১১ সংলাপ / খুদেগল্প
(ক) মাদকাসক্তির কুফল ও এর প্রতিকার বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ রচনা কর।
অথবা,
(খ) 'মানুষ মানুষের জন্য' শিরোনামে একটি খুদে গল্প লেখ।
(ক) উত্তরঃ
মাদকাসক্তির কুফল ও এর প্রতিকার বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপঃ
দীপ্ত : সুপ্ত, তুমি কি খেয়াল করেছ, কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে আমরা প্রতিদিন কত মানুষকে বিড়ি-সিগারেটসহ অন্যান্য মাদক গ্রহণ করতে দেখি?
সুপ্ত : হ্যাঁ, দেখেছি। সারা দেশে শত শত মানুষ বর্তমান সময়ে মাদকাসক্ত। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ-মহিলাসহ শিশু- কিশোররাও ব্যাপকভাবে দিন দিন মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে।
দীপ্ত : মানুষ কেন মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে বলে তুমি মনে কর?
সুপ্ত : প্রথমত, মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতা; বেকারত্ব, হতাশা, বন্ধুবান্ধবের প্ররোচনা ইত্যাদি কারণে মানুষ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। একবার নেশার জগতে ঢুকে পড়লে বের হওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। আন্তর্জাতিক চক্রও মাদকদ্রব্য ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য দূর থেকে কাজ করে।
দীপ্ত : পৃথিবীতে শতাধিক দেশে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কোটি মানুষ মাদকাসক্ত বলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। চিকিৎসকদের মতে বাংলাদেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৫০ কোটির ওপরে, যা পরিবার ও সমাজে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে।
সুপ্ত : মাদকদ্রব্য গ্রহণের ফলে যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে। চুরি, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে। তাছাড়াও অন্যান্য অপরাধমূলক কাজ সমাজে বেড়ে গিয়েছে। সামাজিক সম্পর্কের অবনতি, পারিবারিক বন্ধন শিথিলসহ সামাজিক শৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি মাদকাসক্তির কুফল।
দীপ্ত : যুবসমাজ ধ্বংস হলে একটি দেশের মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। বর্তমানে বাংলাদেশে মাদকাসক্তির, প্রভাবে যুবসমাজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে।
সুপ্ত : দীপ্ত, কীভাবে এই ভয়ংকর অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে বলে তুমি মনে কর।
দীপ্ত : প্রথমে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। মাদকের ভয়াবহ প্রভাবের কথা ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে। মাদকদ্রব্য উৎপাদন, আমদানি, বিক্রয় ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে বিশ্বের সব দেশে আইন করতে হবে এবং পারিবারিক ও সামাজিকভাবে প্রতিরোধ সৃষ্টি করতে হবে।
সুপ্ত : তুমি ঠিক বলেছ। এর পাশাপাশি মাদকদ্রব্যের চোরাকারবারিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারকে কাজ করতে হবে। এতে করে দেশের একটি বিশাল জনগোষ্ঠী হতাশা থেকে রক্ষা পাবে।
দীপ্ত : এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারলে মাদকের ভয়াবহ প্রভাব থেকে আমাদের দেশ কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে।
সুপ্ত : নিশ্চয়ই। আজ অনেক কথা হলো, ভালো থেকো বন্ধু। তোমার প্রতি শুভ কামনা রইল, বিদায়।
(খ) উত্তরঃ
'মানুষ মানুষের জন্য’
