্য একটি বাক্যাংশ অথবা বাক্যস্থিত একটি শব্দের সঙ্গে অন্য একটি শব্দের সংযোজন, বিয়োজন বা সংকোচন ঘটায়, তাকে যোজক বলে। 

যেমন— সারা দিন বৃষ্টি হলো তবুও গরম গেল না। তুমি খাবে আর তামান্না পড়বে। ব্যাগটা শক্ত করে ধরো, নইলে পড়ে যাবে।
জ. অনুসর্গ : যে শব্দ কখনো স্বাধীনরূপে, আবার কখনো বা শব্দবিভক্তির ন্যায় ব্যবহৃত হয়ে বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে, তাকে অনুসর্গ বলে। 

যেমন— দিনের পরে রাত আসে। রান্নার জন্য রাঁধুনি ব্যাকুল।

খ) উত্তরঃ

i) বিপদ কখনও একা আসে না।

উত্তর:বিশেষ্য

ii) বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয়।

উত্তরঃ বিশেষণ

iii) হে বন্ধু বিদায়।

উত্তর: আবেগ শব্দ

iv) আমাদের ছোট গাঁয়ে ছোট ছোট ঘর।

উত্তর: বিশেষণ

v) বুঝিলাম মেয়েটির রূপ বড়ো আশ্চর্য।

উত্তরঃ ক্রিয়া

vi) পহেলা বৈশাখ বাঙালির উৎসবের দিন।

উত্তর: তারিখবাচক বিশেষণ

vii) সাদা কাপড় পরলেই মন সাদা হয় না।

উত্তর: বিশেষণ

viii) শাবাশ! দারুণ খেলেছে বাংলাদেশ।

উত্তর: আবেগ

বাংলা ভাষার শব্দভান্ডার ও শব্দের শ্রেণিবিভাগ টপিকের ওপরে পরীক্ষা দাও