৮.দিনলিপি/প্রতিবেদন-১০
(ক) একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাতফেরিতে যাওয়ার বর্ণনা করে একটি দিনলিপি লেখ।
অথবা, (খ) এডিস মশার উপদ্রব নিবারণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চেয়ারম্যান বরাবর একটি ভাষণ লিখ
ক) উত্তরঃ
একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যাওয়ার অভিজ্ঞতা
ঢাকার জন্মেছি, বড় হচ্ছি এখানেই। কলেজে পড়ছি। একুশে ফেব্রুয়ারিতে স্কুলে কলেজের শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছি। অথচ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার কেমন তা আজও দেখা হয়নি। ব্যাপারটা সাংঘাতিক বেমানান ও লজ্জার। নিজেকে নিজের কাছে অপরাধী মনে হচ্ছে। আমার বাবা মাও কাছে থেকে দেখেননি শহীদ মিনার। সুতারাং স্থির হলো, এবারের ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনার যাবো আমরা। মধ্যরাতের আগেই রওয়ানা হলাম। যখন কাছাকাছি পৌঁছালাম, তখন শুনলাম মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভাষাশহীদদের উদ্দ্যেশে পুষ্পস্তবক অর্পণ করছেন। প্রভাতফেরির মিছিলের বাইরেও অনেক লোক দাঁড়িয়ে আছে। মনে হয় দলীয় উধর্বতন নেতৃবৃন্দ। সামনের রাস্তাগুলোতে সুদৃশ্য আলপনা আঁকা। এরপর রাজনৈতিক দল, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার নেতৃবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। মাইকে বাজছে-
'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি /আমি কি ভুলিতে পারি।’
আমরা উদীচীর ব্যানারে এসেছি। শহীদ মিনারের মূল স্তম্ভের পেছনে লাল বৃত্তে আলো পড়ে চমৎকার দেখাচ্ছে। নিচে বেশ কিছুটা প্রশস্ত জায়গা। এরপর রক্ত লাল সোপান ধাপে ধাপে উঠে গেছে মূল বেদি পর্যন্ত। মিনার অঙ্গনে বিশাল আলপনা। সোপানের নিচের ধাপগুলোতেই ফুল রাখা হচ্ছে। এবার আমাদের পালা। স্তবক বা ফুল বেদিতে শ্রদ্ধার সঙ্গে রেখে বাম দিক দিয়ে বেরিয়ে যেতে হচ্ছে। এখানেই ভিড়। মাঝে মাঝে সামান্য ঠেলাঠেলি হচ্ছে। কিন্তু পুলিশ আর সেচ্ছাসেবকরা খুব সতর্ক। মা বাবা আর আমি প্রায় একসঙ্গে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে একটু দাঁড়ালাম। তারপর ধীরে ধীরে বেরিয়ে এলাম। মাইকে বাজছে দেশাত্মবোধক গান, ফেব্রুয়ারির গান, ভাষার গান। ধারাবর্ণনার ফাঁকে ফাঁকে উপস্থাপক একুশে ফেব্রুয়ারির তাৎপর্য তুলে ধরছেন। তাতে একুশের ভাবগাম্ভীর্য সঞ্চারিত হচ্ছে প্রাণে প্রাণে। দেশি-বিদেশি বাংলা ভাষার অনুরাগী মানুষের স্রোত আসছে যাচ্ছে সুশৃঙ্খল পরিবেশ। খুব ভালো লাগল, নিজেকে ধন্য মনে হলো।
খ) উত্তরঃ
শ্রদ্ধেয় সভাপতি, সম্মানিত অতিথিবৃন্দ ও সমবেত শ্রোতৃমণ্ডলী, আজ আমরা ডেঙ্গু আতঙ্কে আতঙ্কিত, এডিস মশার ভয়ে ভীত। কিন্তু আমরা যদি একটু সচেতন হই তাহলে আমাদের এমন অবস্থা থাকবে না।
প্রিয় সুধী, আপনারা বোধ হয় জানেন ডেঙ্গুজ্বরের ভালো কোনো চিকিৎসা নেই, এ ভাইরাসের তেমন কোনো প্রতিষেধক টিকা নেই, আছে শুধু রোগীর লক্ষণ অনুসারে চিকিৎসা করা এবং রক্তের প্লাটিলেট কমে গেলে প্লাটিলেট দেওয়া। এ চিকিৎসা ব্যয়বহুল। ডেঙ্গুজ্বরের একমাত্র কারণ এডিস মশা, এ এডিস মশার বিস্তার রোধ করতে পারলে ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধ করা সম্ভব। এডিস মশাকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ ও দমন করা যায় সে সম্পর্কে আমি কিছু পরামর্শ তুলে ধরতে চাই।
১. এডিস মশা অন্যান্য মশার চেয়ে আকারে একটু বড় হয় এবং এদের শরীরে ডোরাকাটা দাগ পরিলক্ষিত হয়। এ এডিস মশাকে শনাক্ত করে তার বিস্তার রোধ করতে হবে।
২. এডিস মশার বংশবিস্তার অন্যান্য মশার চেয়ে একটু ব্যতিক্রম। এ মশা পরিষ্কার বদ্ধ পানিতে ডিম পাড়ে। ড্রেন বা নর্দমার পানিতে এরা ডিম পাড়ে না। সাধারণত বাড়ির আশেপাশে ফুলের টব, ডাবের খোসা, ভাঙা পাত্রে, পুরাতন টায়ার-টিউবের জমে থাকা পানিতে বা দুধ বা আইসক্রিমের কৌটায়, এসি বা ফ্রিজের নিচে জমে থাকা পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে। এসব পাত্রে বৃষ্টির পানি জমা হয় বলে পানি পরিষ্কার থাকে।
৩. এডিস মশার আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য এসব স্থানে যাতে ডিম পেড়ে বংশবিস্তার না করতে পারে সেদিকে সর্বাগ্রে খেয়াল রাখতে হবে। এসব স্থানে যেন পানি না জমতে পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
৪. বাড়িঘরের আশপাশের ঝোপ-ঝাড়, জঙ্গল, ডোবার কচুরিপানা পরিষ্কার করে রেখে সেখানে মাঝে মাঝে ওষুধ ছিটাতে হবে যেন মশা ডিম পেড়ে বাচ্চা ফোটাতে না পারে।
৫ . এডিস মশা সকালে এবং সন্ধ্যার সময় খাদ্যান্বেষণে বের হয়। তাই এ সময় যেন মশায় কামড়াতে না পারে সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
৬. ডেঙ্গু রোগীকে মশারির মধ্যে রেখে চিকিৎসা করাতে হবে। কারণ ডেঙ্গু ভাইরাস রক্তবাহিত রোগ। মশার মাধ্যমে এ রোগ একজন থেকে অন্যজনে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
৭. ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধের জন্য মশক নিধনের কার্যাবলি হাতে নিতে হবে।
৮. ডেঙ্গু ও এডিস মশা সম্পর্কে সকলকে ধারণা দিতে হবে এবং সকলেই যদি একযোগে এগিয়ে আসি তাহলে ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধ সম্ভব। এজন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন আমাদের সচেতনতা। এতক্ষণ ধরে আমার বক্তব্য শোনার জন্য আপনাদেরকে অনেক ধন্যবাদ। সুস্থ থাকুন, সুন্দর থাকুন, এই প্রত্যাশায় শেষ করছি। খোদা হাফেজ।
Ai এর মাধ্যমে
১০ লক্ষ+ প্রশ্ন ডাটাবেজ
প্র্যাকটিস এর মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে ফেলো
উত্তর দিবে তোমার বই থেকে ও তোমার মত করে।
সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের অবস্থান যাচাই
(ক) তোমার কলেজে অনুষ্ঠিত মহান বিজয় দিবস উদ্যাপনের একটি দিনলিপি রচনা কর।
অথবা,
(খ) তোমার কলেজে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
(ক) চা বাগান দেখার অনুভূতি ব্যক্ত করে দিনলিপি লেখ।
অথবা,
(খ) তোমার কলেজে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন সম্পর্কে-প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে একটি প্রতিবেদন পেশ কর।
(ক) 'জাতীয় গ্রন্থমেলায়' কাটানো একটি দিন সম্পর্কে একটি দিনলিপি লেখ।
অথবা,
(খ) 'যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় রোধে করণীয়'- এই সম্পর্কে তোমার মতামত জানিয়ে একটি সংবাদ প্রতিবেদন তৈরি কর।
(ক) তোমার কলেজে মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন বিষয়ে একটি দিনলিপি রচনা কর।
অথবা,
(খ) 'ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।