চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। এটি দেশের প্রযুক্তি ও প্রকৌশল শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দেশের দক্ষ প্রকৌশলী তৈরিতে চুয়েটের অবদান অনস্বীকার্য।
আজকে চুয়েটের ইতিহাস, অনুষদ ও বিভাগ, ভর্তি প্রক্রিয়া, ক্যাম্পাস জীবন, গবেষণা, সুযোগ-সুবিধা, চাকরির সম্ভাবনা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (CEC) নামে যাত্রা শুরু করে। ১৯৮৬ সালে এটি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর অধিভুক্ত হয় এবং ২০০৩ সালে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে "চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়" (চুয়েট) নামকরণ করা হয়। বর্তমানে এটি দেশের অন্যতম স্বনামধন্য প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
অবস্থান: রাউজান, চট্টগ্রাম (চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে)
ক্যাম্পাস:
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা সবুজ ক্যাম্পাস
১৭১ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত
আধুনিক ক্লাসরুম, গবেষণাগার, ছাত্রাবাস, খেলার মাঠ এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সুবিধা
চুয়েট চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে রাউজান উপজেলায় অবস্থিত। ক্যাম্পাসটি প্রায় ১৭১ একর জমির উপর বিস্তৃত, যা সবুজে ঘেরা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। এটি পাহাড়ের কোলে অবস্থিত হওয়ায় চট্টগ্রামের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় এখানকার পরিবেশ অনেক বেশি নির্মল ও মনোমুগ্ধকর।
চুয়েট ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনগুলোর স্থাপত্য শৈলী অত্যন্ত আধুনিক এবং প্রযুক্তিবান্ধব।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন (EEE Building), কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) ভবন ইত্যাদি অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন।
লাইব্রেরি বিল্ডিং: চুয়েটের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বহুতলবিশিষ্ট ও ডিজিটাল সুবিধাসম্পন্ন, যেখানে শিক্ষার্থীরা বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণা সামগ্রী ও বই পড়ার সুযোগ পান।
একাডেমিক ভবনগুলোর ডিজাইন আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর অনুকরণে তৈরি, যা চুয়েট ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
চুয়েটের প্রকৃতিই একে অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে আলাদা করে তুলেছে। ক্যাম্পাসের চারপাশে সুবিশাল গাছপালা, পাহাড় ও খোলা প্রান্তর রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের প্রশান্তি দেয়।
পাহাড় ও সবুজ অরণ্য: ক্যাম্পাসের আশেপাশে রয়েছে ছোট-বড় পাহাড়, যা সারা বছর সবুজে ঢাকা থাকে। সকালে ও বিকেলে এই সবুজ প্রান্তরে হাঁটতে বের হওয়া শিক্ষার্থীদের কাছে দারুণ প্রিয়।
প্রশস্ত রাস্তা ও খোলা মাঠ: চুয়েটের প্রতিটি রাস্তা বড় ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। গাছের সারি বেষ্টিত পথগুলো ক্যাম্পাসকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে।
চুয়েট ক্যাম্পাসের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলো এখানকার লেক ও জলাধার।
হ্রদ (Lake-1, Lake-2): ক্যাম্পাসের মাঝখানে রয়েছে দু’টি বড় লেক, যা শিক্ষার্থীদের মনোরম পরিবেশ উপহার দেয়। সকালে ও বিকেলে এখানে শিক্ষার্থীরা হাঁটাহাঁটি ও আড্ডা জমায়।
লেকের ধারে বসার ব্যবস্থা: ক্যাম্পাসের লেকগুলোর পাশে বসার বেঞ্চ ও ছাউনির ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে বা অবসর কাটাতে পারেন।