মেয়েটি দৌড়াচ্ছিল। ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। ওদিকে মেয়েটির ব্যাগে মোবাইল ফোন বেজেই চলেছে। ফোন ধরছে না, করণ তাকে ট্রেন ধরতে হবে। শেষ পর্যন্ত সে দৌড়ে ট্রেনে উঠল। গেটে দাঁড়ানো লোকটিকে সহায়তার জন্য ধন্যবাদ দিল। টিকিট দেখে সিটে বসে ব্যাগ থেকে মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখল মায়ের ফোন। ফোন মা করেনি। করেছে সুমন। সুমন গত রাতেও ফোন করেছিল। কান্না ভেজা কণ্ঠে বলেছিল, 'আপু মা খুব অসুস্থ, তুমি বাড়িতে আসো।' সুমি শুধু বলেছিল, 'আমি সকালের ট্রেনে আসব, তুই মায়ের খেয়াল রাখিস।' অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া সুমন মায়ের আর কী খেয়াল রাখবে। তবুও বিপদের ভরসা। প্রতিবেশীদের ডাকতে পারবে মাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য। ডাক্তার ডাকতে পারবে, ওষুধ আনতে পারবে। সুমি ফোন করল, ফোনে রিং হচ্ছে না। বারবার কোটে যাচ্ছে। নেটওয়ার্কের সমস্যা হতে পারে, পরে আবার চেষ্টা করবে বলে ফোন রেখে দিল। মায়ের কথা ভাবতে লাগল। বাবার মৃত্যুর পর কত কষ্ট করে মা তাদের বড় করে তুলেছেন। জমিজমাহীন গ্রাম্য চিকিৎসক সিরাজ আলির মৃত্যুর পর সবাই তার মাকে ভিটেমাটি বিক্রি করে বাপের বাড়িতে চলে যেতে বলেছিল। মা যাননি। ছেলে-মেয়ে দুটোকে বুকে নিয়ে স্বামীর ভিটেমাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন। সংসার চালাতে তিনি কত কষ্টই না করেছেন। অন্যের বাড়িতে রান্নার কাজ করেছেন। সেখানে যে খাবার পেয়েছেন তা এনে সন্তানদের খাইয়েছেন। হাত-পাখা বানিয়ে বিক্রি করেছেন। কাঁথা সেলাইয়ের কাজ করেছেন। এভাবে টাকা জমিয়ে সেলাই মেশিন কিনেছেন। সেই মেশিন চালিয়েই তার সংসার তিনি টিকিয়ে রেখেছেন। তার স্বপ্ন সুমি আর সুমনকে মানুষের মতো মানুষ করবেন। মেধাবী ছেলে-মেয়ে দুটির জন্য শামসুন্নাহার পাড়া-প্রতিবেশীদের কাছ থেকে আলাদা সম্মান পান। মেয়েকে মেডিকেলে ভর্তি করানোর সময় অনেকে তাকে সাহায্য করেছেন। সুমির মা সবার ঋণ পরিশোধ করতে চান। এ কারণেই তিনি রাত-দিন পরিশ্রম করে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সুমি ডাক্তার দেখিয়ে ব্যবস্থাপত্র করে মাকে ওষুধ কিনে দিয়ে গেছে। মা নিশ্চয়ই ঠিকমতো ওষুধ খাননি। বেশি রাত জেগে কাজ করেছেন। ভাবতে ভাবতে কখন যে পুরোটা সময় পার হয়ে গেছে বুঝতে পারেনি সে। ট্রেন থেকে নেমে সুমি আবার ফোন করল। ফোনে কয়েকবার চেষ্টা করল। না, রিং হচ্ছে না। ফোন সুইচ অফ দেখাচ্ছে। সুমি অস্থির হয়ে উঠল। স্টেশন থেকে বড়ি খানিকটা দূর। রিকশা নিল সুমি দ্রুত বাড়ি পৌছতে। রিকশা থেকে নেমে কিছুটা পায়ে হাঁটার পথ। একটু এগিয়ে যেতেই তাদের প্রতিবেশী মারুফ চাচাকে দেখে সুমি সালাম দিল। মারুফ চাচা সাইকেল থেকে নেমে গম্ভীর গলায় বলল, তুই এসেছিস মা, যা বাড়ি মা, আমি যাই, সবকিছু নিয়ে আসি। চোখ মুছতে মুছতে সাইকেলে উঠে চলে গেল। সবকিছু নিয়ে আসি বলে তার মারুফ চাচা কী বোঝাল সুমি তা বুঝতে পারল না। সে স্তম্ভিত হয়ে গেল। তার পা আর সামনে চলছে না। কী হয়েছে তার মায়ের? সুমি ঘোরের মধ্যে পড়ে গেল। মসজিদের মিনারের উঁচুতে বাঁধা মাইক থেকে ঘোষণায় সুমির সেই ঘোর কাটতেই তার দুচোখ অশ্রুতে ভরে উঠল, হাত শিথিল হয়ে ব্যাগ পড়ে গেল, জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল সুমি। মাইকে তখনও কথা শোনা যাচ্ছে ... তার নামাজের জানাজা বাদ জোহর ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
(ক)
জ্ঞানচর্চায় বিজ্ঞানের ভূমিকা দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপতৈরি কর।
অথবা,
(খ) প্রদত্ত উদ্দীপক অনুসরণে 'পানি-দূষণ' বিষয়ে একটি ক্ষুদে গল্প রচনা কর:-
লঞ্চ ভ্রমণের সময় বুড়িগঙ্গা নদীর পানির রং দেখে রাহাত বিস্মিত হয়।…………….
(ক) নিরাপদ সড়ক চাই বিষয়ে দুজনের মধ্যে একটি সংলাপ রচনা কর ।
অথবা,
(খ) "তুমি অধম তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন? উদ্দীপকটি অনুসরণে একটি খুদে গল্প রচনা কর।
(ক) একটি ঐতিহাসিক স্থান সম্পর্কে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ রচনা করো।
অথবা,
(খ) গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে বেড়ানো বিষয়ে একটি খুদেগল্প রচনা করো।
(ক) মেট্রোরেল ভ্রমণের আনন্দকে কেন্দ্র করে দুই বন্ধুর সংলাপ তৈরি কর।
অথবা, (খ) 'স্বপ্ন পূরণের আশা' শিরোনামে একটি খুদে গল্প লেখ।