বাংলাদেশ বিষয়াবলি
সংবিধান বলতে কী বুঝায়? বাংলাদেশ সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে কী কী পরিবর্তন সাধিত হয়েছিল তা আলোচনা করুন।
সংবিধান:
সংবিধান হলো একটি সর্বোচ্চ আইন যা কোনো রাষ্ট্রের শাসন ব্যবস্থা, সরকারের কাঠামো, ক্ষমতার ভারসাম্য, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও কর্তব্য নির্ধারণ করে। এটি রাষ্ট্রের সকল আইনের ভিত্তি এবং এর নীতি-নৈতিকতা সকল আইনের উপরে প্রাধান্য পায়।
বাংলাদেশ সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনী:
১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশের সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়।
৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে প্রধান পরিবর্তনগুলি হল:
শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তন: সংসদীয় শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি: রাষ্ট্রপতিকে সর্বোচ্চ নির্বাহী কর্তৃপদে পরিণত করা হয় এবং তাকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, আইন প্রণয়ন ও বাতিল করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়।
একদলীয় শাসন প্রবর্তন: বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) দেশের একমাত্র বৈধ রাজনৈতিক দল হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
মৌলিক অধিকার সীমাবদ্ধ: জরুরি অবস্থায় মৌলিক অধিকার স্থগিত করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতিকে প্রদান করা হয়।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ: বিচার বিভাগের নিয়োগ ও বরখাস্তের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতিকে প্রদান করা হয়।
৪র্থ সংশোধনীর প্রভাব:
গণতন্ত্রের পিছিয়ে যাওয়া: ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
মানবাধিকার লঙ্ঘন: জরুরি অবস্থার আইনে মৌলিক অধিকার স্থগিত থাকায় দেশে ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়।
রাজনৈতিক অস্থিরতা: ৪র্থ সংশোধনীর বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও আন্দোলন শুরু হয় যা রাজনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি করে।
উপসংহার:
বাংলাদেশের সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনী ছিল দেশের ইতিহাসে একটি বিতর্কিত ঘটনা। এই সংশোধনীর মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় এবং দেশে ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়।
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই