গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সার্কুলার ২০২৫ অনুযায়ী প্রতিবছর মাত্র ৫৫ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিটের জন্য লক্ষাধিক শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতা করছে (২০২৪ সাল অনুযায়ী ২ টি নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সহ মোট ৫৫টি Public University রয়েছে সূত্র- UGC) এজন্য ২০২০ এর আগ অবধি শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক দের দেশের সব প্রান্তে ছুটোছুটি করে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হতো, যা ছিলো চরম ভোগান্তির বিষয়। এছাড়া বিভিন্ন ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষা একই দিনে হওয়ার ফলে সঠিক দিনে ও সময়ে কেন্দ্রে উপস্থিতিও ছিলো অনিশ্চয়তায় ভরপুর। এজন্য ২০২০ সালে করোনা মহামারীর সময়ে, ইউজিসি এর উদ্যোগে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয় যেখানে বর্তমানে ৩ টি প্রকৌশন বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট, কুয়েট, চুয়েট) মিলে প্রকৌশল গুচ্ছ ( Engineering GST) , ৮ টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মিলে কৃষি গুচ্ছ ( Agriculture Cluster) ও 19 টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মিলে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা (GST Admission Test) এর আয়োজন করছে। এখন আমরা পর্যায়ক্রমেঃ গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় তালিকা, আবেদনের যোগ্যতা, মানবন্টন ও ফলাফলের নিয়ম, গুচ্ছ ভর্তি প্রস্তুতির স্ট্র্যাটেজি সম্পর্কে জেনে নিই।
GST প্রকাশিত সর্বশেষ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সার্কুলার ২০২৫ অনুযায়ী ২০২৫ সালের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করছে। তালিকাটি নিম্নরূপ:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইল
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, সিরাজগঞ্জ
গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, গাজীপুর
নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়, নেত্রকোণা
জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জামালপুর
কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চাঁদপুর
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সুনামগঞ্জ
পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুর
এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় গুচ্ছভর্তি পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ ও সাশ্রয়ী একটি সমাধান। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ১৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করছে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা একবার পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
নিচে গুচ্ছভুক্ত ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম, অবস্থান ও সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো:
|
---|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে একাধিক প্রতিষ্ঠানে ভর্তি সুযোগ প্রদান শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বড় সুবিধা। এই পদ্ধতির মাধ্যমে:
খরচ কমে, কারণ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথকভাবে আবেদন করতে হয় না।
প্রতিযোগিতা সহজ হয়, কারণ নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুসারে সেরা বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নেওয়া যায়।
সময় সাশ্রয় হয়, কারণ শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ভিন্ন পরীক্ষার জন্য ভ্রমণ করতে হয় না।
ছবি সূত্র- শাবিপ্রবি এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
শিক্ষাবর্ষ ২০২৪-২০২৫ অনুযায়ী-
বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য শাখা হতে এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত যোগ্যতা সাপেক্ষে যথাক্রমে ইউনিট-A, ইউনিট-B ও ইউনিট-C-তে আবেদন করতে পারবে। ইউনিট ভিত্তিক আবেদনের যোগ্যতা নিম্নরূপ:
ইউনিট | গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা : অংশগ্রহণের যোগ্যতা |
