চাষার দুক্ষু
'৫০ বছর পূর্বের চাষার অবস্থা কী ভালো ছিল?'- প্রাবন্ধিকের এ কথার অর্থ কী?
•’৫০ বছর পূর্বের চাষার অবস্থা কী ভালো ছিল?’ এর মাধ্যমে তিনি একটি গভীর সামাজিক অবস্থার প্রতিফলন ঘটাচ্ছেন। এখানে অবস্থা ভালো ছিল না–এটা বোঝানো হচ্ছে যে, বাংলার চাষারা ৫০ বছর আগে, এবং সম্ভবত আরও অনেক আগে থেকেই, সারা জীবনে অর্থনৈতিকভাবে সমস্যায় ছিলেন।চাষা বা কৃষক সমাজে, বিশেষ করে বাংলার ইতিহাসে, সাধারণত তাদের জীবনযাত্রা চরম দারিদ্র্য, অত্যধিক পরিশ্রম, কম পারিশ্রমিক এবং অর্থনৈতিক শোষণের মধ্যে কাটত। এই সমাজের অনেকেই ঋণের বোঝায়, অভাব-অনটন এবং মৌলিক সুবিধার অভাবে জীবন যাপন করতেন।
আব্দাল মিয়া একজন কুমোর। সাত পুরুষ ধরে তার পরিবারের সবাই এই পেশায় জড়িত। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মাটির তৈজসপত্রের চাহিদা কমে যাওয়ায় তার আর্থিক অবস্থা আর আগের মতো নেই। তবে সে ভেঙে পড়েনি। পরিবারের সকলের সহযোগিতা ও কর্মমুখী শিক্ষা গ্রহণ করে অন্য পেশায় নিয়োজিত হয়ে সে অনেকটা আত্মনির্ভরশীল। পাশাপাশি সে সাত পুরুষের পেশাও ছাড়েনি। সময় পেলেই সে মাটির শৌখিন জিনিসপত্র তৈরি করে বিক্রি করে।
আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম।
গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু-মুসলমান
মিলিয়া বাউলা গান ঘাটুগান গাইতাম।
বর্ষা যখন হইত গাজির গাইন আইত
রঙ্গে ঢঙ্গে গাইত আনন্দ পাইতাম
বাউলা গান ঘাটুগান আনন্দের তুফান
গাইয়া সারিগান নাও দৌড়াইতাম।"- এই কবিতাংশে কৃষকদের এত আনন্দের
কারণ তাদের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা।
ফরিদপুর জেলার ঘরে ঘরে তৈরি হচ্ছে নকশিকাঁথা। কাঁথা সেলাই করে অনেকেই সচ্ছলতার মুখ দেখেছে। নারীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে স্ব-উদ্যোগে নকশিকাঁথার দোকান পরিচালনা করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। শহরের অলিগলিতে আজ. চোখে পড়ে অসংখ্য হস্তশিল্পের দোকান। দোকানের পণ্যগুলো দেশের বাজার ছাড়িয়ে বিদেশের বাজারেও স্থান করে নিচ্ছে। তাই এখন এ জেলার স্লোগান হচ্ছে।
"ফরিদপুরের নকশিকাঁথা, বাংলাদেশের স্বর্বগাঁথা”।
আব্দুল করিম আমলাগাছী গ্রামের এক দরিদ্র কৃষক। দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে সে মাঠে ফসল ফলায়। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলালেও সংসার ঠিকমতো চালাতে পারে না সে। পরিবারের সকলের চাহিদা মেটানো তার পক্ষে সম্ভব হয় না। এত পরিশ্রম করেও নুন আনতে পানতা ফুরানোর মতো অবস্থা তার।