অপরিচিতা
পড়াশোনা শেষ করে সবিতা এখন গ্রামের একটি সরকারি প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। বছর কয়েক আগে শহরের এক ধনী ব্যবসায়ীর ছেলের সাথে তাঁর বিবাহ স্পির হয়। পাত্রপক্ষ বিয়েতে মোটা অঙ্কের যৌতুক দাবি করলে তাঁর আত্মসম্মানে আঘাত লাগে। সবিতা নিজেই যৌতুককে প্রত্যাখ্যান করে বিয়ে না করার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। পিতা- মাতা ও সহকর্মীদের অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি তাঁর চিন্তা-চেতনায় কোনো পরিবর্ত আনেননি। তিনি ছাত্র-ছাত্রীর প্রাণ। মায়ের মতো ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখেন সবাইকে। তিনি বলেন, “দেশকে মাতৃজ্ঞানে সেবা করা, দেশকে ভালোবাসা প্রত্যেকের কর্তব্য।” পরহিতে জীবন উৎসর্গ করাই তাঁর ধর্ম।
ক. অনুপমের বন্ধু হরিশ কোথায় কাজ করে?
খ. এইটে একবার পরখ করিয়া দেখো।"- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের 'সবিতা' ও 'অপরিচিতা' গল্পের 'কল্যাণী' উভয়েই যৌতুকের শিকার ।"- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
ঘ. “সবিতার দেশপ্রেম কল্যাণীর মাতৃআজ্ঞার সাথে একই সূত্রে গাঁথা।"- উক্তিটির যথার্থতা বিচার করো
উত্তরঃ
ক) অনুপমের বন্ধু হরিশ কানপুরে কাজ করে।
খ) অনুপমদের দেওয়া এয়ারিং খাঁটি সোনার কি না তা সেকরাকে দিয়ে পরীক্ষা করানোর পরিপ্রেক্ষিতে শম্ভুনাথ প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন ।‘অপরিচিতা' গল্পে অনুপমের মামা বিয়ের গহনা পরীক্ষা করার জন সেকরা সঙ্গে নিয়ে বিয়েতে আসেন। বিয়ের কাজ শুরুর আগেই তিনি কনেপক্ষের গহনা যাচাই করে নিতে চান। কিন্তু বিষয়টি কনের বাবা শম্ভুনাথের কাছে অপমানের মনে হয়। মূলত তাঁর দেওয়া গহনার চেয়ে বরপক্ষের দেওয়া গহনাই যে বেশি খাদযুক্ত সেটি বোঝানোর জন্যই শম্ভুনাথ এয়ারিং পরীক্ষার জন্য প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেন ।
উত্তরের সারবস্তু: বরপক্ষের দেওয়া এয়ারিংয়ের শুদ্ধতা যাচাই করতেই শম্ভুনাথ প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন।
গ) বরপক্ষের যৌতুকলোভী মানসিকতার কারণেই উদ্দীপকের সবিতা এবং 'অপরিচিতা' গল্পের কল্যাণীকে একই পরিণতি বরণ করতে হয়। ‘অপরিচিতা' গল্পে যৌতুকের নেতিবাচক রূপ পরিলক্ষিত হয়। যেখানে বরের মামার পণলোভী ও যৌতুকপ্রত্যাশী মনোভাবের কারণে কল্যাণীর বিয়ে ভেঙে যায়। কল্যাণীর পিতার দেওয়া গহনা পরীক্ষা করতে তিনি সঙ্গে করে সেকরাকে নিয়ে বিয়ে বাড়িতে যান। যৌতুকলোভী এমন হীন মানসিকতার কারণে কল্যাণীর পিতা মেয়ের বিয়ে ভেঙে দেন।
উদ্দীপকেও যৌতুকের নেতিবাচকতা দেখানো হয়েছে। সেখানে সবিতার বিয়েতে বরপক্ষ বিশাল অঙ্কের যৌতুক দাবি করে। আর এ কারণে সবিতা অপমানিত বোধ করেন। আর আত্মসম্মানের কারণে তিনি নিজেই বিয়ে ভেঙে দেন। এমনকি আর কখনো বিয়ে করবেন না বলেও স্থির করেন। আলোচ্য গল্পের কল্যাণীর ক্ষেত্রেও আমরা এমনটিই দেখি। প্রেক্ষাপট বিচারে বলা যায়, উদ্দীপকের সবিতা ও 'অপরিচিতা' গল্পের কল্যাণী উভয়েই যৌতুকের শিকার।
উত্তরের সারবস্তু: যৌতুককে প্রত্যাখ্যান করে বিয়ে না করার সিদ্ধান্তই উদ্দীপকের সবিতা ও 'অপরিচিতা' গল্পের কল্যাণীকে সাদৃশ্যপূর্ণ করে তুলেছে।
ঘ) ‘অপরিচিতা' গল্পে কল্যাণীর চরিত্রে উন্নত মানসিকতার প্রতিফলন রয়েছে, যা উদ্দীপকের সবিতার বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের মাঝেও লক্ষ করা যায় । 'অপরিচিতা' গল্পের কাহিনি দৃঢ়চেতা ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন কল্যাণী নামক এক নারীকে আশ্রয় করে গড়ে উঠেছে। সকল আয়োজন সম্পন্ন হলেও বিয়ের আসরে বিয়ে ভেঙে যায় তার। এতে সে ভেঙে না পড়ে নিজেকে দেশ ও নারীদের উন্নয়নে নিয়োজিত করে। কল্যাণীর এ পদক্ষেপকে তার উন্নত মানসিকতার প্রকাশ বলা যায়।
উদ্দীপকের সবিতার মাঝে বলিষ্ঠ মানসিকতার প্রতিফলন দেখা যায়। বরপক্ষের যৌতুক দাবির বিষয়টি তাঁর আত্মসম্মানে আঘাত দেয় বলে তিনি নিজের বিয়ে ভেঙে দেন। এমনকি পরবর্তীকালে তিনি বিয়ের চিন্তা বাদ দিয়ে দেশ ও সমাজের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন।
'অপরিচিতা' গল্পের কল্যাণী ও উদ্দীপকের সবিতা উভয়ের মাঝেই আমরা আত্মপ্রত্যয়ী নারী চরিত্রের দেখা পাই। গল্পের কল্যাণী বিয়ে ভাঙার কারণে ভেঙে না পড়ে দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছে। গল্পে তাকে আমরা প্রতিবাদী, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ও দৃঢ়চেতা নারীর প্রতীকে উপস্থাপিত হতে দেখি। উদ্দীপকের সবিতাও আত্মবিশ্বাস ও প্রত্যয়ে ভরপুর। সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধে জাগ্রত হয়ে তিনি শিক্ষকতা করে শিশুদের আপন করে নিতে চান। এমন মানসিকতার পরিচয় আমরা গল্পের কল্যাণীর মাঝেও ফুটে উঠতে দেখি। সার্বিক বিচারে বলা যায়, আলোচ্য মন্তব্যটি যথার্থ।
উত্তরের সারবস্তু: ‘সবিতার দেশপ্রেম কল্যাণীর মাতৃআজ্ঞার সাথে একই সূত্রে গাঁথা।'- উক্তিটি যথার্থ ।
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
No related questions found