---|---|
| এইচএসসি/সমমান বিভাগ: বিজ্ঞান এসএসসি/এইচএসসি ন্যূনতম জিপিএ: ৩.৫০ (৪র্থ বিষয়সহ) এসএসসি+এইচএসসি ন্যূনতম জিপিএ: ৮.০০ (৪র্থ বিষয়সহ) বোর্ড: সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা বোর্ড (বিজ্ঞান), ভোকেশনাল (এইচএসসি) |
গুচ্ছ খ ইউনিট | এইচএসসি/সমমান বিভাগ: মানবিক এসএসসি/এইচএসসি ন্যূনতম জিপিএ: ৩.০০ (৪র্থ বিষয়সহ) এসএসসি+এইচএসসি ন্যূনতম জিপিএ: ৬.০০ (৪র্থ বিষয়সহ) বোর্ড: সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মিউজিক, গার্হস্থ্য অর্থনীতি, মাদ্রাসা (সাধারণ, মুজাব্বিদ) |
গুচ্ছ গ ইউনিট | এইচএসসি/সমমান বিভাগ: বাণিজ্য এসএসসি/এইচএসসি ন্যূনতম জিপিএ: ৩.০০ (৪র্থ বিষয়সহ) এসএসসি+এইচএসসি ন্যূনতম জিপিএ: ৬.৫০ (৪র্থ বিষয়সহ) বোর্ড: সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, ডিপ্লোমা ইন বিজনেস স্টাডিজ, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা (এইচএসসি), ডিপ্লোমা ইন কমার্স |
জিসিই-এর ক্ষেত্রে আইজিসিএসই (ও লেভেল) পরীক্ষায় কমপক্ষে ৩টি বিষয়ে B গ্রেডসহ ৫টি বিষয়ে পাস এবং আইএএল (এ লেভেল) পরীক্ষায় কমপক্ষে ২টি বিষয়ে B গ্রেডসহ ৩টি বিষয়ে পাস থাকতে হবে। এক্ষেত্রে সরাসরি আবেদনের মাধ্যমে সমমান ও যোগ্যতা নির্ধারণ কমিতি কর্তৃক অনুমোদনক্রমে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। সমমান নির্ধারণের জন্য আবেদনের শেষ তারিখের কমপক্ষে ০২ দিন পূর্বে সরাসরি রেজিস্ট্রার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা-এ যোগাযোগ করতে হবে। আবেদন করার পদ্ধতি GST গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইট (www.gstadmission.ac.bd)-এ পাওয়া যাবে।
গুচ্ছের মানবন্টন (সকল ইউনিটের)
প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নির্ধারিত কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। প্রতিটি ইউনিটে ১০০ নম্বরের MCQ পদ্ধতির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সকল ইউনিটের পরীক্ষার জন্য ১ ঘণ্টা বরাদ্দ। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য থাকবে ১ নম্বর এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা হবে এবং গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না।
যেকোনো ইউনিট (A/B/C)-এর পরীক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রদত্ত শর্ত সাপেক্ষে অন্যান্য ইউনিটের সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহের ভর্তির আবেদনের জন্য বিবেচিত হবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ কর্তৃক এইচএসসি পরীক্ষার পাঠ্যসূচি অনুসারে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়সমূহ ও মানবন্টন নিম্নে প্রদত্ত হলো:
ইউনিট-A (বিজ্ঞান শাখা) | পরীক্ষার বিষয় ও নম্বর
| মোট নম্বর | ||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
ইউনিট-B (মানবিক শাখা) |
| ১০০ | ||||||||||||
ইউনিট-C (বিজ্ঞান শাখা) |
|
|
গুচ্ছের ফলাফল (সকল ইউনিটের)
প্রতি ইউনিটের ফলাফল GST গুচ্ছভুক্ত সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইট (www.gstadmission.ac.bd)-এ প্রকাশ করা হবে। ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম ৩০ নম্বর পেতে হবে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা মানবন্টন থেকে দেখা যায় যে প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে। শুধুমাত্র GST গুচ্ছভুক্ত সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরাই যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারবে।
মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর ও জিপিএ মিলে সর্বোচ্চ নম্বরের ভিত্তিতে মেধাতালিকা প্রকাশ হবে। স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট আসনসংখ্যায় সর্বোচ্চ স্কোর এর মেধাতালিকায় থাকা শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে।
বিভাগ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রতিটি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার ব্যাপারটি গুচ্ছ পদ্ধতিতে থাকছেনা। প্রত্যেকে শুধু নিজ নিজ বিভাগে পরীক্ষা দিতে পারবে এবং এক্ষেত্রে উত্তীর্ণের পর যোগ্যতা অনুযায়ী আসন খালি স্বাপেক্ষে অন্য বিভাগে যাওয়ার সুযোগ থাকছে। তবে এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় সমুহ নির্দিষ্ট আসন বরাদ্দ রাখবে।