রাতের সৌন্দর্য: সন্ধ্যার সময় লেকের আশপাশের বাতি জ্বলে ওঠে, যা এক অপূর্ব দৃশ্যের সৃষ্টি করে।
চুয়েটের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বিশাল খেলার মাঠ ও বিনোদনমূলক স্থাপনা।
কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ: ফুটবল, ক্রিকেট, অ্যাথলেটিকস, বাস্কেটবল, ব্যাডমিন্টন ও অন্যান্য খেলাধুলার জন্য বড় মাঠ রয়েছে।
ইনডোর গেমস কমপ্লেক্স: টেবিল টেনিস, দাবা, ক্যারমসহ বিভিন্ন ইনডোর গেমসের জন্য আলাদা কমপ্লেক্স রয়েছে।
ক্যাম্পাস জিমনেসিয়াম: শিক্ষার্থীদের ফিটনেস বজায় রাখার জন্য আধুনিক জিমনেসিয়াম রয়েছে।
চুয়েটের শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন আধুনিক ছাত্রাবাস রয়েছে।
ছেলেদের জন্য: বঙ্গবন্ধু হল, শহীদ মহিউদ্দিন হল, শহীদ মোহাম্মদ শাহ হল, ড. কুদরত-ই-খুদা হল।
মেয়েদের জন্য: শেখ হাসিনা হল, সায়মা হল।
প্রতিটি হলের সামনে উন্মুক্ত খেলার মাঠ ও সবুজ বাগান রয়েছে, যা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
ক্যাম্পাসে একটি বড় ও দৃষ্টিনন্দন মসজিদ রয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা নামাজ পড়েন। এছাড়াও অন্যান্য ধর্মের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রার্থনার ব্যবস্থা রয়েছে।
চুয়েট ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য রাতের বেলায় আরও বেশি ফুটে ওঠে।
একাডেমিক ভবন, ছাত্রাবাস ও লেকের আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় রঙিন লাইটিং করা হয়েছে, যা সন্ধ্যা নামার পর চুয়েটকে এক স্বপ্নময় পরিবেশে পরিণত করে।
লেকের পানিতে আলোর প্রতিফলন চমৎকার দৃশ্য সৃষ্টি করে।
চুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম মূলত ৪টি অনুষদের অধীনে পরিচালিত হয়, যেখানে বিভিন্ন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভাগ রয়েছে।
ক) প্রকৌশল অনুষদ (Faculty of Engineering) | ১. সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (CE) |
খ) স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদ (Faculty of Architecture & Planning) | ১. আর্কিটেকচার (ARCH) |
গ) বিজ্ঞান ও মানবিক অনুষদ (Faculty of Science & Humanities) | ১. গণিত (Mathematics) |
ঘ) রোবটিক্স ও মেকাট্রনিক্স অনুষদ | ১. রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (RME) |
সর্বশেষ আপডেট : January ৩, ২০২৫
চট্রগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়- চুয়েট ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০২৪-২৫ প্রকাশিত হয়েছে আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত আছে । চলো দেখে নেয়া যাক “চট্রগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি 2024-25 এর বিস্তারিত তথ্যাবলী ।
আবেদন শুরুঃ আবেদন শেষঃ আবেদন প্রদানের শেষ তারিখ: পরীক্ষার যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশঃ প্রবেশপত্র ডাউনলোড শুরু: ভর্তি পরীক্ষার তারিখ : আবেদন লিংকঃ | ৫ জানুয়ারী ২০২৫ ১৮ জানুয়ারী ২০২৫ ১৯ জানুয়ারী ২০২৫ ২৩ জানুয়ারী ২০২৫ ২৭ জানুয়ারী ২০২৫ ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |
চুয়েটে ভর্তি হওয়ার জন্য মেধাভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়, যা সাধারণত এমসিকিউ (MCQ) ও লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।
১. এসএসসি ও এইচএসসি জিপিএ:
প্রার্থীকে ২০২৪ইং সালে উচ্চ মাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় পাশ হতে হবে অথবা ২০২১ ইং সালের সেপ্টেম্বরের পরে ‘A’ লেভেল সার্টিফিকেট প্রাপ্ত হতে হবে।