প্রথম দুই বছর সেকেন্ড টাইমারদের ক্ষেত্রে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির আবেদনে সেকেন্ড টাইমারদের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে এই নিয়ম পরবর্তীতে থাকবে কি না তা নিয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই। ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে GST গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সমন্বিত ভর্তি কমিটি”-র সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় যেহেতু মোট ২৪ টি পাবলিক ভার্সিটি অংশ নেয়, তাই এটি বর্তমানে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য খুব ই ভালো একটি সুযোগ হতে পারে। এজন্য ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মূলত নিজ নিজ ইউনিটের সাব্জেক্ট গুলোর উপর সর্বোচ্চ পরিমাণ দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আর এরজন্য চর্চার বিকল্প নেই। চলো আমরা ইউনিট ভিত্তিকভাবে শিক্ষার্থীরা কীভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবে সেটি জেনে নিইঃ
গুচ্ছ ক ইউনিট প্রস্তুতি (বিজ্ঞান বিভাগ)-
পদার্থবিজ্ঞানঃ
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি হওয়ায়, গুচ্ছ এডমিশনে অধিকাংশ সময় পদার্থবিজ্ঞানের গানিতিক অংশ থেকে প্রশ্ন বেশি আসে। এছাড়া সকল রাশির মাত্রা, একক এবং সূত্র প্রয়োগে গাণিতিক অংশের সমাধানে যথেষ্ট পারদর্শীতা থাকা উচিত। বিগত বছরের প্রশ্নব্যাংক এনালাইসিস করে দেখা যায় গতিবিদ্যা, নিউটনিয়ান বলবিদ্যা, কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি এবং আদর্শ গ্যাস থেকে প্রথম পত্রের অধিকাংশ প্রশ্ন এসেছে। আর ২য় পত্রের তাপগতিবিদ্যা, স্থির ও চল তড়িৎ থেকে প্রশ্ন বেশি এসেছে। তবে সকল অধ্যায় সমান গুরুত্বপূর্ণ।
রসায়নঃ
রসায়নের ক্ষেত্রে মূল বই এর (বিশেষত হাজারী স্যারের বই) সকল অনুশীলনীর প্রশ্ন যথাযথভাবে চর্চা করতে হবে। প্রথম পত্রের গুণগত রসায়ন, মৌলের পর্যায়বৃত্ত ধর্ম ও রাসায়নিক পরিবর্তন এবং ২য় পত্রের
জৈব যৌগ (সকল এডমিশনের জন্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ) এবং তড়িৎ রসায়ন বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
গণিতঃ
প্রথম ২ বছর কেন্দ্রীয় দায়িত্বে সাস্ট থাকায় দেখা গিয়েছে যে গুচ্ছের প্রশ্নে ম্যাথ পার্ট কিছুটা হার্ড ও ট্রিকি ছিলো। তবে ভালো মতো প্র্যাক্টিস এবং হ্যান্ড ক্যালকুলেশন এর অভ্যাস থাকলে সমস্যা হবেনা, যেহেতু গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে দিবেনা। বিগত বছরগুলোতে প্রথম পত্রের সরলরেখা, বৃত্ত এবং অন্তরীকরণ-যোগজীকরণ থেকে বেশি প্রশ্ন এসেছে। আর ২য় পত্রের জটিল সংখ্যা ও কনিক থেকে বেশি এসেছে। তবে সকল অধ্যায় ই আয়ত্তে রাখা উচিত।
জীববিজ্ঞানঃ
যেহেতু গুচ্ছে গনিত, বায়োলজি ও আইসিটির মধ্যে যেকোনো ২ টি দাগালেই হয়, তাই যারা ইঞ্জিনিয়ারিং প্রিপারেশন নিবে তাদের ম্যাথ এবং যারা মেডিকেল প্রিপারেশন নিবে তাদের বায়োলজি দাগানোই শ্রেয়। গুচ্ছে বায়োলজি থেকে খুব বেশি গভীর প্রশ্ন হয়না বই এর বেসিক লাইনগুলো, ডায়াগ্রামগুলো ও পয়েন্টগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকলেই চলবে।
আইসিটিঃ
বিগত বছরে গুচ্ছের আইসিটি প্রশ্ন বেশ সোজা বলে মনে হয়েছে। বায়োলজি ও ম্যাথ দুটি একসাথে না দাগিয়ে সল্প সময়ে আইসিটি উত্তর করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
গুচ্ছ খ ইউনিট (মানবিক বিভাগ)-
বাংলা:
পরীক্ষায় ব্যাকরণ অংশের পাশাপাশি গদ্য ও কবিতা অংশ থেকে বেশ কিছু প্রশ্ন প্রতিবার আসে। সেক্ষেত্রে গদ্য ও পদ্যের মূল বিষয়, লেখক পরিচিতি ও লেখকের গুরুত্বপূর্ণ লেখা গুলো সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
ব্যাকরণ অংশের জন্য ভাষা, বাংলা ভাষা, ব্যাকরণ, শব্দ, কারক, সমাস, সন্ধি, বিভক্তি, বচন, বাক্য সংকোচন, বাগধারা, উপসর্গ, অনুসর্গ বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো ভালো করে অনুশীলন করা প্রয়োজন।
ইংরেজি:
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় গ্রামার থেকে বেশ কিছু প্রশ্ন আসে। সেক্ষেত্রে Parts of speech, Article, Tense, Voice, Narration, Correction, Right form of verbs, Translation, Synonyms, Antonyms, Transformation of sentences, Comprehension প্রভৃতি বিষয় ভালোভাবে পড়তে হবে। ইংরেজির বেসিক ক্লিয়ার থাকা এবং সকল ভার্সিটির বিগত বছরের ইংলিশ প্রশ্নগুলো আয়ত্তে রাখা উচিত।
গুচ্ছ গ ইউনিট (বাণিজ্য বিভাগ)-
হিসাববিজ্ঞান:
মূল বইয়ের সকল বিষয় সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা খুবই জরুরি। যার মূল বইয়ের উপর যত বেশি দক্ষতা এবং আয়ত্ত থাকবে সে ভর্তি পরীক্ষায় ততো ভালো করবে এটা নিশ্চিত। মূল বইকে প্রাধান্য দিয়ে সহায়িকা হিসেবে প্রশ্নব্যাংক থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা নাও।
ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা:
ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনার মূল অংশগুলো ভালো করে পড়বে। বিগত বছরগুলোর প্রশ্নে দেখা যায়, সাম্প্রতিক দেশীয় বা বৈদেশিক ব্যবসায় প্রবাহ থেকে কিছু প্রশ্ন আসে। সেগুলোও মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।
যেসব বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বের হয়ে গেছে এবং তাদের ভর্তি প্রস্তুতি কিভাবে নিবে?
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বাইরে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কিন্তু এখন নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে, আর সেগুলোর প্রশ্নপত্রের ধরন, মার্কস বণ্টন, ভর্তি প্রক্রিয়া—সবই আলাদা। তাই এগুলোতে ভর্তির জন্য আলাদা কৌশলে প্রস্তুতি নিতে হবে।
✔ বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে আলাদা কৌশলে পড়তে হবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নের ধরন ভিন্ন, তাই যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে চান, তার জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তুতি দরকার।
✔ আগের বছরের প্রশ্নপত্র সমাধান করা সবচেয়ে ভালো কৌশল। কারণ প্রশ্নের ধরণ বুঝতে পারলে পরীক্ষা সহজ মনে হবে।
✔ নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর জোর দেওয়া জরুরি:
বিজ্ঞান বিভাগ: গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ।
মানবিক বিভাগ: বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস ও সাধারণ জ্ঞান বেশি দরকার।
বাণিজ্য বিভাগ: হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিং ও ইংরেজিতে জোর দেওয়া ভালো।
✔ সময় ব্যবস্থাপনা শিখতে হবে।
KU, SUST এ -তে সময় সংকট বেশি হয়। তাই দ্রুত উত্তর দেওয়ার কৌশল শিখতে হবে।
✔ প্র্যাকটিস টেস্ট দিতে হবে।
Chorcha -এর মতো প্ল্যাটফর্মে মডেল টেস্ট দিলে পরীক্ষা সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যায়।
যেসব বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছের বাইরে, তাদের জন্য নির্দিষ্ট ও স্ট্র্যাটেজিক প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নের ধরন বুঝে পড়াশোনা করলে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব।
তোমার যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোনো স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাও, তাহলে প্রশ্নের ধরন বুঝে প্র্যাকটিস টেস্ট দেওয়া, সময় ধরে মডেল টেস্ট দেওয়া এবং দ্রুত সমাধানের কৌশল শেখা সবচেয়ে কার্যকর হবে।
শেষ কথা- (তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ)
প্রতি বছর ৫৫ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এর মধ্যে ২৪ টিই মানে প্রায় ৪০% ই গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা মানে একদিনের পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই উচিত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া। এজন্য বিগত বছরের গুচ্ছ এডমিশন প্রশ্নব্যাংক এর উপর সর্বোচ্চ প্র্যাক্টিস থাকা জরুরি। এছাড়াও রাবি, চবি, ঢাবি ও জাবি এর প্রশ্নব্যাংক এবং সাস্টের আগের বছরের প্রশ্ন প্র্যাক্টিস করা উচিত। এরজন্য অন্যতম সেরা একটি মাধ্যম হতে পারে চর্চা অ্যাপ। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে ইচ্ছুক সকল শিক্ষার্থীকে অগ্রীম শুভকামনা জানাই।