বাংলাদেশের যে কোন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বাের্ড / মাদ্রাসা শিক্ষা বাের্ড / কারিগরি শিক্ষা বাের্ড থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীকে জিপিএ ৪.০০ পেয়ে পাশ হতে হবে অথবা সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে সমতুল গ্রেড পেয়ে পাশ হতে হবে।
বাংলাদেশের যে কোন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বাের্ড / মাদ্রাসা শিক্ষা বাের্ড / কারিগরি শিক্ষা বাের্ড থেকে উচ্চ মাধ্যমিক / আলীম /সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীকে গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিষয়ের প্রত্যেকটিতে আলাদাভাবে কমপক্ষে গ্রেড পয়েন্ট ৪.০০ ও ইংরেজি বিষয়ে কমপক্ষে গ্রেড পয়েন্ট ৩.৫০ পেয়ে পাশ করতে হবে এবং গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন ও ইংরেজীতে মােট গ্রেড পয়েন্ট কমপক্ষে ১৭.৫০ পেতে হবে। ইংরেজী মাধ্যম / বিদেশী শিক্ষা বাের্ড থেকে সমমানের পরীক্ষায় উক্ত বিষয়সমূহে কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড পেয়ে পাশ হতে হবে।
প্রার্থী GCE “O” লেভেল এবং ‘A’ লেভেল পাশ করে থাকলে তার ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য GCE “O” লেভেল পরীক্ষায় গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন ও ইংরেজীসহ কমপক্ষে পাঁচটি বিষয়ে কমপক্ষে B গ্রেড পেয়ে পাশ হতে হবে। GCE “A’ লেভেল পরীক্ষায় পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন ও গণিতে পৃথক পৃথকভাবে কমপক্ষে B গ্রেড পেয়ে পাশ হতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষার বিষয়:
|
আবেদন প্রক্রিয়া:
ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন ফরম কেবলমাত্র অনলাইনে পূরণ করা যাবে এবং আবেদন ফি রকেট এর মাধ্যমে প্রদান করতে হবে। কোন ছাপানাে ফরম বিক্রয় করা হবে না।
সকল আবেদনকারীর মধ্য থেকে HSC তে গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন এবং ইংরেজীতে প্রাপ্ত মােট গ্রেড পয়েন্টের ভিত্তিতে প্রথম ২০০০০ (বিশ হাজার) জনকে ভর্তি পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত ঘােষণা করা হবে।
তবে, ২০০০০ তম স্থানে একাধিক প্রার্থী থাকলে ক্রমানুসারে গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন এবং ইংরেজি বিষয়ের HSC তে প্রাপ্ত গ্রেড পয়েন্টের ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষার জন্য যােগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। সেক্ষেত্রে HSC তে গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন এবং ইংরেজিতে একই গ্রেড পয়েন্ট প্রাপ্ত ২০০০০ তম স্থানের সকল প্রার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযােগ পাবে।
আবেদন ফি | টাকা |
গ্রুপ – ক (ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগসমূহ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ) | ১,২০০/- টাকা (সার্ভিস চার্জ সহ) |
গ্রুপ- খ (ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগসমূহ, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এবং স্থাপত্য বিভাগ | ১,৪০০/- টাকা (সার্ভিস চার্জ সহ)। |
ক গ্রুপঃ | খ গ্রুপঃ(আর্কিটেকচার সহ) |
১. গবেষণা সুবিধা
| ২. আবাসন সুবিধা
|
৩. লাইব্রেরি ও ডিজিটাল রিসোর্স
| ৪. ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম
|
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ভর্তির জন্য আবেদন প্রক্রিয়াটি অনলাইনে সম্পন্ন করতে হয়। নিচে ধাপে ধাপে বিস্তারিত আবেদন পদ্ধতি ও ফি পরিশোধের নিয়ম বর্ণনা করা হলো।
১. প্রথমে চুয়েটের অফিসিয়াল ভর্তি পোর্টাল ভিজিট করো:
www.cuet.ac.bd/admission লিংকে প্রবেশ করো।
একাডেমিক তথ্য পূরণ করো:
SSC ও HSC পরীক্ষার বোর্ড, পাসের বছর, রোল নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রদান করো।
এরপর Next বাটনে ক্লিক করো।
ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ করো:
মোবাইল নম্বর, ইমেইল, ঠিকানা এবং কোটার তথ্য (যদি থাকে) প্রদান করো।
এরপর Next বাটনে ক্লিক করো।
ছবি ও স্বাক্ষর আপলোড করো:
নির্ধারিত ফরম্যাটে প্রার্থী নিজের ছবি ও স্বাক্ষর আপলোড করো।
এরপর Submit & Print বাটনে ক্লিক করো।
আবেদন ফরম ডাউনলোড করো:
আবেদন সফলভাবে জমা দেওয়ার পর Download Application Form অপশনে ক্লিক করে ফরমটি সেভ কর।
চুয়েটের আবেদন ফি ডাচ-বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং (Rocket) এর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়। নিচে ধাপে ধাপে ফি পরিশোধের পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো:
ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং (Rocket) থেকে *৩২২# ডায়াল করো।
১ (Payment) অপশন নির্বাচন করো।
চুয়েটের নির্ধারিত বিলার আইডি লিখ।
আপনার আবেদন ফরমে প্রদত্ত Application ID নম্বর টাইপ করো।
নির্ধারিত ফি টাইপ করো।
Rocket PIN দাও।
পেমেন্ট সফল হলে কনফার্মেশন মেসেজ পাবে।
Transaction ID সেভ করো , কারণ এটি পরবর্তীতে প্রয়োজন হবে।
যদি কোনো সমস্যা হয়, তাহলে চুয়েটের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করো।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা দেশ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অসংখ্য কর্মসংস্থানে নিয়োজিত হয়। প্রকৌশল শিক্ষার উচ্চমান, আধুনিক গবেষণাগার, প্রাকটিক্যাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট, এবং শিক্ষকদের দিকনির্দেশনার ফলে চুয়েটের গ্র্যাজুয়েটরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের সাথে কাজ করছেন।
চুয়েটের গ্র্যাজুয়েটরা সরকারি এবং বেসরকারি উভয় সেক্টরেই উচ্চমানের চাকরির সুযোগ পান।
চুয়েট থেকে স্নাতক শেষ করার পর অনেক শিক্ষার্থী সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ পান।
গণপূর্ত বিভাগ (PWD) – সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং গ্র্যাজুয়েটদের জন্য
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (BPDB) – ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য
ওয়াসা (WASA) – পানি ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ প্রকৌশল সংশ্লিষ্ট
পেট্রোবাংলা, বিসিএস ও অন্যান্য সংস্থা – পেট্রোলিয়াম, খনিজ ও গ্যাস প্রকৌশল সংশ্লিষ্ট
বিসিএস (বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস) – প্রশাসনিক ক্যারিয়ারে যেতে চাইলে বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল ও দেশীয় কোম্পানিগুলোতে চুয়েটের গ্র্যাজুয়েটদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান:
Siemens, Samsung, Huawei, Ericsson, Chevron, Shell, Schlumberger ইত্যাদি কোম্পানিতে চুয়েট গ্র্যাজুয়েটরা কাজ করছেন।
আইটি ও সফটওয়্যার কোম্পানি:
Google, Microsoft, Amazon, Meta (Facebook), Oracle, IBM-এ চুয়েটের CSE বিভাগ থেকে পাস করা অনেক গ্র্যাজুয়েট সফলভাবে কাজ করছেন।
দেশীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে TigerIT, Reve Systems, BJIT, DataSoft-এ প্রচুর চুয়েটিয়ান কাজ করছেন।
কনস্ট্রাকশন ও রিয়েল এস্টেট:
Berger Paints, Bashundhara Group, Walton, Sheltech, Shanta Holdings, Abdul Monem Limited (AML), Mir Group-এ সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করছেন।
চুয়েটের শিক্ষার্থীরা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেয়ে থাকেন।
উচ্চশিক্ষার জন্য জনপ্রিয় দেশসমূহ:
যুক্তরাষ্ট্র (USA) – MIT, Stanford, Harvard, UC Berkeley, Texas A&M, Purdue
কানাডা – University of Toronto, McGill, UBC
জার্মানি – TU Munich, RWTH Aachen
অস্ট্রেলিয়া – Monash, University of Melbourne, UNSW
সিঙ্গাপুর – NUS, NTU
বিভিন্ন স্কলারশিপ যেমন Fulbright, Chevening, Erasmus Mundus, DAAD, Commonwealth স্কলারশিপের মাধ্যমে চুয়েটের শিক্ষার্থীরা সহজেই উচ্চশিক্ষার সুযোগ পান।
বর্তমানে অনেক চুয়েট গ্র্যাজুয়েট নিজস্ব স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠা করছেন এবং সফল হচ্ছেন।
সফটওয়্যার ও আইটি খাতে স্টার্টআপ:
বিভিন্ন সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি গড়ে তুলছেন চুয়েটিয়ানরা।
AI, Machine Learning, Data Science, এবং Web Development সেক্টরে অনেক উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে।
কনস্ট্রাকশন ও ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম:
অনেক সিভিল ইঞ্জিনিয়ার নিজস্ব কনস্ট্রাকশন ফার্ম চালু করছেন।
ই-কমার্স ও ডিজিটাল মার্কেটিং:
উদ্যোক্তারা ডিজিটাল মার্কেটিং, ফ্রিল্যান্সিং ও ই-কমার্স ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছেন।
চুয়েটের ইনোভেশন হাব ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিজনেস ইনকিউবেটর স্টার্টআপদের সহায়তা করে।
চুয়েট আগামী বছরগুলোতে নিজেদের গবেষণা, একাডেমিক কার্যক্রম, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং ক্যাম্পাস সুবিধা আরও উন্নত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
১. একাডেমিক ও গবেষণা উন্নয়ন পরিকল্পনা
| ২. ক্যাম্পাস উন্নয়ন
|
৩. শিল্প প্রতিষ্ঠান ও একাডেমিক সংযোগ বৃদ্ধি
| ৪. আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সহযোগিতা
|
একটা কথা মনে রেখো সবাই। স্বপ্ন কখনোই কিনতে পাওয়া যায় না। অনেক পাবলিকেশন, কোচিং এর একটা সাজেশন তোমার কাছে অনেক ভালো লাগবে, অস্থির লাগবে। কিন্তু সেটা তোমার স্বপ্ন কিনে দিবে না। মূল কাজ তোমারই!!
সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই উচিত ভর্তি পরীক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া। এজন্য বিগত বছরের চুয়েট প্রশ্নব্যাংক এর উপর সর্বোচ্চ প্র্যাক্টিস থাকা জরুরি। এছাড়াও রুয়েট প্রশ্নব্যাংক, কুয়েট প্রশ্নব্যাংক, এডমিশন প্রশ্নব্যাংক দেখে রাখলে অনেক সময় উপকারে আসে যা পরবর্তী পরিক্ষাতেও কাজে লাগে। এছাড়াও আইউটি প্রশ্নব্যাংক, বুটেক্স প্রশ্নব্যাংক, এমআইএসটি প্রশ্নব্যাংক দেখলেও অনেক সময় কাজে লাগে।
আরেকটা জরুরি কথা, চুয়েটের জন্য প্রস্তুতি অন্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রস্তুতিতেও কাজে লাগে। তোমাদের জন্য শুভকামনা।
চুয়েটের শিক্ষার্থীরা সরকারি ও বেসরকারি চাকরি, উচ্চশিক্ষা, এবং উদ্যোক্তা খাতে বিশাল সম্ভাবনা রাখে। সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে গুগল, মাইক্রোসফট, অ্যামাজনের মতো আন্তর্জাতিক কোম্পানিতে চুয়েটের গ্র্যাজুয়েটরা সফলভাবে কাজ করছেন।চুয়েট ভবিষ্যতে আরও উন্নত গবেষণা সুবিধা, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া পার্টনারশিপ, এবং স্টার্টআপ উদ্যোগগুলোর জন্য সহায়তা বৃদ্ধি করছে। তাই যারা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের জন্য চুয়েট হতে পারে সেরা পছন্দ।